আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুইপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় একটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। দফায় দফায় ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের জেরে উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের দড়ি কমলপুর গ্রামে পুলিশি অভিযান ও টহল অব্যাহত আছে। আর পুলিশের আতঙ্কে গ্রামটির প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের পুরুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। গ্রামের নারীরা জানান, কয়েক বছর আগে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাবেক ইউপি সদস্য আতর আলী বিশ্বাস ও বর্তমান ইউপি সদস্য ওয়াদুদ শেখের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্ব›দ্ব শুরু হয়। এরপর থেকেই যেকোনো তুচ্ছ ঘটনায় শেখ ও বিশ্বাস গ্রুপের সমর্থকরা ঢাল, সরকি, লাঠি, দা, রাম দা,ইট-পাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পরস্পরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ মে শেখ গ্রুপের হাসান খন্দকারকে (৭০) পিটিয়ে রক্তাক্ত করে বিশ্বাস গ্রুপের আলামিন, আনোয়ারসহ ৫ জন। এ ঘটনায় থানায় শেখ গ্রুপের পক্ষে একটি মামলা হয়। এরপর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে শুক্রবার রাতে দুই গ্রুপ ওই গ্রামের ব্রিজ এলাকায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ততক্ষণে বিশ্বাস গ্রুপের সমর্থকরা শেখ গ্রুপের খন্দকার আশরাফ, তোফাজ্জেল, আশরাফ, মোফাজজ্জেল, চুন্নুর বাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর চালায়।
এ বিষয়ে শেখ গ্রুপের সমর্থক খন্দকার আশরাফের স্ত্রী বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে দুইপক্ষের উত্তেজনা চলে আসছিল। এরই জের ধরে শুক্রবার রাতে বিশ্বাস গ্রুপের লোকজন আমাদের বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং ঘরের বেড়া ভাঙচুর করে। সবসময় পুলিশ টহল দেয়ায় ভয়ে বাড়ির পুরুষেরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এরপরেও পুলিশ এসে ঝামেলা করছে। বিশ্বাস গ্রুপের সমর্থক আলামিনের স্ত্রী বলেন, যেকোনো ঘটনা ঘটলেই বিশ্বাস গ্রুপের আতর মেম্বারের দোষ হয়। প্রতিপক্ষরা এসে বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পথেঘাটে আমাদের লোকজন পেলে ওরা মারধর করে।
তিনি আরও বলেন, বাড়িতকায় কোনো পুরুষ মানুষ নাই, বাজার নাই। খাওয়া-দাওয়ায় খুব কষ্ট হচ্ছে। রাত নেই, দিন নেই, সব সময় পুলিশ আসে। বাড়ির পুরুষ মানুষকে খোঁজে। এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, কী নিয়ে দুইপক্ষ মারামারি করে,তা তারা নিজেরাই জানে না। তুচ্ছ কারণে বিশ্বাস ও শেখ গ্রুপ লাঠি, ঢাল, সরকি নিয়ে মাঠে নামে। আগের ঘটনায় শেখ গ্রুপ একটি মামলা করেছে থানায়। এরপর শুক্রবার রাতে দুই গ্রুপ মুখোমুখি হলে পুলিশ খবর পেয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে পুলিশ কাউকে অহেতুক হয়রানি করছে না বলে দাবি করেন ওসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন