বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পান চাষে ঘুরছে পুতুল রানীর ভাগ্যের চাকা

প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গলাচিপা (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদাদাতা

ক্ষুধা, দারিদ্র্য আর অভাবের সাথে যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছেন পতুল রানী। শ্রম ছাড়া জীবন সার্থক হয় না। এমন একটি বিজয়ীর ঘটনা ঘটিয়ে দেখালেন গলাচিপা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইটবাড়ীয়া গ্রামে। তিনি একজন সফল নারী। যা অন্য নারীর চেয়ে ব্যতিক্রম। এলাকায় তিনি কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সুনাম কুড়িয়েছেন। সূত্র জানায়, গলাচিপা উপজেলা সদর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটারে পথ দূরে। সামুদাবাদের রোডের পাশেই তার গ্রামের বাড়ি ও কর্মক্ষেত। এক সময়ে পুতুল রানীর সংসারে অভাব লেগেই থাকত। অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনো রকমে চলত তাদের ছয় সদস্যের সংসার, এ যেন নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। যেদিন কাজ জুটতো সেদিন সংসারে আহার জুটতো। আর যেদিন কাজ জুটতো না সেদিন থাকতে হতো অনাহারে-অর্ধাহারে কাটতো তাদের সংসার। সবসময় হতাশায় থাকতো তার পরিবার। কী করবে পুতুলের স্বামী পিযুস ? কৃষি কাজ করতে গেলেও দরকার পুঁজির। কিন্তু পুঁজি কোথায়? এলাকার ধনী লোকদের কাছে টাকার জন্যে গেলে তারা মহাজনী কায়দায় লাভ নিয়ে টাকা দিতে চায়, কিন্তু এভাবে টাকা দিয়ে কৃষিকাজে লাভের চাইতে ক্ষতি বেশি। কী করবে কোথায় পাবে টাকা দিশেহারা স্বামী-স্ত্রী। এমনি সময়ে শুনতে পেল মুসলিম এইড বাংলাদেশ সুদমুক্ত ঋণ দিচ্ছে। স্বামী ও স্ত্রী চিন্তা করল সমিতিতে প্রাথমিকভাবে সদস্য হওয়া প্রয়োজন। তা হলে ভর্তি হতে হবে বলে স্বামী-স্ত্রী পরামর্শ করে মনস্থির করল। ২০১০ সালের ১৪ জানুয়ারি তার স্ত্রী পুতুল রানী গলাচিপা শাখার ইটবাড়ীয়া সমিতিতে ভর্তি হন। ভর্তি হয়ে প্রথমে ১০ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেন পান চাষ। স্বামী-স্ত্রী দুইজনে মিলে পানের বরজে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এভাবে পরিশ্রম করতে করতে একদিন শুরু হলো তাদের পান বিক্রি আর সংসারে আসতে লাগল সুখের দিন। পর্যায়ক্রমে পুতুল রানী ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো মানের ও পানের বাম্পার ফলন হওয়ায় বিক্রিতে ভালো টাকা আসছে। ঋণের টাকা কিস্তি দিয়ে এবং সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে না। পরেও কিছু টাকা বেঁচে যায়। বেঁচে যাওয়া টাকা ক্রমেই বাড়তে থাকে। পুতুল রানীর চার ছেলেমেয়ে এখন স্কুলে যায়। এখন সে ৪০ শতাংশ জমিতে পানের চাষ করছেন। তার স্বামী পিযুস চন্দ্র বলেন, স্ত্রী মুসলিম এইড-এর সদস্য হয়ে সংসার জীবন ভালোই চলছে। পুতুল রানী নির্দিধায় বললেন মুসলিম এইড-এর সহযোগিতা না পেলে হয়তো সারাজীবনই আমাদের সংসারে অভাব লেগেই থাকতো তাই এর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। পুতুল রানী আরো বলেন, ভবিষ্যতে বেশি ঋণ পেলে বৃহৎ আকারের পান বরজ স্থাপন করে এলাকার কিছু দরিদ্র লোকের কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারতাম। এব্যাপারে মুসলিম এইডের ম্যানেজার নাজির প্রামানিক জানান, মুসলিম এইড আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত একটি সংস্থা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন