শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সেলুন কর্মচারি থেকে টিকটক ‘অপু ভাই’

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:০২ এএম

চীনা অ্যাপ টিকটকে নানা ধরনের বিতর্কিত ভিডিও তৈরি করে আলোচনায় আসা অপু ওরফে অপু ভাই সেলুন কর্মচারি ছিলো বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেলুনে কাজ করার পাশাপাশি রাস্তায়, অন্যের বাসার ছাদে, ক্ষেতে, বাসের ভেতরেও খুব উদ্দেশ্যহীনভাবে টিকটক বানাত সে। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে কিশোর গ্যাং তৈরির প্রচেষ্টা খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। গতকাল তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা এমন তথ্য জানিয়েছেন। 

পুলিশ জানায়, গত রোববার উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৬ নম্বর সেক্টরের আলাউল এভিনিউ এলাকায় সড়কে এক ব্যক্তিকে মারধর করেন অপু। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গত সোমবার সন্ধ্যায় আলাউল এভিনিউ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
অপুর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে। সেখানে একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করত সে। টাকার অভাবে মাদরাসা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসে। ঢাকায় একটি সেলুনে কাজ করত। সেলুনের বন্ধুরা তাকে ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক ও লাইকি’র কথা জানালে সে ভিডিও তৈরি করতে শুরু করে। তার ভিডিওগুলো নির্দিষ্ট কোনো গল্প বা বিষয় নিয়ে তৈরি করত না। এমনিতে বিভিন্ন ইস্যুতে নিজের মতামত দিত সে। এছাড়া তার সমালোচকদের ভিডিওর মাধ্যমে জবাব দিত। এমনকি সামাজিক মাধ্যমে নতুন ‘গ্যাং কালচার’ তৈরি অভিযোগ রয়েছে অপু ও মামুনসহ একাধিক টিকটকারের বিরুদ্ধে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার এসআই আজিজুর তালুকদার বলেন, আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। মারধরের মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে অপুর কিশোর গ্যাং প্রতিষ্ঠার বিষয়টি উঠে আসে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো অপরাধের অভিযোগ আছে কি না- তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে অপুর বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো সে স্বীকার করেছে বলে জানান তিনি।
তদন্ত সূত্রে জানা যায়, অপুর টিকটকে দেড় লাখ ও লাইকিতে ১০ লাখ ফলোয়ার হওয়ার কারণে সে গত দুই মাসে শুধু ভিডিও তৈরি করে অর্ধলাখের মতো টাকা আয় করে। টাকা আসছে এ কারণে সে পেশাদার টিকটকার হিসেবে ভিডিও তৈরি করতে ঢাকার বিভিন্ন ফাঁকা সড়কে শুটিং শুরু করে। অল্পদিনেই তার ফ্যান-ফলোয়ার বাড়তে থাকায় তার মধ্যে একটা দাম্ভিক ভাব চলে আসে। সেই ভাব থেকেই গত রোববারের মারধরের ঘটনার সূত্রপাত। সূত্র আরো জানায়, অপুর সহযোগীরা অধিকাংশই ভবঘুরে, ঢাকার বিভিন্ন বস্তিতে বসবাস করে। কেউ হোটেলে বেয়ারার কাজ করে, কেউ মোটরসাইকেল মেরামতের দোকানে। অপুর ভিডিওগুলোতে তার আচরণ প্রথম থেকেই উশৃঙ্খল ছিল। তবুও তার ফলোয়াররা এটাকে খুব স্বাভাবিকভাবে নিয়েই তাকে সমর্থন করে যাচ্ছিল।
ডিএমপির উত্তরা বিভাগের ডিসি নাবিদ কামাল শৈবাল বলেন, অপু নোয়াখালী থেকে বছরখানেক আগে ঢাকায় এসেছে। সেলুনের পাশাপাশি টিকটকের কাজ করছে। সে ও তার সঙ্গীদের কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে কি না- আমরা দেখছি। তবে আমরা ধারণা করছি, কিশোর গ্যাং হিসেবে নিজেদের আত্মপ্রকাশে একটি জোর প্রচেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন