হেফাজত ইসলামের আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ইন্তেকালের পর কে হচ্ছেন তার উত্তরসূরি- এ নিয়ে চট্টগ্রামে জোর আলোচনা, বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার তাকে চির বিদায় জানাতে আসা শোকার্ত মানুষের মুখেও আলোচনা তার শূন্যতা পূরণ হবে কিভাবে। তৌহিদি জনতার প্রাণের সংগঠন হেফাজতে ইসলামের হাল ধরছেন কে। কে হচ্ছেন ঐতিহ্যবাহী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার মহাপরিচালক।
ইন্তেকালের মাত্র ২০ ঘণ্টা আগে মাদরাসার মুহতামিম পদ থেকে সরে দাঁড়ান আল্লামা শফী। এরপর তাকে সম্মানজনক পদ উপদেষ্টা হিসেবে ঘোষণা করে মাদরাসা শুরা কমিটি। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বয়সের ভারে ন্যুব্জ আল্লামা শফীকে সম্মানজনক পদে রেখে নতুন মহাপরিচালক নিয়োগের দাবি জানানোর প্রেক্ষাপটে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। টানা দুই দিনের বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষা পরিচালক আল্লামা শফীর পুত্র আনাস মাদানীকেও বহিষ্কার করা হয়। মূলত মাদরাসার মহাপরিচালক নিয়োগ নিয়েই এ বিরোধের সূত্রপাত। শতবর্ষী আল্লামা শফী নানা অসুখ-বিসুখে দুর্বল হয়ে পড়লে মাদরাসার মহাপরিচালক নিয়োগের দাবি উঠে। একটি পক্ষ আল্লামা জোনায়েদ বাবুনগরীকে মহাপরিচালক করার প্রস্তাব দিলে এর বিরোধিতা করেন আল্লামা শফীর পুত্র আনাস মাদানী।
এরপর থেকে আনাস মাদানী মাদরাসায় কর্তৃত্ব শুরু করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের প্রেক্ষিতে ছাত্র আন্দোলনে তাকে বহিষ্কারের দাবি তোলা হয়। এ দাবির প্রেক্ষিতে শেষপর্যন্ত তাকে স্থায়ীভাবে সহকারী শিক্ষা পরিচালকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। আল্লামা শফীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ শুরা কমিটির সভায় মাদরাসার মহাপরিচালক নিয়োগের দায়িত্ব দেয়া হয় শুরা কমিটিকে।
বিক্ষোভের অবসান না হতেই চিরবিদায় নিলেন অর্ধশত বছর এ মাদরাসার সাথে থাকা আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তার ইন্তেকালে এখন শোকসাগরে ভাসছে হাটহাজারী মাদরাসা। তবে এর মধ্যেও আলোচনায় আসছে কে হচ্ছেন আল্লামা শফীর উত্তরসূরি। কে ধরছেন হাটহাজারী মাদরাসার হাল। আর অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কান্ডারীই বা হচ্ছেন কে?
এ নিয়ে মুখ খুলেছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব হাফেজ আল্লামা জোনায়েদ বাবুনগরী। শুক্রবার মধ্যরাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, পরবর্তী আমির কে হবেন তা কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। আল্লামা শফীর ইন্তেকালে পর সংগঠনের কার্যক্রমে কোন প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বাবুনগরী বলেন, প্রভাবতো কিছু হবেই। ওনার মতো তো আর মানুষ পাওয়া যাবে না। আমার দায়িত্ব হলো এখন কাউন্সিল ডাকা। কাউন্সিল যে সিদ্ধান্ত নেবে ওটাই হবে। আল্লামা শাহ আহমদ শফী শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন