মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপ সম্পাদকীয়

ব্যাচেলরদের পাশে দাঁড়ান

প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মেহেদী হাসান পলাশ
কক্সবাজার থেকে একটি বেসরকারি কোম্পানীর চাকরিতে যোগদান করতে ঢাকায় এসেছেন মোহাম্মদ ইব্রাহীম। মতিঝিলে অফিস। অচেনা শহর ঢাকায় কোথায় থাকবেন সেটাই ছিল একমাত্র দুশ্চিন্তা ঢাকা আসার আগে। গ্রামের বড়ভাই গুলিস্তানে একটি কোম্পানীতে চাকরি করেন। থাকেন যাত্রাবাড়ীতে মেসে। তার সাথে কথা বলে তার ভরসায় ঢাকায় এসেছেন। আগামী মাসে তার মেসে একটি সিট খালি হবে। সেই সিটে তিনি গ্রামের ছেলে ইব্রাহীমকে তোলার আশ্বাস দিয়েছেন। ভাঙা মাসের বাকি কদিন তার সিটেই ডাবলিং করে রাখবেন তাকে। সেই ভরসায় ঢাকায় এসেছেন ইব্রাহীম। কিন্তু ঢাকায় এসে যাত্রাবাড়ীতে বড়ভাইয়ের মেসে উঠেই বিপত্তিতে পড়তে হলো তাকে। এই মেসের নিয়ম, মেম্বারদের স্যান্ডেল/জুতা রুমের বাইরে রাখতে হবে। বাড়িওয়ালা বাড়ির ভেতরে/বাইরে যাওয়া-আসার সময় স্যান্ডেল গোনেন। এদিনও তিনি জুতা গুনে এক জোড়া বেশী দেখে রাতেই মেসে গিয়ে হাজির। তার এককথা, অতিথি তিনি ম্যাচে এলাও করবেন না। ম্যাচের সকল সদস্য মিলে ইব্রাহীমের অসহায়ত্বের কথা বোঝালেন কিন্তু বাড়িওয়ালার এক জবান, আগে হলে তিনি বিবেচনা করতেন। কিন্তু এখন কোনোভাবেই না। ইব্রাহীমের বড়ভাই বাড়িওয়ালাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন এ বলে যে, আগামী মাসে যে সিট খালি হবে ইব্রাহীম সেই সিটেই উঠবে। কিন্তু বাড়িওয়ালার একই কথা, সিট খালি হলে খালি থাকবে, আমার ভাড়া দরকার নেই। আমি নতুন মেস মেম্বার তুলবো না। অবশেষে সবাই বুঝিয়ে একরাতের জন্য ইব্রাহীমকে ওই মেসে থাকার ব্যবস্থা করলেন। পরের দিন সকাল থেকে ইব্রাহীমের প্রধান কাজ শুরু হয়, ঢাকায় মেসে সিট খোঁজা। বাড়িওয়ালাদের নানা প্রশ্ন, নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেলেও ভাঙা মাসের ১৩ দিনে মেস খুঁজে পাননি ইব্রাহীম। অগত্যা অফিসে বসের শরণাপন্ন হলে বস দয়াপরবশ হয়ে এক মাসের জন্য ইব্রাহীমকে অফিসেই থাকার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তিনি জানে না, আগামী মাসে ঢাকায় কোনো একটি সিটের ব্যবস্থা সে করতে পারবেন কিনা?
গত ১ জুলাই রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা, শোলাকিয়া ঈদগাহে হামলার চেষ্টার পর থেকে সারাদেশে ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দিতে হিসাব-নিকাশ শুরু করে দিয়েছিলেন মালিকরা। সবশেষে কল্যাণপুরে একটি বাড়িতে পরিচালিত অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হওয়ার পর অবিবাহিত তরুণ-যুবকদের বাসা ভাড়া দেয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বাড়ির মালিকরা। রাজধানীর কয়েকটি অঞ্চলের বাড়ি মালিকদের সমিতি থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়েছে, প্রয়োজনে বাসা খালি থাকবে তাও আর একজন ব্যাচেলর ভাড়াটিয়া চান না তারা। মিরপুর-১০ এলাকার বাড়ির মালিক সোবহান মিয়া বললেন ‘বাড়ি ভাড়া দিয়ে যদি গোয়েন্দার মতো নজরদারি করতে হয়, শান্তিতে ঘুমাতেও না পারি তবে এই টাকা দিয়ে কী হবে? এ ঝক্কি কে পোহাতে চায় বলুন?’
রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় জঙ্গিদের ভাড়া দেয়া বাড়ির মালিক নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী উপাচার্য অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহসানসহ তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। শেওড়াপাড়ায় জঙ্গিদের বাসা ভাড়া দেয়া মালিক নুরুল ইসলামও গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঝিনাইদহে জঙ্গিদের ভাড়া নেয়া বাড়ির মালিকও গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে গেছেন। কল্যাণপুরে অভিযান চালানো বাড়ির মালিকের ছেলেকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাসা ভাড়া দিয়ে এভাবে গ্রেপ্তার হওয়ার আতঙ্কে বাড়ির মালিকরা নিজেদের বাঁচিয়ে চলার পথ বেছে নিয়েছেন। আর বিপাকে পড়েছেন ব্যাচেলররা।
এমনিতেই ব্যাচেলরদের জীবনে নানা প্রকার শঙ্কা ও দুর্ভোগ রয়েছে। বাসা ভাড়া পেতে সমস্যা তো ছিলই। তার ওপর বেলকনিতে দাঁড়ানো যাবে না, ছাদে যাওয়া যাবে না, রাত করে বাসায় ফেরা যাবে না, জোরে গান শোনা যাবে না, অনেক জায়গায় জানালা খোলা ও জানালার পাশে দাঁড়ানোও নিষেধ থাকে। ব্যাচেলর জীবনের সবেচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হচ্ছে সকল ব্যাচেলরই যখন ব্যাচেলর জীবন পার করে সংসার জীবনে প্রবেশ করেন তখন ব্যাচেলরদের প্রতি একই মনোভাব প্রকাশ করে থাকেন। সংগত কারণেই প্রশ্ন ওঠে ব্যাচেলর কাকে বলে? আভিধানিকভাবে ইংরেজি শব্দ ব্যাচেলর এর অর্থ হচ্ছে অবিবাহিত পুরুষ, কুমার, স্নাতক। তবে আমরা যে ব্যাচেলর নিয়ে আলোচনা করছি, তাদের সাথে বিবাহ সম্পর্ক যুক্ত নয়। আমরা যে ব্যাচেলর নিয়ে আলোচনা করছি তারা হচ্ছেন বিবাহিত বা অবিবাহিত পুরুষ অথবা নারী যারা পড়াশোনা, চাকরি ইত্যাদি কারণে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা বা সংঘবদ্ধ হয়ে বসবাস করছেন। বিশ্বের যেসব দেশে বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড ও লিভ টুগেদারের কালচার রয়েছে সেসব দেশে হয়তো ব্যাচেলরের সংজ্ঞাটা অন্যরকম।
বাংলাদেশের শিক্ষিত মানুষের প্রায় শতকরা ৮০ ভাগেরই জীবনের কোনো না কোনো সময় ব্যাচেলর জীবনের অভিজ্ঞতার স্বাদ গ্রহণ করতে হয়েছে। এমনকি আজ যে সকল কর্তা ব্যাচেলরদের জন্য নানা বিধিনিষেধের দেয়াল তুলছেন তাদের অনেকেও জীবনের কোনো না কোনো সময় ব্যাচেলর জীবনযাপন করেছেন। ব্যাচেলর জীবন মানে আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে মশারীর দুই কোণা চিরকালের জন্য না খোলা কিংবা দড়ি লাগানোর আলসেমিতে কম্পিউটারের মাউস দিয়ে মশারী বাঁধা, চায়ের কাপ না থাকায় বড়ি স্প্রের ঢাকনাকে চায়ের কাপ বানিয়ে নেয়া, পানির গ্লাসকে এসট্রে বানিয়ে ব্যবহার, কলব্রিজ ও ম্যারিজকে জাতীয় খেলা বানানোর । কবির ভাষায়-
‘ছোট্ট দোকান, সরু গলি।
আঁকা-বাঁকা রাস্তা।
চা, কলা, পাউরুটিতে
সকালের নাস্তা।
ছোট জানালা, কাঠের চকি,
টিনের চালা, অন্ধকার ঘর।
এই ঘরেই বসত করে
তিনজন ব্যাচেলর’।
ব্যাচেলরদের বিরুদ্ধে বা মেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ জঙ্গিরা মেস ভাড়া করে বসবাস করে। তাই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মেসে অভিযান পরিচালনা করা, বিশেষ করে মাঝ রাতে অভিযান পরিচালনা করা, মেসের মালিক বা বাড়িওয়ালাকে ধরে নিয়ে যাওয়া, আটক করা, থানায় ডাকা প্রভৃতি কারণে বাড়িওয়ালারা এখন মেস ভাড়া দিতে চাইছেন না। তাহলে সারাদেশের লাখ লাখ ব্যাচেলর যাবেন কোথায়? সরকার ইচ্ছা করলেই ব্যাচেলর জীবনযাপন তুলে দিতে পারবে না। সামাজিক গণমাধ্যমে অবিবাহিত ব্যাচেলররা বাড়িওয়ালাদের প্রতি দাবী তুলেছেন, হয় মেস ভাড়া দিন না হয় মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ব্যাচেলর জীবনের অবসান ঘটান। কিন্তু বাংলাদেশে ব্যাচেলর মানে তো শুধু অবিবাহিত ব্যাচেলর নয়। এখানে কোনো ছেলে যদি বাবার সাথে, কিংবা কোনো মেয়ে যদি মায়ের সাথেও বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে তবে তারাও ব্যাচেলর। তাহলে এই সমস্যার সমাধান কীভাবে? প্রশ্ন উঠেছে মাথাব্যথার জন্য তবে কি মাথা কেটে ফেলা একমাত্র সমাধান?
গুলশান হামলার পর আমরা দেখলাম জঙ্গিরা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। তারা মেস নয় নিজ পরিবারের সাথেই অভিজাত এলাকায় বসবাস করেন। অথচ আঙ্গুল তোলা হচ্ছে মেসের দিকে। এটা অনেকটা পিস স্কুল বন্ধ করে দেয়ার মতো। সরকার জঙ্গিবাদের অভিযোগে অর্ধশতাধিক পিস স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো জঙ্গি স্বীকার করেনি তারা পিস স্কুলের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উৎসাহিত হয়েছে। অথবা কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রমাণ হাজির করেনি যে জঙ্গিরা পিস স্কুলের ছাত্র। যে পিস টিভি বা জাকির নায়েকের সাথে সম্পর্কের সূত্র ধরে পিস স্কুল বন্ধ করা হলো সেই স্কুলগুলোর সাথে পিস টিভি বা ড. জাকির নায়েকের ন্যূনতম সম্পর্ক আছে এমন কথা শোনা যায়নি। মূলত পিস টিভির জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে পিস টিভির লোগো নকল করে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর লোকজন দেশে পিস টিভি পরিচালনা করে আসছিল। এই স্কুলগুলোর বৈশিষ্ট ছিল আধুনিকতা ও ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয়। ফলে সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মানুষ যারা সন্তানকে আধুনিক ও ইংরেজি শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে মানুষ করতে চান তারা পিস স্কুলে তাদের ভর্তি করিয়েছেন। বিস্ময়কর হলো: জঙ্গি পাওয়া গেল নর্থ সাউথ, ব্র্যাক, আইবিএতে। কিন্তু সেসব প্রতিষ্ঠান ঠিক থাকলো বন্ধ করে দেয়া হলো পিস স্কুল। অথচ সরকার নিজেই ধর্মীয় শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ের কথা বলছে এবং সেই আলোকে মাদ্রাসা শিক্ষার কারিকুলামে নানা পরিবর্তন এনেছে।
সন্ত্রাসী দমনের নামে, সন্ত্রাসী খোঁজার নামে পুলিশ মেসগুলোর ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এমনকি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মহিলা হলগুলোতে রাতেরবেলায় পুলিশ প্রবেশ করছে। রাতে মহিলা হলগুলোতে মেয়েরা স্বাভাবিকভাবে একটু ক্যাজুয়াল ড্রেসে থাকে। সেখানে হঠাৎ করে পুলিশ প্রবেশ তাদের বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি করছে। অভিযোগ রয়েছে, সন্ত্রাসী খোঁজার নামে পুলিশ এসব হল থেকে নামাজি ও পর্দানসীন মেয়েদের ধরে থানায় নিয়ে এসে হয়রানি করছে। একইভাবে বিভিন্ন মেসে নামাজি, দাড়িওয়ালা ও মাদ্রাসার ছাত্র অধিক মাত্রায় হয়রানির শিকার হচ্ছে। সাধারণ মেস মেম্বারদের থেকে এই শ্রেণীর মেস মেম্বারদের মেসে সিট পেতে অধিকতর হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এই ভোগান্তিকে ধর্মীয় ডিসক্রিমিনেশন না বলে উপায় নেই। বাস্তবতার নিরিখে আমরা যদি পর্যবেক্ষণ করি, দেখতে পারোসন্ত্রাসবাদের অজুহাতে সারা দেশে ইসলাম ধর্মপ্রাণ ও ধর্মভীরু মানুষ এবং ধর্মীয় পোশাক ও দাড়ি-টুপিধারী মানুষকে সন্দেহের তালিকায় বিশেষভাবে দেখা হচ্ছেÑ গণমাধ্যমগুলোতে সেভাবেই প্রচারণা চালানো হচ্ছে ফলে এই শ্রেণীর মানুষ বিশেষভাবে ভোগান্তি ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, মেসগুলোতে তল্লাশির নামে পুলিশের এই বিশেষ নজরদারি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে অচিরেই হয়তো বাড়িওয়ালারা মেস তুলে দিতে বাধ্য হবেন।
সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, এখন থেকে কোন বাড়িতে ব্যাচেলর ভাড়া দিতে হলে তাদের প্রত্যেকের পরিচয়পত্রসহ সংশ্লিষ্ট থানায় ফরম জমা দিতে হবে। এরপর পুলিশ নির্ধারণ করবে কারা মেসে থাকতে পারবে কারা পারবে না। তবে ডিএমপির উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান বলেছেন ভিন্ন কথা। তার মতে, ‘কে ব্যাচেলর কে বিবাহিত সেটা বড় কথা নয়, ভাড়াটিয়া ভাড়াটিয়াই। ভাড়াটিয়াদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহে রাখাটাই হলো মূল বিষয়। তবে বাড়ির মালিক কাকে ভাড়া দেবেন আর কাকে দেবেন না এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা শুধু সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।’ বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কারা, কোন শ্রেণী থেকে আসছে বিষয়গুলো পুলিশের অজানা নয়। তবু সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার নামে সন্ত্রাসবাদের আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশের ১৬ কোটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবনকে নিয়ে যা করা হচ্ছে তা সাংবিধানিকভাবে নাগরিকদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা সংরক্ষণের যে অঙ্গীকার করা হয়েছে তা চরমভাবে আক্রান্ত হয়েছে। এদিকে গত ১১ আগস্ট ঢাকার রাস্তায় বালিশ নিয়ে প্রতীকী অবস্থান করেছেন একদল অবিবাহিত নারী-পুরুষ। ‘ভাড়াটিয়া পরিষদ’-এর ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালিত হয়। সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পর ঢাকায় অবিবাহিতদের বাসা ভাড়া দিতে অনীহা ও বাড়তি ভাড়া নেয়াসহ নানা হয়রানির প্রতিবাদে এই কর্মসূচি বলে জানান আয়োজকরা। সংগঠনের সভাপতি বাহারানে সুলতান বাহার অবিবাহিতদের বাড়ি ভাড়ায় ঝামেলা নিরসনসহ চার দফা দাবি আদায়ে আগামী ২৩ আগস্ট বেলা ১১টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়ার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। দাবিগুলো হলোঃ শহরে বসবাসরত ‘ব্যাচেলর’ ভাড়াটিয়াদের আবাসন নিশ্চিত করা, সরকারিভাবে আবাসনের ব্যবস্থা করা, ‘ব্যাচেলরদের’ হয়রানি এবং বাড়ির মালিকদের ভাড়া বাড়িয়ে অর্থনৈতিক নির্যাতন ও উচ্ছেদ বন্ধ করা। সংগঠনের সভাপতি বাহারানে সুলতান বাহার বলেন, আমরা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। কিন্তু জঙ্গির নামে বাসাবাড়ির মালিকরা আজ ব্যাচেলরদের ওপর যেভাবে নির্যাতন করছে তা মেনে নেয়া যায় না। ভাড়াটিয়া পরিষদের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ব্যাচেলরদের বাড়ি ভাড়া না দিলে, এই সুযোগের শতভাগ ব্যবহার করবে জঙ্গিরা। তারা বিভিন্ন মাধ্যমে এই ব্যাচেলরদের আবাসনের ব্যবস্থা করে দিয়ে তাদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করবে। তখন পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হবে। তাই অনতিবিলম্বে ব্যাচেলর ভাড়া না দেয়ার যে আওয়াজ উঠেছে তার সমাধানে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ কথা বলাই বাহুল্য যে, ব্যাচেলর সমস্যা নিরসনে সরকারকে আশু পদক্ষেপ হিসাবে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এই নীতিমালা প্রণয়নে কোনো ধরনের বৈষম্য যেন পরিলক্ষিত না হয় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। একই সাথে নাগরিক জীবনের স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা যেন লঙ্ঘিত না হয় সে দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। একই সাথে এই নীতিমালা যেন বাড়িওয়ালাদের অহেতুক হয়রানি ও ভীতি দূর করতে সক্ষম হয় সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
Email: palash74@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
ইমরান ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১:১৭ এএম says : 0
আমাদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Total Reply(0)
সোলায়মান ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১:৩৫ এএম says : 0
এটা ভুলে গেলে চলবেনা যে, এই ব্যাচেলাররাই কিছুদিন পর দেশ ও জাতির প্রত্যেকটি সেক্টরে নেতৃত্ব দিবে।
Total Reply(0)
তুহিন ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১২:১৬ পিএম says : 0
বিষয়টি সরকারের অত্যান্ত গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত
Total Reply(0)
সাজ্জাদ ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১২:১৭ পিএম says : 0
মেসগুলোতে পুলিশের অযথা রেড দেয়া বন্ধ করা উচিত।
Total Reply(0)
তুষার ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ৩:৫৬ পিএম says : 0
বাড়িওয়ালাদের বলছি আপনারা কি ব্যচেলার ছিলেন না?
Total Reply(0)
Ashique ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ৩:৫৭ পিএম says : 0
avabe cholte thakle ora kharap dike jete pare
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন