নাটোরের লালপুরের বাজারগুলোতে আকাশ ছোঁয়া সবজির দাম। শীতকালীন আগাম সবজি উঠতে শুরু করলেও বেশি দামের সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। একদিকে করোনার প্রভাবে কর্মহীন মানুষ অন্যদিকে কাঁচাবাজারের লাগামহীন মূল্যে নিম্ন মধ্যম আয়ের মানুষের জীবন এখন বিপর্যস্ত। সবজি কেনা এখন দূরহ ব্যাপার। সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি মৌসুমে দফায় দফায় অতিবৃষ্টির কারণে এই অঞ্চলের চাষকৃত শীতকালীন আগাম সবজি বিনষ্ট হওয়ায় বাজারগুলোতে এখন জেলার বাইরে থেকে আসছে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। তাই এসব সবজির দাম আকাশ ছোঁয়া।
ভোক্তরা বলছেন, বাজারে প্রশাসনের সুনিদিষ্ট মনিটরিং না থাকায় আকাশ ছোঁয়া দামে সবজি বিক্রয় করছেন দোকানীরা। বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিং এর দাবি জানান তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, অতিবৃষ্টির কারণে সবজির বাজারে মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু গেল দু’সপ্তাহ ধরে সবজির দাম লাগামহীন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে প্রতিটি সবজি কেজি প্রতি দুই থেকে চারগুণ দামে কিনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
গতকাল উপজেলার বিভিন্ন বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, আলু ৫০ টাকা, ছোট করলা ১২০ টাকা, বড় করলা ১০০ টাকা, মূলা ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, কচু ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, ধনে পাতা ৩০০ টাকা, লতি ৪০ টাকা, ফুলকপি ১০০ টাকা, ধুন্ধল ৪০ টাকা, শিম ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রয় হচ্ছে। চাল কুমড়া প্রতি পিস ২৫-৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচকলা প্রতি হালি ২০-২৫ টাকা, দেশি লেবু ২০ টাকা হালি করে বিক্রি হচ্ছে। আবার চালের দামও বেড়েছে প্রকারভেদে কেজি প্রতি তিন থেকে চার টাকা।
সবজি কিনতে আসা শান্ত আলী জানান, বাজারে শীতকালীন সবজি সরবরাহ থাকলেও সেগুলোর দাম চারগুণ বেশি। আগে এক কেজি কিনলে এখন কিনতে হচ্ছে এক পোয়া। মজনু আলী নামের এক ক্রেতা জানান, নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের মানুষের পক্ষে এখন সবজি কিনে খাওয়া স্বপ্নের ব্যাপার। সবজির বাজারে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আর কাঁচামরিচ কিনে খাওয়ার কথা যেন চিন্তাই করা যায় না। তাই ডিম ডালে দিন চলে যাচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা সামরুল ও ফিরোজ আলী জানান, এবার অতিবৃষ্টির কারণে অধিকাংশ সবজির আবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় জেলার বাইরে থেকে বেশি দামে সবজি কিনে আনতে হচ্ছে। তাই দাম একটু বেশি।
লালপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার লালপুর উপজেলায় খরিপ-২ মৌসুমে ৭৬৫ ও শীতকালীন ৩৮৫ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছিল। অতিবৃৃষ্টির কারণে ৩০ হেক্টর জমির সবজি নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৯ শ’ ২০ জন কৃষক।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুুল বানীন দ্যুতি জানান, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে দ্রæত বাজার মনিটরিং করবে উপজেলা প্রশাসন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন