আশাশুনি (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা
আশাশুনি উপজেলার সকল ইউনিয়নে মাছের ঘের, আমন ফসলের বীজতলা ও রোপণকৃত ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি জলমগ্ন হওয়ায় জনজীবনে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক স্থানে পাউবো বেড়িবাঁধে ফাটল লেগেছে, তবে দুটি পয়েন্টে বাঁধের অবস্থা মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছিল বেশ আগে থেকে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে একাটানা প্রবল ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হওয়ায় উপজেলার সকল ইউনিয়নের মৎস্য ঘের ও আমন ধানের বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। গত বুধবার সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়ে উঠে। ফলে সকল ইউনিয়নে বিশেষ করে বুধহাটা, আশাশুনি, শ্রীউলা, আনুলিয়া, প্রতাপনগর, খাজরা, কাদাকাটি, কুল্যা ও বড়দল ইউনিয়নে কমপক্ষে ৫/৬ হাজার কাচা ঘরবাড়ি পানিতে নিমজ্জিত বা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এসব স্থানের বাসিন্দারা চরম বিপাকে রয়েছে। বুধহাটা, আশাশুনি, বড়দল, কুল্যা, কাদাকাটি, শ্রীউলা, খাজরা, শোভানলী ইউনিয়নের চাষিরা তাদের আমন ধান চাষের জন্য তৈরিকৃত বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় মুষড়ে পড়েছেন। দুর্মূল্যের বাজারে হাজার হাজার টাকা ব্যয়ে তৈরিকৃত বীজতলা নষ্ট হওয়ার উপক্রমে তারা ধান চাষ নিয়ে সংশয়গ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেক চাষি ইতোমধ্যে ধান রোয়ার কাজও করেছেন। যা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পচে নষ্ট হতে পারে ভেবে হতাশ হয়ে পড়েছেন। উপজেলার সকল ইউনিয়নে হাজার হাজার একর মৎস্য ঘের প্রবল বৃষ্টিপাতে একাকার হয়ে যাওয়ায় মৎস্য চাষিরা চরম বিপাকে পড়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন খালবিলে জাল নিয়ে সাধারণ মানুষকে মাছ ধরার লড়াইয়ে নামতে দেখা গেছে। কেউ কেউ ঘেরের মধ্যে সাবু দানা জালিয়ে, চিড়া, চিনি ঢেলে মাছ ধরে রাখার প্রয়াস চালাচ্ছেন। এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার সকালে কাকবাসিয়া ও আশাশুনির দয়ারঘাট-জেলেখালী বেড়িবাঁধে ফাটল ধরলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কাকবাসিয়া বাঁধ উপচে ও ধস নেমে ভিতরে পানি ঢুকতে থাকলে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটনের নেতৃত্বে শত শত মানুষ বাঁধ রক্ষায় নেমে আসে। বাঁধে বাঁশ, ডাল-পাতা, মাটির বস্তা ও মাটি ফেলে রক্ষার কাজ করা হয়। দয়ারঘাটে বাঁধের অবস্থাও খুবই ভয়াবহ। সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলনের নেতৃত্বে বাঁধ রক্ষায় কাজ চলছে। বাঁশের পাইলিং, বস্তায় মাটি ভরে ফেলাসহ বাঁধ রক্ষার কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য কাজ করা হচ্ছে। উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুষমা সুলতানাসহ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা ঘটনাস্থান পরিদর্শন ও সমস্যা মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন