কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা
অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের চলতি বন্যায় যমুনার পানি স্থিতিশীল রয়েছে। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে তলিয়ে গেছে প্রায় চার হাজার হেক্টর খেতের ফসল। কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। চরের ৬ ইউনিয়নে পাটের চাষ হয়েছে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমি। জমিতে বেশি পানি হওয়ায় পাট কাটতে কৃষকদের কষ্টের মাত্রা বেড়ে গেছে। সেইসাথে কর্তনকৃত পাটের অনেক জাগ পানিতে ভেসে গেছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বন্যায় শুধু পাটখেত নিমজ্জিত হয়েছে ৩ হাজার হেক্টর। এছাড়া ডুবে গেছে ১০০ হেক্টর জমির কলাখেত, রোপা আমন বীজতলা ১৭৫ হেক্টর, সবজিখেত ৮০ হেক্টর। চরগিরিশের কলাচাষি আনোয়ার মেম্বার জানান, তিন বিঘা জমিতে লাগানো খেতে কলার কাঁদি বের হতে শুরু হয়েছিল। বন্যায় সেই কাঁদিসহ গাছ নিমজ্জিত হয়েছে। আর ছোট কলাগাছগুলো উপড়ে পানিতে ভেসে উঠছে। খাশরাজবাড়ি ইউনিয়নের পীরগাছা গ্রামের কৃষক বাদশা সরকার জানান, চলতি মৌসুমে পাট চাষের সমস্ত খরচ শেষ করেছি। এখন শুধু পাট কাটা, জাগ দেয়া এবং ধোয়ার কাজ বাকি। কিন্তু বিধি বাম। ওই চরের ইউপি সদস্য বেল্লাল হোসেন জানান, কর্তনকৃত দুই হাজার পাট পানিতে ভেসে গিয়েছে। এবং আরো ৩ বিঘা জমির পাট পানিতে পুরোপুরি ডুবে যাওয়ায় কাটা যাচ্ছে না। কষ্ট করে কোমর সমান পানিতে নেমে কিছু জমির পাট কাটা গেলেও কৃষাণপিছু ৬ থেকে ৭শ’ টাকা করে দিতে হচ্ছে। ফলে বাজারে পাটের দাম ভালো থাকলেও কাজিপুরের চাষিদের ধান চাষের মতো পাট চাষেও লোকসানের বোঝা সহসা মাথা থেকে নামছে না। কাজিপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কল্যাণ প্রসাদ পাল জানান, দীর্ঘস্থায়ী এই বন্যায় ডুবে যাওয়া প্রায় সব ফসলই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এ কারণে কাজিপুরের কৃষকদের দুশ্চিন্তা কাটছেই না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন