বরিশালের গৌরনদীতে আড়াই লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে রেশমা আক্তার নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। গত শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার নওপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের বাবা আবু ফকির ও ভাই মো. রাসেল ফকির এ অভিযোগ করেন। ঘটনার পর গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার নওপাড়া গ্রাম থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় গৃহবধূর শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত রেশমার স্বজনরা জানায়, তিন বছর পূর্বে উপজেলার কটকস্থল গ্রামের আবু ফকিরের মেয়ে রেশমা আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার নওপাড়া গ্রামের আ. রাজ্জাক শিকদারের ছেলে নয়ন শিকদারের সামাজিকভাবে বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বিয়ের সময় মেয়ে জামাতা নয়ন শিকদারকে ৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ ৩ লক্ষাধিক টাকার মালামাল যৌতুক দেয়া হয়। তাদের সংসারে ১৮ মাস বয়সের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। নিহতের বাবা আবু ফকির অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের এক বছর পর জামাতা নয়ন শিকদারকে পান বরজ নির্মাণ করার জন্য এক লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়।
ধার-দেনা পরিশোধ করার জন্য নয়ন শিকদার গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে রেশমার কাছে আড়াই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলো। দাবিকৃত যৌতুকের টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে স্বামী নয়ন ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন ৫ দিন পূর্বে রেশমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
গত শনিবার বিকালে নয়ন ও তার এক বন্ধু এসে রেশমা ও তার ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে যায়। রাতে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন রেশমাকে শারীরিক নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চলায়। রাত দেড়টার দিকে এক প্রতিবেশী মোবাইল ফোনে আমাকে রেশমা হত্যার খবর দেয়। আমি গতকাল ভোরে জামাতার বাড়ি নওপাড়া গ্রামে যাই। মেয়ের লাশ ঘরের খাটের ওপর ফেলে রেখে নয়ন ও তার বাড়ির লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার জানান, খবর পেয়ে রেশমার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল দুপুরে বরিশাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। মাদকাসক্ত স্বামী নয়ন শিকদার যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী রেশমা আক্তারকে কিল-ঘুষি মারার পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। রেশমার ১৮ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। রেশমার শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। কয়েকমাস আগে মাদক সেবনের সময় নয়ন শিকদার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলো। নিহতের বাবা আবু ফকির বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন