চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য সহায়ক দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা প্রণয়ন, শিক্ষাব্যবস্থার যুগোপযোগীকরণ, অবকাঠামো ও মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, শিল্প-শিক্ষার সমন্বয়সহ এখাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন সংশ্লিষ্ট বক্তারা।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘করোনা প্রেক্ষাপটে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। ডাক, টেলিযোগোযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তফা জাব্বার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরাগ।
স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, চতুর্থ শিল্প বৈশি^ক ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়নসহ সর্বোপরি অর্থনৈতিক কর্মকাÐে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং আমাদের শিল্পখাতে এ বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন, শিক্ষাব্যবস্থার যুগোপযোগীকরণ, অবকাঠামো উন্নয়নসহ এখাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান খুবই জরুরী। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি খুব স্বল্পসময়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে, তবে এখাতের প্রয়োজনীয় অগ্রগতির জন্য আমাদের প্রস্তুুতি এখনও কাঙ্খিত মাত্রায় নয়। এ লক্ষ্যে তিনি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রস্তাবিত শিল্পনীতিতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা থাকা খুবই আবশ্যক বলে মত প্রকাশ করেন। শামস মাহমুদ বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নতুন নতুন ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচনার দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যার মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হবে, তবে এ সুবিধা গ্রহণ করতে বাংলাদেশকে সমন্বিত নীতিমালা গ্রহণ এবং তার যাথাযথ বাস্তবায়ন একান্ত জরুরী।
মোস্তফা জাব্বার বলেন, স্বাধীনতার পর আমাদের অর্থনীতি কৃষির উপর অধিক হারে নির্ভর থাকলেও এখন আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখছি। তিনি বলেন, বিশে^র শিল্পোন্নত দেশগুলোতে প্রথম চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রথম চিন্তা-ভাবনা আসলেও, যেটি বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগনকে অর্থনৈতিকভাবে আরো শক্তিশালী করতে হলে, জনগনের নিকট তথ্য-প্রযুক্তির সেবা দ্রæত পৌঁছাতে হবে। তিনি জানান, বাংলাদেশের জনগনের তথ্য-প্রযুক্তি গ্রহণের সক্ষমতা অত্যন্ত বেশি, যেটি করোনা মহামারীর সময় সেটি প্রমানিত হয়েছে এবং বর্তমানে মহামারীর সময়ে দেশের টেলিকম খাত মানুষকে সর্বাতœক সেবার চেষ্টা করেছে। তিনি জানান, ২০০৮ সালে বাংলাদেশে ৮ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে, যেখনে ৮ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করা হতো, তবে বর্তমানে দেশে ২১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করছে এবং এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে কুয়াকাটা সাবমেরিন ক্যাবলের সক্ষমতা বাড়াতো হতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কিভাবে কাজ করবে এবং কিভাবে দেশের মানুষের সর্বাতœক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়, তার উপর নির্ভর করে এ বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। তিনি আরো জানান, ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের শহারাঞ্চলগুলোতে ৫জি সুবিধা প্রদান করা যাবে এবং দেশের উদ্যোক্তাদের সহায়তার লক্ষ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে ৫জি সুবিধা প্রদান করা হবে। এছাড়াও তিনি দেশের শিক্ষাকার্যক্রমে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার আরো বাড়ানোর উপর জোরারোপ করেন। ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনির্ভাসিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)-এর সহযোগী অধ্যাপক সাজিদ আমিত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন