শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বসতবাড়িসহ ১৭ দোকান পুড়ে ছাই,

প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতি

মৌলভীবাজার জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ আগস্ট, ২০২০, ২:০৩ পিএম

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ঠাকুর বাজারে আগুনে পূড়ে ১টি বসতবাড়ি সহ ১৬টি দোকানঘর সহ ১৭টি স্থাপনা ভূস্মিভুত হয়েছে। সোমবার ২৪ আগষ্ট ভোরে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আগুনে পূড়ে প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
একাবাসির অভিযোগ ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘটনাস্থলে তাৎক্ষনিক পাম্প চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আটকে রাখে। পরে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে গাড়ি ছেড়ে দেয়া হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সহয়োগিতা করেন কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুল ইসলাম ও মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সুব্রত দেবরায় সঞ্জয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোরে ঠাকুরবাজারে একটি মুদি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন দেখে বাজার প্রহরী মসজিদের মাইকে বিষয়টি অভিহিত করেন। এলাকাবাসী আগুন দেখে কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে জানালে দীর্ঘক্ষণ পরে আসেন। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনা স্থলে পৌঁছে প্রায় আধাঘন্টা অতিবাহিত করেও পানির পাম্প চালু করতে না পারায় আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরে অবস্থার বেগতিক দেখে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, নান্নু স্টোর, দেওয়ান চালের দোকান, সাহবাগ ধানের দোকান, মামনি কনফেকশনারি, শাহজালাল ভেরাটিজ স্টোর, কে এম মেডিকেল হল, জননী মেডিকেল সেন্টার, মহিউদ্দিন কম্পিউটার, হাসিম টি স্টল, নকুল সেলুন, মকসন স্টোর, বাছির ফার্নিচার, মহসিন ভেরাইটিজ স্টোর, জুয়েল মিয়া’র বসত বাড়ি, চন্দন সেলুন, হাফিজ ভেরাইটিজ স্টোর ও নজরুল মিয়ার গুদাম ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
আগুনের খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক, কমলগঞ্জ পৌর মেয়র মোঃ জুয়েল আহমেদ, কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম, বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল, মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালিব তরফদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঠাকুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ জইনউদ্দিন, ব্যবসায়ী মোঃ সালাউদ্দিন, রফিক মিয়াসহ শতাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারণে আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগুন লাগার পর থেকে কয়েকদফা ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিলেও তারা কেউ ফোন না ধরায় স্থানীয় শুকুর মোল্লা তাদেরকে অফিস থেকে গিয়ে নিয়ে আসেন। কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস যখন ঘটনাস্থলে পৌছায় তখন তিনটি দোকানে আগুন ছিলো। তাদের পানির পাম্প নষ্ট বলে দীর্ঘ আধাঘন্টা অতিবাহিত করে। পরে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের গরিমসির কারণে এত টাকার ক্ষতি হয়েছে। দোকানের আয় দিয়েই তাদের সংসার চলত। এখন তাদের পথে বসার উপক্রম। তারা এর সুষ্ট বিচার ও ক্ষয়ক্ষতি পুসিয়ে পাওয়ার দাবি করেন।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আজিজুল হক রাজন জানান, আমরা ঘটনার খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল থেকে এসে প্রায় একঘন্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে পেরেছি। আমাদের আরো কিছুক্ষণ জানালে জানালে আগুনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরো কমানো যেত।
কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের লিডার আব্দুল কাদির জানান, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমাদের পানির পাম্পটি হঠাৎ চালু না হওয়ায় তাৎক্ষনিক সমস্যার সৃষ্ঠি হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশেকুল হক জানান, ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারণে এই অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে এটি তদন্তক্রমে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যতাযত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্থরা যাতে যতাযত ক্ষতিপূরন পায় সে ব্যবস্থা করা হবে। আগুনের সূত্রপাত ও ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন