এবার যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে ঘরে ঢুকে অস্ত্রেরমুখে গৃহবধূকে (২৯) ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে। নোয়াখালীর চাটখিলে এমন ঘৃণ্য ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমান শরীফ (৩২) কে নামে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গাইবান্ধায় মুখে গামছা বেঁধে ভাতিজিকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাঙ্গাইলের গোপালপুরে মুখ বেঁধে এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া বাগেরহাটের কিশোরী ও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে, ইন্দুরকানীতে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে একজনসহ সারা দেশে ধর্ষণ মামলায় ৪ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নোয়াখালী : চাটখিল উপজেলার নোয়খলা ইউনিয়নে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে (২৯) ঘরে ঢুকে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণ করার ঘটনায় মুজিবুল রহমান শরীফকে (৩২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে নির্যাতিতা গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শরীফকে গ্রেফতার করে। এর আগে ভোর ৫টার দিকে নোয়াখলা ১নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেফতারকৃত শরীফ একই এলাকার ওয়াতির বাড়ীর রফিকুল ইসলাম খোকনের ছেলে। ধর্ষক শরীফ চাটখিল উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়ন যুবলীগের দীর্ঘদিনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি। সে এলাকার একজন চিহিৃত সন্ত্রাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই নারী তার শশুর বাড়ীতে দু’ছেলে-মেয়ে নিয়ে নিজ কক্ষে ঘুমিয়েছিলেন। বুধবার ভোরে শরীফ তার ঘরে ঢুকে তার হাত-মুখ চেপে ধরে ছোরা উচিঁয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে। এসময় ধর্ষিতার ছেলে (৪) ও মেয়ে (১০) ঘুম ভেঙে গেলে ধর্ষক শরীফ তাদেরকেও হত্যার হুমকি দিয়ে ঘরের অন্য একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। এরপর ওই নারীকে বিবস্ত্র করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে শরীফ। ধর্ষণের সময় তার মুখাবয়বে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। ধর্ষণের পর নির্যাতিতা নারীকে বিবস্ত্র ও উলঙ্গ করে নিজের ব্যবহৃত মোবাইল দিয়ে ছবি ও ভিডিও চিত্র ধারণ করে নিয়ে যায় শরীফ। ঘটনায় দুপুরে ধর্ষিতা প্রবাসীর স্ত্রী তার দু’জন নিকট আত্মীয়কে নিয়ে চাটখিল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। চাটখিল থানার ওসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গৃহবধূর অভিযোগের ভিত্তিতে সন্ত্রাসী শরীফকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই গৃহবধূকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ও ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত শরীফের বিরুদ্ধে চাটখিল থানায় অস্ত্র, ডাকাতির প্রস্তুতি, মারামরিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের ঘটনায় ৮টি মামলা রয়েছে।
গাইবান্ধা : গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) রাতে সদর উপজেলার খামার টেংগরজানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত লিয়ন মিয়া ওই গ্রামের সাহেব মিয়ার ছেলে। তিনি নির্যাতিতা কিশোরীর সম্পর্কে চাচা হন। ওই শিক্ষার্থীর স্বজনরা অভিযোগ করেন, প্রতিবেশী লিয়ন মিয়া সম্পর্কে চাচা হলেও দীর্ঘদিন থেকে মেয়েটিকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। লিয়নের পরিবারকে একাধিকবার এ বিষয়টি জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
গত মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় মেয়েটি পাশের বাড়িতে টেলিভিশন দেখতে যায়। রাত ৮টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে বের হলে ওৎ পেতে থাকা লিয়ন তার মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী মামুন মিয়ার একটি নির্মাণাধীন ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটি চিৎকার করতে চাইলে তার মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলে। ধর্ষণের পর এ ঘটনা কাউকে না জানাতে মেয়েটিকে ভয়ভীতি ও জীবননাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় লিয়ন। পরে আহত অবস্থায় মেয়েটিকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার বলেন, লিয়নকে ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ১৪ বছরের কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে বিল্লাল হোসেন নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল পুলিশ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নরসিংহপুর ইউনিয়নের খাইরগাঁও গ্রামের ১৪ বছরের কিশোরী গত ১৩ অক্টোবর রাতে প্রকৃতির ডাকে ঘরের বাইরে বেরুলে তিন বখাটে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এই ঘটনায় মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। রাতেই অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়। ধর্ষকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের আত্মীয়-স্বজন কিশোরীর অভিভাবকদের মামলা করতে দেয়নি। মীমাংসা করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করতে থাকে। ২০ অক্টোবর মেয়েটি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আশপাশের মানুষসহ গ্রামবাসী এবং পুলিশও ঘটনা জানতে পারে। পরে থানার ওসি মো. নাজির আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একই গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে বিল্লাল হোসেনকে আটক করে।
টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের গোপালপুরে কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে উপজেলার কাগুজিআটা গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে শফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে, আব্দুর রশিদের ছেলে এনামুল, মুনসব আলীর ছেলে জালাল, আব্দুল খালেক, শুক্কুর আলীর ছেলে আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নাং- ৫।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাগুজিআটা গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও এনামুল রাস্তায় যাওয়া আসার পথে প্রায়ই ওই কলেজ ছাত্রীকে উত্যাক্ত করতো। বাবা বেঁচে না থাকায় সে নিজে সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় মোহনপুর বাজার থেকে বাজার করে বাড়ি ফেরার পথে আগে থেকে উৎপেতে থাকা শফিকুল, এনামুল, জালাল, খালেক, আলতাব হোসেন তার মুখ বেঁধে নৌকায় তুলে শফিকুলের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে একটি টিনের ঘরে আটকে রেখে তারা ৫ জনে মিলে রাতভর ধর্ষণ করে। পরে ভোরে নৌকাযোগে মোহনপুর ঘাটে এসে ফেলে রেখে যায় তাকে। এ বিষয়ে গোপালপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মোশারফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) : পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে দীর্ঘদিন ধরে এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগে জাহাঙ্গীর সিকদার (৪৫) নামের এক জেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে ইন্দুরকানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দাখিল করেন ওই কিশোরীর বাবা। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলার পাড়েরহাট আবাসনের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর সিকদারকে আটক করা হয়। জাহাঙ্গীর শিকদারের দুই বিয়ে। তিন সন্তানের জনক জাহাঙ্গীরের দুই স্ত্রী রয়েছে। সে পেশায় জেলে। তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে আবাসন এলাকায়। ইন্দুরকানী থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির জানান, অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ফকিরহাট (বাগেরহাট) : গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই বাগেরহাটের ফকিরহাট মডেল থানায় দু‘জনকে আসামি করে আরও একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে এক কিশোরী (১৪)। আসামিরা হলেন উপজেলার ছোট বাহিরদিয়া এলাকার বাবু খাঁ’র জামায় মো. মাছুম (৪০)ও ছেলে মকবুল (৪০)। ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাইদ মো. খায়রুল আনাম জানান, উক্ত মামলায় এখনও কোন আসামিকে গ্রেফতার হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন