ফল খেতে কার না ভাল লাগে? বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধে এবং বিভিন্ন ভিটামিনের উৎস হিসাবে ফল আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিদেশী ফলের পাশাপাশি দেশী ফলও পুষ্টির দিক থেকে কোনো অংশে কম নয়। তবে ফল খাওয়ার সময় কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। চেরি ফলের পিট বা ভিতরে যে বিচি থাকে তার অভ্যন্তরে সায়ানাইড থাকে। সায়ানাইড একটি বিষাক্ত পদার্থ। ফলের বিচিতে মূলত: যে বিপদজনক রাসায়নিক পদার্থ থাকে তার নাম অ্যামিগডালিন। বিষক্রিয়া তখনই হবে যখন চেরি ফল খাওয়ার সময় এর পিট বা বিচি কামড় দিয়ে ভেঙ্গে খেয়ে ফেলা হয়। অন্ত্রনালীতে যাওয়ার পর তা সায়ানাইডের পুরো রূপ নিয়ে থাকে।
আপেল অনেকেরই প্রিয় খাবার। আপেলের বিচিতে আল্লাহ প্রদত্ত ভাবে আলাদা আবরণ রয়েছে। তাই আপেলের বিচি অসাবধানতাবশত খেয়ে ফেললে সেটি কোনো প্রকার ক্ষতি না করে শরীর থেকে বের হয়ে যাবে বর্র্জ্য পদার্থের সাথে। কিন্তু আপেলের বিচি কামড় দিয়ে খেলে অবশ্যই বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। তাই আপেল খাওয়ার সময় কামড় দিয়ে বিচি খেয়ে ফেলবেন না। একটি বা দুটি বিচি খেলে আপনি হয়তো মারা যাবেন না কিন্তু শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তিক্ত বা তিতার স্বাদের কাঠ বাদাম কোনো অবস্থাতেই খাওয়া ঠিক নয়। তিক্ত বা তিতার স্বাদের কাঠ বাদামে সায়ানাইড বিদ্যমান থাকে। আর কিডনী রোগীরা মিষ্টি স্বাদেরও কাঠ বাদাম খেতে পারবেন না। প্রকৃত অর্থে কিডনী রোগীদের কোনো ধরণের বাদাম না খাওয়াই ভাল। তবে হার্টের রোগীরা একটু একটু করে বাদাম খেতে পারেন।
কামরাঙ্গা কখনই কিডনী রোগীদের খেতে দিবেন না। হলুদ রঙের কামরাঙ্গা দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন সুস্বাদু। কিন্তু মনে রাখবেন মাত্র ১০০ মিলি কামরাঙ্গার জুস কিডনী রোগীদের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক। কামরাঙ্গার বিষক্রিয়ার লক্ষন সমূহ বমি বমি ভাব, দূর্বলতা, হেঁচকি এবং মানসিক অবসাদ। গবেষনায় দেখা গেছে কামরাঙ্গার মধ্যে বিষাক্ত ক্ষতিকর পদার্থ থাকে যা নিউরোটক্সিন নামে পরিচিত। কিন্তু কিডনী রোগীদের ক্ষেত্রে কিডনী রোগের কারণে এই নিউরোটক্সিন বের হতে পারে না। ফলে কিডনী রোগীদের যে কোনো ধরণের ক্ষতি হতে পারে।
আর হ্যাঁ মনে রাখবেন ফল খেতে হবে অল্প পরিমাণে এবং প্রতিদিন। একদিনে অতিরিক্ত ফল খাওয়া ঠিক নয়। করোনা ভাইরাসের এই ক্রান্তি কালে আপনারা খাদ্য তালিকায় সাইট্রাস ফল সহ অন্যান্য ফল রাখবেন। সুষম খাবারের পাশপাশি প্রতিদিন একটু একটু করে ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম আপনার মানসিক চাপ কমিয়ে রাখবে এবং কোনো ধরণের ঔষুধ ছাড়াই আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল ঃ ০১৮১৭৫২১৮৯৭
ই-মেইল ঃ dr.faruqu@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন