রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

মহাভোগান্তি মহাসড়কে

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঝিনাইদহ-কালীগঞ্জ অংশটি অত্যন্ত নাজুক

আশিকুর রহমান, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঝিনাইদহ-কালীগঞ্জ অংশটি অত্যন্ত ব্যস্ততম। দক্ষিণাঞ্চালের ছোট-বড় বেশিরভাগ পরিবহন এই সড়কেই চলাচল করে। এছাড়াও রয়েছে মালবাহী ভারী বহন। কিন্ত এ মহাসড়কের ঝিনাইদহ থেকে কালীগঞ্জের ১৫ কিলোমিটারের বেশ কিছু অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মহাসড়কটি বর্ষার শুরু থেকে পথচারীদের মহাভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কের পিচ-পাথর ওঠে গর্তের সৃষ্টি হয়ে প্রায় সময় বৃষ্টির পানি জমে থাকছে। যে কারণে ব্যস্ততম এ সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এদিকে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে, আপাতত চলাচল উপযোগী করতে ঝিনাইদহ সড়কের ওপরে ইট বসিয়ে গর্ত ভরাট করা হচ্ছে। পরে বরাদ্দের টাকা আসলে ভালোভাবে কাজ করা হবে।
এ সড়কে চলাচলকারী একাধিক যান চালক বলেন, সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে আগের চেয়ে ২ গুণের চেয়ে বেশি সময় লাগছে। তাছাড়া এই ভাঙাচুরা সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত বিকল হয়ে পড়ছে অসংখ্য গাড়ি। মাঝে মধ্যে নামমাত্র সংষ্কার করা হলেও কয়দিন যেতে না যেতেই আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, সড়কটি নিয়ে তারাও পড়েছেন বিব্রত অবস্থায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের ঝিনাইদহের হামদহ বাসস্টান্ডে পর থেকে লাউদিয়া, চুটলিয়া, তেতুলতলা, বিষয়খালী, কয়ারগাছি, ছালাভরা, বেজপাড়া, খয়েরতলা, নিমতলা বাসস্টান্ড, মেইন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়কের পিচ আর পাথর ওঠে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এই সকল স্থানে বর্তমানে এমন অবস্থা বিরাজ করছে যা পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
একাধিক যানচালক জানান, এ সড়কে মাঝখানে অসংখ্য গর্ত। বিগত আম্পান ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিতে বেশি ক্ষতি হয়েছিল এ সড়কটির। এরপর কয়েক দফা গর্ত ভরাট করা হয়েছে, কিন্তু ২-৪ দিন পরই আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেছে সড়কটি। তারা জানান, মাঝে মধ্যে গর্তগুলো এতো বড় ও গভীর হয়েছে যে প্রতিনিয়ত গাড়ি উল্টে যাচ্ছে। যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়িগুলোর ঝুঁকিটা আরও বেশি। এমন অবস্থায় তাদের চলাচল করতে হচ্ছে।
ওই সড়কে চলাচলকারী ট্রাক চালক আব্দুস সবুর জানান, অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ট্রাকে মালামাল বোঝায় থাকলে ভাঙাচুরা রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে গাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। অপচয় হচ্ছে সময়েরও।
ট্রাক চালক আরুজ আলী সর্দার জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে সারাদেশের যোগাযোগের এটাই সড়কপথ। যশোর বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে মালামাল ছাড় হওয়ার পর সে মালবাহী গাড়িগুলো এ সড়ক দিয়েই যাতায়াত করে থাকে। এছাড়াও মোংলা নৌবন্দর থেকেও মালামাল নিয়ে ট্রাক চালকরা এ জেলার উপর দিয়েই উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশে যান।
দক্ষিণবঙ্গের উৎপাদিত সবজিসহ কৃষিপণ্য বড় বড় গাড়ি ভরে এ সড়ক দিয়েই নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক দিয়ে ঢাকা, রাজশাহী, ফরিদপুরসহ জাতীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন রুটের যাত্রীবাহী বাসসহ পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে থাকে। ফলে ব্যস্ততা ও গুরুত্বের দিক বিবেচনায় এনে সড়কটির উন্নয়নে দ্রæতই নজর দেয়ার দরকার।
জেলার কালীগঞ্জ শহরের বাসিন্দা জুয়েল রানা জানান, পেশাগত কারণে প্রতিনিয়ত মোটরসাইকেল চালিয়ে কালীগঞ্জ থেকে ঝিনাইদহে যেতে হয়। কিন্ত মহাসড়কটির বাজে অবস্থার জন্য প্রায় দ্বিগুন পথ ঘুরে গ্রামীণ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। একদিকে অসংখ্য যানবহনের চাপ অন্যদিকে ভাঙাচোড়া সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল চালাতে চরম ভয় লাগে।
এই প্রসঙ্গে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হায়দার জানান, এই মহাসড়টির মেরামতের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। মেরামত শুরু হতে বিলম্ব হওয়ায় ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপদ বিভাগ চলাচল উপযোগী করতে সড়কে কাজ করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন