শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কাজিপুরের বানভাসী মানুষের দাবি

প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কাজিপুরের বানভাসী মানুষের দাবি
‘রিলিপ চাই না আবাদ করমু সার বীজ চারা দ্যানগো সাব’
কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : ‘সাব! আমাগোরে সব গ্যাছে গা। বানে একবারে ছাপ কইর‌্যা নিয়া গ্যাছে। এহন পানি নাইমা গ্যাছে। কিন্তুক আবাদ শ্যাষ। তারপরেও আমরা রিলিপ চাই না সাব। আবাদ করমু। সার বীজ চারা দ্যানগো সাব!’ চোখের জল মুছতে মুছতে নিজের পচে যাওয়া ধানখেত দেখিয়ে কথাগুলো বলছিলেন খাসরাজবাড়ী গ্রামের ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধ হারুনুর রশিদ। এবারের বন্যায় তার তিন বিঘা জমির থোর ধান দশদিন পানির নিচে থেকে পচে গেছে। ঢাকার পোশাক কারখানায় কাজ করা একমাত্র ছেলের সামান্য টাকায় চাষাবাদের কাজ করেন হারুনুর রশিদ। সাত সদস্যের হারুনুরের সংসারে দুই মেয়ের বিয়ে এখনো হয়নি। কেবল বড় মেয়ের বিয়ের কথা এক প্রকার হয়ে গেছে। আসন্ন কোরবানির ঈদেই বিয়ে। এর মধ্যেই তার আবাদের ধান ঘরে আসার কথা। এজন্য রোপা লাগানো, সার, নিড়ানি সব মিলে হাতের প্রায় বারো হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছেন। কিন্তু বন্যা তার স্বপ্নের মাঝে বিষাদের ছায়া ফেলেছে। কাজিপুরের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক বকুল সরকার ওই গ্রামে ত্রাণ বিতরণ করতে গেলে হারুনুর রশিদ তাদের নিকট এসব কথা বলতে বলতে গামছায় চোখের পানি মুছে ফেলছিলেন। শুধু হারুনুর রশিদ নয়, এবারের দীর্ঘস্থায়ী বন্যাটা একটু দেরিতে আসায় কৃষকের ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি। তারা যখন নিড়ানি ও শেষবারের মতো সার প্রয়োগ করে ফসল ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর তখনই বন্যার পানিতে ডুবে যায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের সবুজে ভরা বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। কৃষি অফিসের হিসাব মতে, এবারের বন্যায় ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে নিমজ্জিত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কাজিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মামুনুর রহমান জানান, এক সপ্তাহের নিচে পানিতে যেসব ধান ডুবেছিল সেসব খেতের পঞ্চাশ ভাগ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি বৃষ্টি হয়ে ধানগাছের কাঁদাগুলো পরিষ্কার হয়ে যায় তাহলে ফলন পাওয়ার সম্ভাবনাটা বেশি থাকবে। আর ১৫ দিনের মতো পানিতে ডুবে থাকা ধান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কাজিপুরের চরাঞ্চল এবং ডাঙ্গা বা বিড়া অঞ্চলের চাষিদের জন্য কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে দুইরকম পরামর্শ দেয়া হয়েছে। চরাঞ্চলে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দেশিধান গাইনজা লাগানো যেতে পারে। তাছাড়া ডাল, ভুট্টাসহ অগ্রি

‘রিলিপ চাই না আবাদ করমু সার বীজ চারা দ্যানগো সাব’
কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : ‘সাব! আমাগোরে সব গ্যাছে গা। বানে একবারে ছাপ কইর‌্যা নিয়া গ্যাছে। এহন পানি নাইমা গ্যাছে। কিন্তুক আবাদ শ্যাষ। তারপরেও আমরা রিলিপ চাই না সাব। আবাদ করমু। সার বীজ চারা দ্যানগো সাব!’ চোখের জল মুছতে মুছতে নিজের পচে যাওয়া ধানখেত দেখিয়ে কথাগুলো বলছিলেন খাসরাজবাড়ী গ্রামের ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধ হারুনুর রশিদ। এবারের বন্যায় তার তিন বিঘা জমির থোর ধান দশদিন পানির নিচে থেকে পচে গেছে। ঢাকার পোশাক কারখানায় কাজ করা একমাত্র ছেলের সামান্য টাকায় চাষাবাদের কাজ করেন হারুনুর রশিদ। সাত সদস্যের হারুনুরের সংসারে দুই মেয়ের বিয়ে এখনো হয়নি। কেবল বড় মেয়ের বিয়ের কথা এক প্রকার হয়ে গেছে। আসন্ন কোরবানির ঈদেই বিয়ে। এর মধ্যেই তার আবাদের ধান ঘরে আসার কথা। এজন্য রোপা লাগানো, সার, নিড়ানি সব মিলে হাতের প্রায় বারো হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছেন। কিন্তু বন্যা তার স্বপ্নের মাঝে বিষাদের ছায়া ফেলেছে। কাজিপুরের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক বকুল সরকার ওই গ্রামে ত্রাণ বিতরণ করতে গেলে হারুনুর রশিদ তাদের নিকট এসব কথা বলতে বলতে গামছায় চোখের পানি মুছে ফেলছিলেন। শুধু হারুনুর রশিদ নয়, এবারের দীর্ঘস্থায়ী বন্যাটা একটু দেরিতে আসায় কৃষকের ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি। তারা যখন নিড়ানি ও শেষবারের মতো সার প্রয়োগ করে ফসল ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর তখনই বন্যার পানিতে ডুবে যায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের সবুজে ভরা বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। কৃষি অফিসের হিসাব মতে, এবারের বন্যায় ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে নিমজ্জিত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কাজিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মামুনুর রহমান জানান, এক সপ্তাহের নিচে পানিতে যেসব ধান ডুবেছিল সেসব খেতের পঞ্চাশ ভাগ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি বৃষ্টি হয়ে ধানগাছের কাঁদাগুলো পরিষ্কার হয়ে যায় তাহলে ফলন পাওয়ার সম্ভাবনাটা বেশি থাকবে। আর ১৫ দিনের মতো পানিতে ডুবে থাকা ধান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কাজিপুরের চরাঞ্চল এবং ডাঙ্গা বা বিড়া অঞ্চলের চাষিদের জন্য কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে দুইরকম পরামর্শ দেয়া হয়েছে। চরাঞ্চলে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দেশিধান গাইনজা লাগানো যেতে পারে। তাছাড়া ডাল, ভুট্টাসহ অগ্রিম শীতের শাকসবজি লাগালে ভালো হবে। আর বিড়া অঞ্চলে আমন ধান কিছু জমিতে আর বাকি জমিতে আগাম জাতের অন্যান্য ফসলের চাষ করা যাবে। এদিকে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে কৃষক নতুন করে আমন ধান লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় চারা ও সার পাচ্ছে না। বন্যায় বীজতলা ডুবে যাওয়াতে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।

ম শীতের শাকসবজি লাগালে ভালো হবে। আর বিড়া অঞ্চলে আমন ধান কিছু জমিতে আর বাকি জমিতে আগাম জাতের অন্যান্য ফসলের চাষ করা যাবে। এদিকে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে কৃষক নতুন করে আমন ধান লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় চারা ও সার পাচ্ছে না। বন্যায় বীজতলা ডুবে যাওয়াতে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন