রাজশাহী ব্যুরো
থমকে গেছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কর্মকা-। ফলে নতুন রাস্তা ঘাটতো দূরের কথা পুরাতনগুলো সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে ভোগান্তি বেড়েছে নগরবাসীর। কর্পোরেশনের নিজস্ব তহবিল নেই যা দিয়ে মেরামতের কাজ করতে পারে। বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যালিটি ডেভলপমেন্ট ফান্ড (বিএমডিএফ)-এর টাকায় অতীতেও নগরীর উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এবারো এমন হবার কথা ছিল। এনিয়ে বিএমডিএফ ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে গত বছরের ৪ আগস্ট ৭০ কোটি টাকার ঋণ চুক্তি হয়। সে অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন বিএমডিএফের মাধ্যমে বিশ্ব ব্যাংকের কাজ করবে। এজন্য প্রথম দফায় ত্রিশ কোটি ও পরে চল্লিশ কোটি ঋণ দেবে। চুক্তির শর্ত মোতাবেক বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ পেতে হলে ঋণের বিপরীতে ঋণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানকে দশ শতাংশ বিশ্ব ব্যাংকে আগেই পরিশোধ করতে হবে। সে মোতাবেক ঋণের সত্তর কোটি টাকার দশ শতাংশ সাত কোটি আর সার্ভিস চার্জ বাবদ প্রায় ৮৬ লাখ টাকা পরিশোধ করে সিটি কর্পোরেশন। নিয়ম অনুযায়ী ঋণের পনের শতাংশ বিশ্ব ব্যাংককে পরিশোধ করবে। বাকি টাকা অনুদান হিসাবে গণ্য হবে। বিএমডিএফের চুক্তি ম্যাচিং ফান্ড ও সার্ভিস চার্জ দেবার পর সিটি কর্পোরেশন ১৬ কোটি টাকার প্যাকেজে উন্নয়ন কাজ প্রস্তুত করে। এর মধ্যে গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নগরীর পশ্চিমাঞ্চলের ছয়টি ওয়ার্ডে ১২৮টি সাব প্যাকেজে বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরও হঠাৎ করে বিশ্ব ব্যাংক বেঁকে বসে। এখনো প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের অনুমতি এমনকি অন্য প্যাকেজগুলোর ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত দিচ্ছে না। ফলে ঝুলে গেছে নগরীর ৬৪১টি রাস্তা ড্রেন ও দুটি বাজার উন্নয়নের কাজ। রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকায় বর্ষায় আরো ভোগান্তি বাড়িয়েছে নগরবাসীর। এ ব্যাপারে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, বিশ্ব ব্যাংক হঠাৎ করে বেঁকে বসলো কেন তা বোধগম্য নয়। আমরা অতীতেও বিশ্ব ব্যাংকের টাকা নিয়ে কাজ করেছি। শর্ত মোতাবেক ঋণের টাকাও পরিশোধ করেছি। ২০০৭ সালে দশ কোটি ২০১০ সালে ২৪ কোটি বিএমডিএফের ফান্ড থেকে ঋণ নিয়ে উন্নয়ন কাজ করেছি। শর্ত মোতাবেক যা পরিশোধ করেছি। কোন কিস্তি বকেয়া নেই। অতীতের ধারাবাহিকতা নিয়ে এবারো প্রকল্প প্রণয়ন ও ঋণ চুক্তি করি। ম্যাচিং ফান্ডও জমা দেই। তারপর হঠাৎ কেন এই নীরবতা জানি না। বিএমডিএফের এমডির বক্তব্য হলো বিশ্ব ব্যাংক পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তাদের সব কাজ স্থগিত ঘোষণা করেছে। কবে নাগাদ তা ফের চালু হতে পারে তা নিশ্চিত করতে পারেনি। ম্যাচিং ফান্ড ও সার্ভিস চার্জের টাকার কি হবে এমন প্রশ্নের জবাব মেলেনি। এদিকে রাস্তঘাটের বেহাল দশায় ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ ঝাড়ছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের ওপর। তারাও বিএমডিএফ-এর চুক্তির উপর ভর করে প্রকল্প করেছিলেন। প্রচ- চাপ প্রকৌশল বিভাগের ওপর। বিব্রত তারাও। অতীত রেকর্ড ভাল থাকার পরও কি কারণে বিশ্ব ব্যাংক হঠাৎ করে বেঁকে বসল তা নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন