সিলেটের ওসমানীনগরে ২৩টি বিদ্যালয়ে পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। যার কারণে ঘটতে পারে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা। ওসমানীনগরের কাগজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের সামনে দীর্ঘদিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে বিদ্যালয়ের আরেকটি ঝুঁকিপূর্ণ পরিত্যক্ত ভবন। এ ভবনের ভেতর হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবনটি ভাঙার জন্য একাধিকবার আবেদন করেও কোনো সুরাহা পাননি। খবর নিয়ে জানা যায় শুধু কাগজপুর নয়, উপজেলার অনেক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভাঙার জন্য আবেদন করেও সুফল পায়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরিত্যক্ত ভবনগুলো দ্রুত ভাঙার দাবি এলাকাবাসীর।
জানা যায়, উপজেলার ফকিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রথমপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হযরত শাহ্ তাজ উদ্দিন প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের জায়ফরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গ্রামতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খসরুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২৩টি বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে। যুগ যুগ ধরে ধরে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এতে নানা সমস্যায় ভোগছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অকার্যকর ভবনগুলো বিপদের আশঙ্কার পাশাপাশি জায়গা দখল করে রাখায় খেলাধুলা করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। অনেক বিদ্যালয়ে পরিত্যক্ত ভবন থাকায় জায়গার অভাবে নতুন ভবন নির্মাণও সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানা যায়। দীর্ঘদিন ধরে লিখিত আবেদন করলেও কার্যত ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাগজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মূলফটক ঘেষেই বিশাল জায়গা জুড়ে রয়েছে পরিত্যক্ত ভবন। টিনসেড ভবনের দেয়ালের একাধিক স্থানে রয়েছে ফাটল। ফকিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত ভবন দুটি ছেয়ে গেছে আগাছায়।
প্রথমপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মী রায় বলেন, বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের দেয়াল ধসে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। গত তিন বছরে ভবনটি ভাঙার জন্য একাধিক আবেদন করলেও ভাঙার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফকিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দাশ বলেন, পরিত্যক্ত ভবনে রাতের বেলা মাদকসেবীসহ অপরাধীরা অবস্থান করার সুযোগ পায়। ২০১১ সালে যোগদানের পর একাধিকবার আবেদন করেছি কিন্তু আজও ভাঙা হয়নি।
গোয়ালাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়েছ আহমদ চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত ভবন ও গাছ কাটার কার্যত ব্যবস্থা না নেয়ায় সরকারি নতুন ভবন নির্মাণ থেকে বঞ্চিত রয়েছে বিদ্যালয়টি। গজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ আহমদ বলেন, পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ধসে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকলেও ভাঙার ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেই।
এ ব্যাপারে ওসমানীনগরের শিক্ষা কর্মকর্তা দিলিপময় দাস চৌধুরী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ভাঙার জন্য নিলামের প্রক্রিয়া চলমান আছে।
সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বায়েজীদ খান বলেন, এসব ভবন ভাঙার জন্য উপজেলা পর্যায়ে একটি কমিটি রয়েছে। এই কমিটি পরিত্যক্ত ভবন ভাঙার ব্যবস্থা করে থাকেন। ওসমানীনগরের পরিত্যক্ত ভবনগুলোর ভাঙার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা অফিসারকে বলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন