ভাঙ্গায় একটি গ্রামে ১ যুগ ধরে চলছে অব্যাহত সহিংসতা। যার ফলে এলাকা পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌর শহরের গজারিয়া গ্রামটির লোকজন দীর্ঘদিন ধরে ২ দলে বিভক্ত হয়ে একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। গত কয়েকদিন আগে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন বিকেলে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে নারী, পুরুষ, শিশুসহ অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের ভাঙ্গা ও ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে আটক এবং গ্রামজুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই গ্রামের পৌরসভার সাবেক কমিশনার বাচ্চু মাতুব্বরের লোকজনের সঙ্গে একই গ্রামের আ.লীগ নেতা রাজ্জাক ফকিরের লোকজনের কথা কাটাকাটি হয়। পরদিন সকালে এরই জের ধরে বাচ্চু মাতুব্বর প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালায়। এতে উভয় গ্রæপের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ বিষয়ে রাজ্জাক ফকিরের পক্ষ হতে বাচ্চুর মাতুব্বরের লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। গত রোববার বাচ্চু মাতুব্বরের লোকজন আদালত থেকে জামিনে এসেই কয়েকশত লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাজ্জাক ফকিরের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় রাজ্জাক ফকিরের লোকজন বাধা দিতে চাইলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সময় অর্ধশত বসতঘর, বিল্ডিংয়ের গ্লাস, ঘরের চালা ভেঙে বিধ্বস্ত করেছে। হামলাকারীরা ঘরের ভেতরে থাকা আসবাব-পত্র ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং স্বর্ণ, নগদ টাকা ও দামি আসবাব লুট করে নিয়ে যায়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাজ্জাক ফকিরের পক্ষের বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য নেই। রাজ্জাক ফকিরের বসবাস করা বিল্ডিংটির বাইরে এবং ভেতরের আসবাবপত্র ভেঙে চুর্ণবিচুর্ণ করে দিযেছে।
এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতিটা টিনের ঘরের চালা, টিভি, ফ্রিজ, বাথরুমের কমড, ব্রেসিং, ওয়াল সোকেজ, আলমারী, খাট, ডাইনিং টেবিল পর্যন্ত ভাঙচুর করে। প্রতিটি বাড়িতে ভাঙচুরের কারণে প্রায় কোটি টাকা সম্পদ নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। আছিয়া বেগম বলেন, ভয়ে আমাদের পুরুষরা বাড়িতে আসতে পারছে না। গ্রামে ঢুকলেই তারা আমাদের উপর হামলা করে।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ওসি মো. শফিকুর রহমান বলেন, প্রায় ১ যুগ ধরে গ্রামটির লোকজন ২ দলে বিভক্ত হয়ে আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় সংঘর্ষ চলে আসছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর বিবাদমান ২ দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ গ্রামবাসী আহত হন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে গ্রাম জুড়ে পুলিশ মোতায়েন করে ৯ জনকে আটক করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন