শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

রাস্তা বন্ধ করায় একটি পরিবার বিপাকে

প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের তালুক বাজিত গ্রামে চলাচল রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় একটি পরিবার দীর্ঘ ৪ বছর ধরে অসহনীয় দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার রামভদ্র গ্রামের দুলাল ম-লের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন ওরফে নজিলা তালুক বাজিত গ্রামে তার পিতার বাড়ি সংলগ্ন কয়েক শতক জমি কিনে গত ৮ বছর আগে বাড়ি করে বসবাস করতে থাকেন। ওই বাড়িতে বসবাস করাকালীন তালুক বাজিত মৌজা ও রামভদ্র মৌজার সীমানার একটি মোটা আইল দিয়ে তারা যাতায়াত করত। ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের ভরণ-পোষণ দিতে না পেরে একপর্যায়ে রাবেয়া ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টে চাকরি নেয়। বাড়িতে থাকত রাবেয়ার মা মনজিলাসহ ৩ জন। কিন্তু গত ৪ বছর আগে ২ মৌজার সীমানার আইলে বেড়া দিয়ে পরিবারটির যাতায়াত বন্ধ করে দেয় আইল সংলগ্ন জমির মালিক মৃত হোসেন আলীর পুত্র আ. মান্নান। তখন থেকেই পরিবারটি অবরুদ্ধের মতো প্রায়। খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজে পরিবারটিকে বের হতে হয় একটি পুকুরের এক পাশ দিয়ে কখনো হাঁটু পানি কখনো কোমর পানি ভিজে। অবশেষে উপায়ান্তর না পেয়ে রাবেয়া ২ মৌজার সীমানার আইলের বেড়া সরিয়ে দিয়ে তাদের যাতায়াত পথ সুগম করতে ইউএনও বরাবর আবেদন করেন। এব্যাপারে ইউএনও (ভার:) হাবিবুল আলম আবেদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, তদন্ত করে সমস্যাটির সমাধান করা হবে।

মোঃ গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে

দুপচাঁচিয়া উপজেলা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ এখন ধানের ক্ষেত। ফলে বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্পলিসহ খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলা সদরের নাদর নদীর কোল ঘেঁষে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত দুপচাঁচিয়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। জানা গেছে, এলাকার বেশ কিছু বিদ্যানুরাগী বিশেষ করে বাবু গুরুচরণ কুন্ডুর উদ্যোগে ও স্থানীয় চৌধুরী পরিবারের প্রচেষ্টায় ১৯২৩ সালে দুপচাঁচিয়া হাই স্কুল প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্কুলটি বিদ্যাদানে সুনামধন্য হয়ে উঠে। ১৯৩৭ সালে বিশ্বকবী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্কুলটির উপর গুরুত্ব দিয়ে একটি আশীর্বাদ বাণী লিখে দেন। বাণীটি ছিল “দেশে জ্ঞানের অভিষেচন কার্যে দুপচাঁচিয়া হাই স্কুল উন্নতম কেন্দ্র রূপে যে সাধনায় প্রবৃত্ত তাহাতে তাহার সফলতা আমি কামনা করি”। কবিগুরু ১৯৩৭ সালের ২৭ জুলাই তৎকালীন প্রধান শিক্ষকের করকমলে দুপচাঁচিয়া হাই স্কুলের জন্য উক্ত আশীর্বাদ বাণীটি তুলে দেন। কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেই সময় কৃতি ছাত্র বাবু রমেন্দ্র নাথ পোদ্দার দুপচাঁচিয়া হাই স্কুল থেকে মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিল। পরবর্তীতে তিনি কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৬ সালে এই স্কুলটি পাইলট স্কিমে গড়ায়। এর নাম তখন থেকে দুপচাঁচিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিচিতি লাভ করে। ২০১২ সালে বিদ্যালয়টি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে এই মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ ৮ জন শিক্ষক/শিক্ষিকা ও ২ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৭৩৩ জন। বিদ্যালয়ে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ প্রধান শিক্ষক ও হেডক্লার্কসহ শিক্ষকের প্রায় ২০টি পদ শূন্য রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে সরকারি ভাবে ২১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একাডেমিক ভবন ও ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে প্রায় ১ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মডেল একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়টি বর্তমানে শিক্ষক সমস্যা ছাড়াও মাঠের সমস্যাটি একটি বড় সমস্যা। বিদ্যালয়ের মডেল ভবনের সামনে মাঠে আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। জানা গেছে, তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহেদ ফকির স্থানীয় চক-সুখানগাড়ী গ্রামের জনৈক ইয়াকুব আলী নামক এক ব্যক্তির কাছে বিদ্যালয়ের মাঠ ও বিদ্যালয়ের সামনের অর্ধভরাট পুকুর পর্ত্তন দেন। মডেল একাডেমিক সামনের মাঠে চলতি বছরে আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়। চারাগুলো বড় হয়েছে। ফলে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সকল প্রকার খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। সেই সাথে বিদ্যালয়ের শুরুর পূর্বে মাঠের অভাবে ছাত্রছাত্রীদের অ্যাসেম্পলি বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সদ্য যোগদানকৃত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবিএম নুরুল ইসলাম খান হিরু “দৈনিক ইনকিলাব”-কে জানান, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশীর্বাদ ধন্য এই বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবং সুনাম বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহেদ ফকির ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মডেল একাডেমিক ভবনের সামনে নিচু মাঠসহ অর্ধভরাটকৃত পুকুরটি পত্তন দিয়েছেন। ইতোপূর্বে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে একাডেমিক ভবনের মাঠটি মাটি ভরাটের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এ লক্ষে বিদ্যালয়ের নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যদের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। বিদ্যালয়ের পুরাতন মাটির ভবনটি ভেঙে ওই মাটি থেকে মাটি ভরাটের জন্য ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা তা পুরোপুরি ভরাট করতে না পারার কারণে তা নিচু থাকায় পত্তন গ্রহণকারী ব্যক্তি এ বছরেও ওই মাঠে ধানের চারা রোপণ করেছে। এতে ছাত্রছাত্রীর কিছুটা সমস্যা হলেও আগামীতে এ পত্তন বাতিল করে মাঠ ভরাটের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের খেলাধুলার উপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন