শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

চার মাস ধরে দুর্ভোগে বিশ হাজার মানুষ

প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা
শ্রীনগরে দেড় কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়নের নামে স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ৪ মাস ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কুকুটিয়া ইউনিয়নের ৮টি গ্রামের অন্তত বিশ হাজার মানুষ। বিবন্দী-কাজিপাড়া নামের এই রাস্তাটি শ্রীনগর উপজেলা এলজিইডির তালিকাভুক্ত হলেও রাস্তার উন্নয়নের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। উপজেলা এলজিইডি অফিস জানায়, রাস্তা উন্নয়নের জন্য তাদের কাছ থেকে কেউ অনুমতিও নেয়নি। রাস্তাটির উন্নয়নের বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প অফিসও কিছু বলতে পারছে না। এ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। তবে প্রাণকৃষ্ণ ওরফে পিকে বাড়ৈ নামে এক ঠিকাদার পাঁচ মাস আগে রাস্তাটি নির্মাণে হাত দেন। স্থানীয়রা জানান, এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিরা রাস্তা নির্মাণে অর্থের উৎস জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমকে প্রা. লি.-এর কর্ণধার পিকে বাড়ৈ নীরব ভূমিকা পালন করেন। এর কয়েকদিন পর পিকে বাড়ৈ তার ফেসবুকে ওই এলাকার ২১ জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে এক ট্যাটাসে দাবি করেন, তারা নিজেদের অর্থ দিয়ে রাস্তার উন্নয়ন করছেন। তাই এলজিইডির অনুমতির প্রয়োজন পড়েনি। এক মাসে পিকে বাড়ৈ ১০ ফুট প্রশস্থ রাস্তাটি ৩ ফুট উঁ”ু করে মাত্র ২ ফুট প্রশস্ত করে রেখে দেয়। এতে ওই এলাকার একমাত্র রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পিকে বাড়ৈ ঢাকায় বসবাস করার কারেণ এ রাস্তাটি নিয়ে এখন আর তার কোনো মাথাব্যথাও নেই বলে স্থানীয়রা জানান। অনুসন্ধানে দেখা যায়, স্ট্যাটাসে উল্লিখিত ২১ জন ব্যক্তির মধ্যে দিনমজুর, সামান্য পুঁজির ব্যবসায়ী ও বাবুর্চিও রয়েছেন। তাদের সাথে আলাপ করলে তারা উল্টো প্রশ্ন করেন, যেখানে তাদের নিজেদের সংসার চলেনা সেখানে রাস্তা করতে টাকা দেবেন কোথা থেকে? মামুন হাওলাদার ও আনোয়ার শেখসহ তিন-চারজন  পিকে বাড়ৈকে টাকা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তিনি মন্ত্রণালয় থেকে কাজ আনার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন এবং কাজ হয়ে যাওয়ার পর তাদেরকে লাভের অংশসহ ফেরত দেয়ার কথা বলেছেন। ২১ জনের তালিকার মধ্যে ২ নাম্বারে থাকা আলী আহমেদ জানান, তাকে না জানিয়েই তালিকায় তার নাম দেয়া হয়েছে। রাস্তাটি যেভাবে তৈরি করা হয়েছে তাতে লোকজন এখন আর চলাচল করতে পারছে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাইউম মিন্টু জানান, রাস্তাটির কারণে অত্র ইউনিয়নের বিবন্দী, বনগাঁও, মুসলিম পাড়া, রাণা, সিন্দুরদি, দত্তগাঁও, জুরাসার, পাচলদিয়া ও কাজিপাড়া এলাকার হাজার হাজার লোকজন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ নিয়ে এলজিইডিসহ প্রশাসনের দ্বারস্ত হয়েও কোনো সুরাহা পাওয়া যাচ্ছে না। এব্যাপারে পিকে বাড়ৈ এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি রাস্তাটি নির্মাণে অর্থের উৎসের বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। উপজেলা এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এলজিইডির রাস্তায় কেউ উন্নয়ন করতে চাইলে তাদের কাছ থেকে অনুমতি নেয়ার কথা। এ রাস্তায় এমনটি করা হয়নি। উন্নয়নের নামে রাস্তাটি আরো বেহাল করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার প্রক্রিয়া চলছে।



 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন