মধুমতি নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনা ফেরিঘাটের উভয়পাশের পন্টুনের গ্যাংওয়ে ডুবে গেছে। এতে যানবাহন ও যাত্রী পরিবহনে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রেখেছে।
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারে মধুমতি নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে কালনা ফেরি ঘাটের উভয়পাশে পন্টুনের গ্যাংওয়ে ডুবে গেছে। পন্টুনে ওঠার সড়কের ইট, সুড়কি উঠে ছোট ছোট অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন ও জনগণ ভোগান্তিতে পড়েছেন। সড়ক বিভাগ আরো জানিয়েছে, কালনা ঘাটে ৫টি ফেরি রয়েছে। এর মধ্যে ২টি ফেরি ইঞ্জিনবিহীন। বাকি ৩টির মধ্যে প্রবাহমান স্রোতে চলাচলের উপযোগী রয়েছে মাত্র একটি ফেরি। অন্য ২টি বন্ধ।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার কাশিয়ানী উপজেলার কালনা ফেরিঘাট। এ ঘাট দিয়ে হাজার হাজার যাত্রী খুলনা, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল বন্দরে চলাচল করে। প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে কয়েকশ’ যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, নছিমনসহ অন্যান্য যানবাহন পারাপার হয়। কাশিয়ানী উপজেলার বুধপাশা গ্রামের সালাউদ্দিন মৃধা সুজন বলেন, মধুমতি নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে নদীর দু’পাড়ের গ্যাংওয়ে পানিতে তলিয়ে গেছে। ৭ দিন ধরে এ অবস্থা চলছে। এতে যানবাহন পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। লোকজন পানি পাড়িয়ে ফেরি ও খেয়ায় উঠছেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। ট্রাকচালক জয়নাল বলেন, এ ঘাটে ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক পার করতে হচ্ছে। গ্যাংওয়ে ক্রস করার সময় গাড়ির ইঞ্জিনে পানি ঢুকে ক্ষতি হচ্ছে। এ ঘাট পার হওয়ার সময় আতঙ্কে পরাণে পানি থাকে না।
কালনা ঘাটের ইজারাদার মো. মঞ্জুর হাসান বলেন, নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ফেরিঘাটের পন্টুনের দু’টি গ্যাংওয়ে তলিয়ে গেছে। নদীতে ভাটার সময় কিছুটা দুর্ভোগ কমলেও জোয়ারের সময় এটি বেড়ে যায়। নদীতে স্রোত তীব্র আকার ধারণ করায় পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগছে। এ কারণে ঘাট পারাপারে পরিবহন, ট্রাক ও যাত্রী সাধারণকে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয়। যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ফেরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত সপ্তাহে নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্যাংওয়ে ডুবে ফেরিতে পরিবহন ওঠা-নামায় মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। এ ফেরি দিয়ে প্রতিদিন ৪-৫শ’ যানবাহন পারাপার হতো। ভাটিয়াপাড়া থেকে কালনা ঘাট পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশার কারণে এখন প্রতিদিন ২-৩শ’ যানবাহন চলাচল করে। জোয়ারের সময় পানি বৃদ্ধি পেলেই ফেরি নিয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়।
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী সাকিরুল ইসলাম বলেন, মধুমতি নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় জোয়ারের সময় ঘাটে সমস্যা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ফেরিঘাটের দু’পাড়ের পন্টুনের দু’টি গ্যাংওয়ে উঁচু করে দিয়েছি। তারপরও বিষয়টি স্থায়ী সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন