শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

‘আমাগোর সাহায্য লাগবো না গরুর খাবার দ্যান’

প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা

আমাগোর সাহায্য লাগবো না গরুর খাবার দ্যান। আমরা খিদা লাইগলে চাইতে পারি, ওই অবলা পশু গুইল্লাতো কিছুই কইবার পারে না। সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে চরগিরিশ ইউনিয়নের ভেটুয়ামোড়ে ত্রাণ নিতে এসে এভাবেই নিজের খাবারের বদলে পশুর খাবার চাইলো সিদ্দিক হোসেন। পর পর দুবারের বন্যায় তার সব খড় ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। জমির আইলে লাগানো নেপিয়ার ঘাসও পানিতে ডুবে পচে গেছে। কাজিপুরের ১০টি ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকার মানুষেরই গবাদি পশুর খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এবারের বন্যায় উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের সর্বত্রই যমুনা ছোবলে উঠতি ফসল ও পশু-খাদ্যের ক্ষেত তলিয়ে যায়। কৃষকের বাড়িতে রক্ষিত খড় পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। বন্যার পরে যে খড় ছিল পানিতে ভিজে সেসব পশুর খাবারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে পশুর খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। খাসরাজবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী জানান, বানভাসি মানুষের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেলেও গবাদি পশুর জন্য কোন সহায়তা সরকারি-বেসরকারি কোন পর্যায় থেকেই পাওয়া যায়নি। কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারের বন্যায় উপজেলার প্রায় ৪ হাজার হেক্টর ক্ষেতের ফসল পানিতে ডুবে যায়। পর পর দু’বার বন্যার ফলে কৃষকের জমানো পশুখাদ্য ইতোমধ্যে ফুরিয়ে গেছে। উপজেলার ফুলজোড় চরের গরুর খামারি আবুল মিয়া বলেন, আমার তিনটি বিদেশি ও পাঁচটি দেশি গরু রয়েছে। দুধ বেচেই আমার সংসার চলে। বানে আমার সব খ্যার (খড়) পইচা গ্যাছে। এহন আমি অবলা ওই পশু গুইল্লাক কি খাওয়ামু? শুধু আবুল মিয়াই নয়, উপজেলার সব কৃষকেরই একই অবস্থা। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সোহেল আলম খান পশু খাদ্যের সংকট স্বীকার করেন। তিনি জানান, বন্যায় উপজেলার ৪০ হেক্টর চারণভূমি তলিয়ে যায়। এছাড়া পাঁচ লক্ষ টাকা মূল্যের একশ টন খড় নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে সাময়িকভাবে এই উপজেলায় গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন