এস কে এম নুর হোসেন, পটিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে
চট্টগ্রামের পটিয়া সরকারি কলেজের দক্ষিণ পাশের পাহাড়ী অঞ্চল থেকে প্রবাহিত পৌর সদর খালটি এখন অবৈধ দখল চলছে। এ খালের উপর অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে প্রভাবশালীরা সরকারি খাল দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ব্রিটিশ আমল থেকে সীট ও নকশা অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির পটিয়া পৌরসভার মাঝখানে এ খাল অবস্থিত। যুগের পরিবর্তনে লোকসংখ্যা বেশি হওয়ায় বর্তমানে খালটি দখল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংকোচিত হয়ে আসছে। এতে করে ৩ কিলোমিটার খালটি পটিয়া পৌরসভার ৪টি ওয়ার্ড এবং হাইদাগাঁও ইউনিয়ন ও শ্রীমাই পাহাড়ের পানি এ খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ইন্দ্রপুল খালে গড়িয়ে পড়ত। খাল দখলের ফলে দিন দিন খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ার ধরুন এখন পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পটিয়া বাস স্টেশন এলাকা থেকে সবজার পাড়ার মোড় পর্যন্ত এলাকা ঘুরে এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে খালের আশেপাশের এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। ৩ কিলোমিটার জুড়ে এ খালের উপর মানুষের যাতায়াতের জন্য রেল ও মহাসড়কের ২টি ব্রীজ সহ আনুমানিক ৩০/৩৫টি ছোট বড় কালভার্ট রয়েছে। হাজীর পাড়া, পটিয়া স্কুল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, নাপিত পাড়া, বাড়ই পাড়া, কাঠাল পাড়া মহাসড়কের ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা সহ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে খালটি দখল করে রেখেছে। পৌরবাসীর প্রত্যাশা বর্তমান মেয়র অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং খালটি সংস্কার করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক পৌরবাসীকে জলবদ্ধতা থেকে রক্ষা করবে। প্রায় দুই বছর আগে পটিয়া কলেজের দক্ষিণ পাশে এ খালের উপর দিয়ে একটি কাঁচাবাজারের দোকান গড়ে উঠে। এই দোকানের দেখাদেখিতে আরও কিছু অবৈধ স্থাপনা সৃষ্টি হয়। অবৈধ স্থাপনায় গড়ে উঠা মুরগী দোকানের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, জায়গাটি দোকান মালিকের। এক সময় প্রাচীন এ খালে স্থানীয় লোকজন বড়শী ও জাল ফেলে মাছ ধরলেও বর্তমানে খালটি প্রভাবশালীদের অবৈধ স্থাপনার মাধ্যমে দখলে চলে যাওয়ায় আগামী বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধিকতাসহ বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, পুকুর ডুবে কোটি টাকার মৎস্য পোনা ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ১৯৯০ সালে পটিয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ খাল সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা ও পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘খালের উপর এভাবে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হলেও বেশ কয়েকবার পৌর মেয়রকে তাগিদ দেয়ার পরও তিনি কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে। এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা না হলে অচিরেই খালটি ভরাট হয়ে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে।’ স্থানীয় বাসিন্দা ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগ সদস্য আবু ছালেহ মুহাম্মদ শাহরিয়ার শাহারু জানান, ‘এ খালের পানি দিয়ে চাষাবাদের জমি চাষ হতো। কিন্তু বর্তমানে খাল দখল করে যেভাবে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে এতে করে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া পৌরসভার মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমি শুষ্ক মওসুমে অবৈধ স্থাপনার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন