শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

লেনদেন আটশ’ কোটিতে, সূচকের উল্লম্ফন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২০, ৬:২৪ পিএম

দেশের শেয়ারবাজারে কয়েক দিন ধরে বাড়তে থাকা লেনদেনের গতি আরও বেড়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আটশ’ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে দেড় মাসের মধ্যে বাজারটিতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।

লেনদেনের এমন বড় উত্থানের দিনে বড় লাফ দিয়েছে মূল্যসূচকও। ডিএসই’র পাশাপাশি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছেছে।

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে শেয়ারবাজারের ভয়াবহ ধস নামে। এর প্রেক্ষিতে গত ১৯ মার্চ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দাম) নির্ধারণ করে নতুন সার্কিট ব্রেকার চালু করা হয়।

এতে দরপতন ঠেকানো গেলেও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। ফলে লেনদেনে অংশ গ্রহণ করা সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম অপরিবর্তিত থাকে। ফলে দেখা দেয় লেনদেন খরা।

ধারাবাহিকভাবে কমে ডিএসই’র লেনদেন ৫০ কোটি টাকার ঘরে নেমে আসে। সেই লেনদেন খরা কাটিয়ে গত কয়েকদিন ধরে লেনদেন বাড়ছে শেয়ারবাজারে। ঈদের আগের শেষ কার্যদিবসে ডিএসই’র লেনদেন পাঁচশ’ কোটি টাকার ঘরে স্পর্শ করে।

ঈদের পরেও অব্যাহত থাকে লেনদেনের গতি। ঈদের ছুটি শেষে সোমবার শেয়ারবাজার খুললে ডিএসইতে ছয়শ’ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়। মঙ্গলবারও লেনদেন হয় ছয়শ’ কোটি টাকার ওপরে। বুধবার তা আরও বেড়ে সাতশ’ কোটি টাকার ঘরে পৌঁছে। আর বৃহস্পতিবার তা আরও বেড়ে আটশ’ কোটি টাকার ঘরে পৌঁছাল।

দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৩৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭১৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১১৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

এর মাধ্যমে গত ২৮ জুনের পর বাজারটিতে সর্বোচ্চ লেনদেন হল। বহুজাতিক কোম্পানি গ্লাস্কস্মিথকলাইন আর এক বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভার কিনে নেয়ার কারণে ২৮ জুন ২ হাজার ৫৪৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়।

এর মধ্যে গ্লাস্কস্মিথকলাইনের শেয়ার লেনদেন হয় ২ হাজার ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এ দিনের লেনদেন বাদ দিলে গত ১৯ ফেব্রুয়ারির পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি ৮৩৭ কোটি ১৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর আর আটশ’ কোটি টাকার লেনদেন হয়নি (২৮ জুন বাদে)।

লেনদেনের এই বড় উত্থানের দিনে ডিএসইতে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এর ফলে গত ৫ মার্চের পর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছেছে। দিনের লেনদেন শেষে সূচকটি ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৩৬৪ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

বড় উত্থান হয়েছে অপর দুই সূচকেরও। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে গত ৫ মার্চের পর সূচকটি আবার এক হাজার পয়েন্টের ওপরে উঠে আসল।

এদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৯টির। আর ৫৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ল।

শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের দিনে টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৩ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলসের ৩০ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৬ কোটি ১৮ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এর পরের স্থানে রয়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেক্সিমকো, বিএফএস থ্রেড ডাইং, গ্রামীণফোন, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭১ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৬৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬১টির, কমেছে ৫৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫১টির।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন