শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

‘বাহে দুইটা বন্যা গেইল এ্যালাও এক ছটাক চাউলও পাইলং না।’

কুড়িগ্রাম থেকে শফিকুল ইসলাম বেবু | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২০, ১০:৪৫ এএম

‘তোমরা কাঁই! কি দেখপের আচ্চেন! হামরাগুলা মরি যাই, আর তোমরাগুলা তামশা দেকপের আচ্চেন।’ মহিলা দিশেহারা চোখে রাগ-ক্ষোভ জমিয়ে তা বর্ষণ করে চলেন। নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। কুড়িগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র ঘেঁষে থাকেন এই পরিবারগুলো। শহরকে ঘিরে যে ধরলা নদী প্রবাহমান। সেই নদীর উপর নির্মিত ধরলা ব্রীজ পেরিয়ে ইউটার্ণ আর স্পারের পাশেই রাস্তার ডানদিকে ছোট্ট দুটি গ্রাম মাঝের চর ও পিন্টুল খামার। এখানে ৫৫টি পরিবার বসবাস করে। বন্যার প্রথম ধাপ থেকে এখন পর্যন্ত টানা একুশ দিন পর বাড়িতে ফিরতে পেরেছেন তারা। এর আগে মহাসড়কে কেটেছে দিনগুলো। 

গ্রামের বর্ষিয়ান আব্দুর রহিম (৬২) জানান, ‘বাহে দুইটা বন্যা গেইল এ্যালাও এক ছটাক চাউলও পাইলং না।’ তার সাথে সাথে ক্ষুব্ধ ও হতাশ স্বরে বললেন নারী শ্রমিক আমরণ (৪৫) ও তার ছোট বোন আদরভান (৪৩), হামরা মরি যাই তোমরা তামশা দেকপের আইসেন। এটে ৫৫টা বাড়ির লোকের কাঁইয়ো রিলিপ পায় নাই। গ্রামের সগার ঘরে কী খাবার আছে। চেয়ারম্যান-মেম্বার কাঁইয়ো আইসে না।’
ওই গ্রামের ছামসুলের স্ত্রী ছামিয়া (৩৮) জানান, ‘হামার স্বামী কামলা দিয়া খায়। এলা কাম নাই। হামারগুলার কষ্ট কাঁইয়ো দেকপেরও আইসে না।’
সরকারিভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণের কথা বলা হলেও মাঠের চিত্র কিন্তু ভিন্ন। এখনো অনেক গ্রামে অনেক অস্বচ্ছল বাড়িতে ত্রান পৌঁছেনি। বানভাসী অনেক পরিবারে নিরব খাদ্যাভাব বিরাজ করছে। এছাড়াও ভাঙনে গ্রহহীনরা দিশেহারা হয়ে আছেন। তাদের পাশে কেউ দাঁড়াচ্ছে না। পানি প্লাবিতদের কাছে কেউ খোঁজ নিচ্ছে না জরুরী তাদের কী দরকার। এমন চরম একটা ভোগান্তির মধ্যে সময় কাটছে বন্যার্তদের।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ময়নুল ইসলাম জানালেন, মহাসড়কে যারা অবস্থান নিয়েছে সেইসব এলাকায় গতকাল ৩ শতাধিক প্যাকেট ত্রান বিতরণ করা হয়েছে। বানভাসীদের মধ্যে কেউ পেয়ে না থাকলে আমাদেরকে জানান। অবশ্যই আমরা তাদের পাশে দাঁড়াবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন