জামালপুরের সরিষাবাড়ী পিডিবি অফিসে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সহায়তায় বর্তমানে চলছে অবৈধ সংযোগের ছড়াছড়ি। এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী উসমান গণির বিরুদ্ধেও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলীর দুর্নীতির কাজে সহযোগিতাকারী একই কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলীকেও করা হয়েছে তদন্ত কমিটির সদস্য। এ নিয়ে পিডিবি কার্যালয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
পিডিবি ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরিষাবাড়ী উপজেলার ১৪টি স্থানে মিটার রিডিং গোপন করে অটোরিকশা ও বয়লার মুরগির ফার্মে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়। এরমধ্যে প্রতিটি স্থানে ২৫-৩০টি করে প্রতিরাতে চার শতাধিক অটোরিকশা চার্জ করা হচ্ছে। প্রতিটি বয়লার ফার্মে দিনরাত টানা বিদু্যুৎ ব্যবহার হয়ে থাকে। অভিযোগ রয়েছে, লাইনম্যান ইয়ানুছ আলীর মাধ্যমে নির্বাহী প্রকৌশলী উসমান গণি ও সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম ওইসব সংযোগের ব্যবহৃত বিদ্যুৎ মিটারের বাইরে বাইপাস লাইন দিয়ে রিডিং গোপন করা হয়। এতে প্রতিমাসে অবৈধভাবে তারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে পিডিবিকে লোকসান দেখানো হচ্ছে।
এসব কর্মকান্ড প্রকাশ্যে রূপ নেওয়ায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ টাঙ্গাইল পিডিবি’র বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২’র নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন জামালপুর পিডিবি’র বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. ইয়াহিয়া খান এবং সরিষাবাড়ী পিডিবি’র বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম। কমিটি ১৪টি সংযোগের মধ্যে ৮টি সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পান। তবে কমিটির সদস্য সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধেও সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।
এদিকে পিডিবি টাঙ্গাইলের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মো. তোফাজ্জল প্রামানিক গত ২৭ আগস্ট নির্বাহী প্রকৌশলী উসমান গণি ও সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে সুর্নিদিষ্ট অভিযোগ উল্লেখ করে শোকজ করেন। অপরদিকে তদন্ত কমিটি কাজ শুরুর আগের দিন তড়িঘড়ি করে অভিযুক্ত উসমান গণি ও সাইফুল ইসলাম অবৈধ সংযোগগুলোর কয়েকটি আলামত নষ্ট করেন। কমিটির কাজে ব্যাঘাত ও ঘটনা ভিন্নখাতে নিতেও চেষ্টা করেন তারা।
পিডিবি টাঙ্গাইলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. তোফাজ্জল প্রামানিক এক পত্রে উল্লেখ করেন, ‘তদন্ত কমিটির ৩নম্বর সদস্য সাইফুল ইসলামের তদন্তকালীন কীভাবে অভিযোগের আলামত পরিবর্তন করা হয় এবং কিছু সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয় তার ব্যাখ্যা প্রয়োজন।’ সেইসাথে অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী উসমান গণি কোন উদ্দেশ্যে অনৈতিক সুবিধাধারী গ্রাহকদের বিরুদ্ধে মামলা না করে তাদের রেহাই দেন- তাও ওই পত্রে জানতে চাওয়া হয়।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী উসমান গণির বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরক্ষনেই বলেন, ‘বিষয়টি অফিসের গোপনীয়, আপনারা কীভাবে জানলেন?
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন