বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পদ্মায় বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

হুমকির মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

মাহফুজুল আলম, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) থেকে | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৭ এএম

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে নতুন করে পদ্মা নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের প্রায় ৪ কি.মি. এলাকাজুড়ে পদ্মার ভাঙনে কয়েক হাজার একর আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুটি, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৩টি ওয়ার্ডের অন্তত ২০ হাজার মানুষ। এলাকাবাসীর দাবি ভাঙনরোধে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ যেন দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চলতি মৌসুমে ৩য় বার পদ্মা নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলাপাড়া, ভুরকাপাড়া ও কোলদিয়াড় এলাকায় পদ্মার ভাঙনে অনেকের বসতবাড়ি ও কয়েক হাজার একর আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
হুমকিতে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ, ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুটি, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা, ভুরকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নদীভরাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় কান্দিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোলদিয়াড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাটখোলাপাড়া জামে মসজিদ, জুনিয়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও জুনিয়াদহ বাজারসহ অসংখ্য ঘর-বাড়ি, বিভিন্ন স্থাপনা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পদ্মাগর্ভে চলে যাওয়ায় তারা এখন সর্বশান্ত ও আশ্রয়হীন। পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তাদের।
পদ্মার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ৯নং ওয়ার্ডের হাটখোলাপাড়া এলাকার হাসানুজ্জামান রাজা জানান, নতুন করে গত এক সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রায় ৪ কি.মি. এলাকা জুড়ে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। পদ্মার ভাঙনে তার আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে অচিরেই তাদের ঘর-বাড়ি নদীতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই কথা জানিয়েছেন জাহিদ হোসেন, খলিলুর রহমান, আব্দুল মজিদ ও রাকিব আলীসহ অনেকে। তাদের প্রত্যেকের জমির ফসলসহ আবাদী জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। পদ্মা নদীর ভাঙনে ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আতঙ্কে রাত-দিন কাটছে তাদের।
মরিচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলমগীর জানান, পদ্মা নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদী ভাঙনে তার ইউনিয়নের হাটখোলাপাড়া, ভুরকাপাড়া ও কোলদিয়াড় ৩টি ওয়ার্ডের কয়েক হাজার বিঘা আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনে ঘর-বাড়ি হারিয়েছে অসংখ্য পরিবার। আতঙ্কে রয়েছে ৩টি ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে দৌলতপুরের মানচিত্র থেকে মরিচা ইউনিয়ন নিশ্চিহ্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. আ ক ম সরওয়ার জাহান বাদশা জানান, পদ্মা নদীর ভাঙন ঠেকাতে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে তা রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়াও এসব এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে ব্লক বসিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন