মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপ সম্পাদকীয়

দেশে দুর্নীতির মূলোচ্ছেদ অভিযান সফল হতে পারছে না কেন

প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ আবদুল গফুর
দেশের এ মুহূর্তে প্রধান সমস্যা কি? এ প্রশ্ন করা হলে অধিকাংশ মানুষ নিশ্চয়ই সন্ত্রাসের কথা বলবেন। গুলশানের ঘটনার পর বাংলাদেশের এ নতুন পরিচিতি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। কারণ গুলশানের ওই ঘটনায় বহু বিদেশিও হতাহত হয়েছেন। তবে এরপরও বাস্তবতার খাতিরে স্বীকার করতেই হবে, বাংলাদেশের এ সন্ত্রাসী খেতাব নেহায়েত সাম্প্রতিকতম। বলা চলে, গুলশান-পরবর্তী অর্জন। বহু দিন ধরেই বাংলাদেশের প্রধান সমস্যার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে দুর্নীতি। সারা বিশ্বে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে প্রথম দিকে স্থান করে নেয়ার ‘গৌরব’ বাংলাদেশের একাধিকবারই হয়েছে।
আর এক হিসেবে সাম্প্রতিককালের প্রধান সমস্যারূপে চিহ্নিত সন্ত্রাসও দুর্নীতিরই এক ভিন্নতর বহিঃপ্রকাশ। দুর্নীতির সংজ্ঞা যদি হয় এমন কোনো কাজ যা নৈতিকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক অথচ তা ইচ্ছাকৃত বা পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন করা হয়, তবে তা অবশ্যই দুর্নীতির ব্যাপক পরিসীমার অন্তর্গত। সে নিরিখে সন্ত্রাস নামক যে পরিকল্পিত কর্মকা-ের মাধ্যমে দোষী-নির্দোষ নির্বিশেষে মানুষদের পরিকল্পিতভাবে হত্যাকা-ের শিকারে পরিণত করা হয় তা অবশ্যই দুর্নীতি।
আমাদের দেশে অবশ্য বহু দিন ধরেই দুর্নীতিকে ব্যাপক অর্থে না ধরে অন্যায় পন্থায় সম্পদ অর্জন বা অবৈধ অর্থনৈতিক লেনদেনের সীমাবদ্ধ অর্থে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। এই সীমাবদ্ধ অর্থেও আমাদের দেশে দুর্নীতির এমন ব্যাপক প্রসার ঘটে যে, রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যে একটি বিশেষ দপ্তর খুলতে বাধ্য হয়। বহুল আলোচিত দুর্নীতি দমন কমিশন তথা দুদক তার সর্বশেষ ও সর্বোচ্চ রূপ। সেই দুদক তথা দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যকারিতা নিয়েই সম্প্রতি প্রশ্ন তোলা হয়েছে। গত সোমবার বাংলাদেশের বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর এক প্রতিবেদন থেকে এসব জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব-এর এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল : ‘টিআইবি গবেষণা প্রতিবেদন : রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে দুদককে ব্যবহার করা হচ্ছে’। প্রতিবেদনে বলা হয় : ‘আইনি স্বাধীনতা থাকলেও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যক্রমে জনগণের আস্থা কম। রাজনৈতিক হয়রানির জন্য দুদককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে মানুষের ধারণা রয়েছে।’ ধানমন্ডিতে টিআইবির সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে দুই গবেষক শাহজাদা এম আকরাম ও শাম্মী লায়লা ইসলাম এ পর্যালোচনা প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
দৈনিক ‘প্রথম আলো’-তে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে : ‘আইনি কাঠামো অনুসারে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, যা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে তুলনাযোগ্য। কিন্তু সংস্থাটির কার্যকারিতার ওপর মানুষের আস্থা কম। রাজনৈতিক হয়রানির জন্য দুদককে ব্যবহার করা হয় বলে মানুষের ধারণা। দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গত রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার উদ্যোগে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের’ ওপর পর্যালোচনা ’শীর্ষক ওই তথ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ সম্পর্কে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, প্রতিষ্ঠানটি আইনগত দিক দিয়ে যথেষ্ট শক্তিশালী হলেও এটি সম্পর্কে জনগণের আস্থা একেবারেই কম।’ এ সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ অবশ্য বলেছেন, ‘আস্থার সংকট কাটাতে আমরা কাজ করছি।’ কিন্তু তাঁর এ আশাবাদ বাস্তবে ফলপ্রসূ করতে শুধু তাঁর ইচ্ছা বা সংকল্পই যথেষ্ট নয়। সংশ্লিষ্ট আরো অনেকের সহযোগিতা অপরিহার্য, যা তিনি পাবেন কিনা তা নিশ্চিত নয়।
অন্যান্য পত্রিকায় এ সম্পর্কিত যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তারও মূল প্রতিপাদ্য প্রায় একই। যেমন দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল : ‘দুদকে মানুষের আস্থা কম : টিআইবির গবেষণা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, দুদককে পুরোপুরি রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ মনে করা হয় না। ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিবিদদের ব্যাপারে দুদক নমনীয় বলে ধারণা রয়েছে। ২০১৫ সালে দুদকে তদন্তাধীন ৩৬ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যে ১৬ জন বিরোধী রাজনৈতিক দলের আর তিন জন ক্ষমতাসীন দলের। একই বক্তব্য দৈনিক ‘সমকালে’ও প্রকাশিত হয়েছে। দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনে অবশ্য একটি নতুন বক্তব্য উল্লিখিত হয়েছে। সেটি হচ্ছে দুদকের চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির প্রয়োজন সম্পর্কে।
উপরে উল্লিখিত বিভিন্ন প্রত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে দুদকের দুর্বলতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি উঠে এসেছে। এখন শুধু প্রশ্ন, এসব দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে যা যা করণীয় তা যথাশীঘ্র সম্পন্ন করা সম্ভব কিনা। দুদক রাষ্ট্রের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিযুক্ত যেখানে নৈতিকতাকে সর্বোচ্চ স্থান দেয়া অপরিহার্য। অর্থাৎ দেশ থেকে দুর্নীতির মূলোচ্ছেদ করতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এমন উন্নত নৈতিকতার অধিকারী হতে হবে, যাদের নিজের ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত, রাজনৈতিক সকল সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে ওঠে দুর্নীতিবাজকে অপরাধী মনে করে তার কঠোর শাস্তিবিধান নিশ্চিত করতে হবে। সে কাজ কি এমন সব কর্মকর্তার দ্বারা সম্ভব, যারা দুদকের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগই পান শাসক দলের সাথে তাদের সম্পর্কের ভিত্তিতে? আর তারপরও সে শাসক দল যদি হয় এমন যারা ক্ষমতায়ই আসে জনগণের স্বাধীন রায়ের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষের অধীনে অনুষ্ঠিত অবাধ নির্বাচনের পরিবর্তে একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে।
পাকিস্তান আমলে দেশে কখনো সুষ্ঠু পথে গণতন্ত্র বিকাশ লাভ করতে পারেনি। এটা আমরা সবাই জানি। তাই জনগণের গভীর প্রত্যাশা ছিল তাদের স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভিত্তিতে সব কিছু পরিচালিত হবে। কিন্তু দুঃখের সাথে তারা লক্ষ্য করল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের আমলেই গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে দেশের সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে একটি মাত্র সরকারি দল রেখে দেশে একদলীয় বাকশালী শাসনব্যবস্থা কায়েম করা হলো। পরে বহু দুঃখজনক ঘটনার মধ্যে দিয়ে দেশে যাও বা বহুদলীয় ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হলো, একপর্যায়ে একটি নির্বাচিত সরকারকে সামরিক ক্যুর মাধ্যমে উৎখাত করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে বসলেন তদানীন্তন সেনাপ্রধান জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। জনগণ তখন অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করলো জেনারেল এরশাদের এই অপকর্মকে সমর্থন দান করে বসলেন দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা। এটা নিশ্চয়ই সম্ভব হয়েছিল এই বিবেচনায় যে, সামরিক ক্যুর মাধ্যমে উৎখাত হওয়া ঐ নির্বাচিত সরকারের নেতৃত্বে ছিল আওয়ামী লীগের নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি। অর্থাৎ শেখ হাসিনার কাছে নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের তুলনায় সামরিক ক্যুর মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী সেনাপ্রধানের শাসন অধিকতর গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছিল।
জনগণের মনে থাকার কথা এরপর দেশে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে এরশাদবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগও সে আন্দোলনে যোগ দেয়। এরশাদ আমলের অবসানে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অবাধ নির্বাচনের প্রশ্ন উঠলে দেশের দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রশ্নে একমত হয়। সে নির্বাচন খুব সুষ্ঠু হয়। সবচাইতে পুরাতন ও সুসংগঠিত দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিশ্বাস ছিল তাঁর দলই জয়ী হবে। নিজস্ব ভোটকেন্দ্রে ভোটদানের পর শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতাকালে একপর্যায়ে বলেন, আমি সব জেলার খবর নিয়েছে। নির্বাচন খুব সুষ্ঠু হয়েছে। আপনারা লক্ষ্য রাখবেন, ভোটে হেরে গিয়ে কেউ যেন এতে আবার কারচুপি আবিষ্কার না করে। পরে নির্বাচনের পূর্ণ ফল বের হলে যখন দেখা গেল, আওয়ামী লীগ নয়, জয়ী হয়েছে বিএনপি, তিনি অবলীলাক্রমে বলে ফেললেন, নির্বাচনে সূক্ষ্মকারচুপি হয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফল অনুসারে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠন করলে তাঁর শাসন আমলে প্রধানত তদানীন্তন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার দাবীর ভিত্তিতেই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান সংবিধানে বিধিবদ্ধ করা হয়। এ মোতাবেক দেশে বেশ কয়েকটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং তাতে পালাক্রমে দুই প্রধান দলই জয়ী হয়ে দেশ চালনার সুযোগ লাভ করে। পরবর্তীকালে একপর্যায়ে শেখ হাসিনার শাসনামলে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়া হলেও তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ এনে নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি
দেশের একটি প্রধান দল নির্বাচন বয়কট করায় নির্বাচন তার সব তাৎপর্য হারিয়ে ফেলে। জনগণও ঐ নির্বাচনে তাদের আগ্রহ হারায়। এ পর্যায়ে বিরোধী দল তো দূরের কথা, সরকারি দলের অনেক নেতাকর্মীও ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার প্রয়োজনবোধ করেননি। কারণ তারা জানতেন, ভোটকেন্দ্রে না গেলেও তাদের ভোটদানের ব্যবস্থা ঠিকঠাকই করবে দলের নেতাকর্মীরা। আসলে ঘটেও তাই। ফাঁকা ভোটকেন্দ্র পেয়ে সরকারি দলের অল্প সংখ্যক নেতাকর্মী ইচ্ছামত ব্যালটপত্রে সিল মেরে দলীয় প্রার্থীদের ভোট যথাইচ্ছা বাড়িয়ে তোলার সুযোগ গ্রহণ করেন। জনগণের চোখে ৫ জানুয়ারির এই ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমেই বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে ফাঁদ আঁটছে ভবিষ্যতে সহজে যাতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আর কখনও ক্ষমতায় আসতে না পারে। এ লক্ষ্যে চেষ্টা চলছে হামলা ও মামলার মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে।
এভাবে শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির মামলা দিয়ে তাদের রাজনীতি ও ভোটের ময়দান থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায় যে সরকার তাদের দ্বারা দুর্নীতির মূলোৎচ্ছেদ যে আদৌ সম্ভব নয়, তার আভাষ সুস্পষ্ট টিআইবির প্রতিবেদনে। তাই তো ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুদক এখন দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিতকরণের পরিবর্তে রাজনৈতিক হয়রানির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। যে দুদক দুর্নীতি দমনের মহৎ লক্ষ্যে সৃষ্টি করা হয়েছিল এখন তার পরিবর্তে তাকে ব্যবহার করা হচ্ছে শাসক দলের সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক হয়রানির লক্ষ্যে।
দেশকে দুর্নীতির জাল থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যেই একদা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সৃষ্টি করা হয়েছিল। এটা ছিল একটি মহৎ লক্ষ্য। সেই মহৎ লক্ষ্যের পরিবর্তে দুদককে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে বিরোধী দলের রাজনৈতিক হয়রানির তথা দেশ থেকে গণতন্ত্রের মূলোচ্ছেদের লক্ষ্যে। সরকারের এসব অপকর্ম চলছে দেশের মানুষের চোখের সামনে। যে দুদকের একদা সৃষ্টি করা হয়েছিল দেশ থেকে দুর্নীতির মূলোৎচ্ছেদের মহৎ লক্ষ্যে সে দুদককে তার মূল লক্ষ্য বাদ দিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক হয়রানির মাধ্যমে দেশ থেকে গণতন্ত্র উচ্ছেদের লক্ষ্যে। স্বাভাবিকভাবেই এ লক্ষচ্যুত দুদকের প্রতি জনগণের আস্থা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
টিআইবির দুদক-সম্পর্কিত এ গবেষণা প্রতিবেদনের নিরিখে বলতে হয়, এখনো সময় আছে, সরকারের নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে দেশপ্রেমের কিছুমাত্র যদি অবশিষ্ট থেকে থাকে তা হলে তারা অবিলম্বে জাতি-ঘাতী এ কর্মকা- থেকে নিবৃত্ত হোন। দুর্নীতি দমন অভিযানের লক্ষ্যে যে সংস্থাটির জন্ম হয়েছিল তাকে স্বাধীনভাবে মাথা উঁচু করে তার মহৎ লক্ষ্য সামনে রেখে এগিয়ে যেতে দিন। নইলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যে মহান স্থপতি জীবিত অবস্থায় তাঁর চারপাশে ‘চাটার দলের’ উপস্থিতিতে বিব্রতবোধ করে গেছেন, মৃত্যুর পর কবরে শুয়েও তিনি শান্তি পাবেন না দুর্নীতি দমনের মহৎ লক্ষ্যের পরিবর্তে যদি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক হয়রানির কাজে ব্যবহৃত হয় দুর্নীতি দমন কমিশন তথা দুদক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Azizul Hoque Sujan ১১ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৪২ এএম says : 0
শস্যের ভেতরেই ভূত।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন