মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা
চলতি বন্যায় জেলার শিবচরে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে বিস্তৃর্ণ রোপা আমনের। চরাঞ্চলের অধিকাংশ ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষক পরিবারগুলোতে চরম হতাশা বিরাজ করছে। এদিকে পদ্মা, আড়িয়াল খায় পানি কমতে থাকায় সহায়তা বাবদ দ্রুত বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণের দাবি করেছে ক্ষতিগ্রস্তরা। এদিকে কৃষকদের সহায়তার জন্য ভাসমান বীজতলাসহ বিভিন্ন ধরনের বীজতলা প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। পদ্মা নদীর চরাঞ্চলসহ উপজেলার নদী অধ্যুষিত এলাকায় চলতি বন্যায় পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়। ফসলের মাঠ প্রচ- স্রোতে ও পানিতে ডুবে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়। জেলায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল বিনষ্টের মধ্যে শুধু শিবচরেই সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর। যার অধিকাংশই পদ্মা নদীর বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল চরজানাজাত, কাঠালবাড়ি, বন্দরখোলা ও মাদবরচরের। এরমধ্যে রোপা আমন ক্ষতি হয়েছে ২৫শ’ হেক্টর, আউশ ৪শ’ ২০ হেক্টর, শাকসবজি ৫শ’ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ৬০ হেক্টর, কলা ৬২ হেক্টরসহ অন্যান্য ফসল মিলে মোট সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর ফসল বিনষ্ট হয়। এছাড়া পাট ও মেস্তা পাটেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসল হারিয়ে অধিকাংশ কৃষক চরম হতাশায় পড়েছে। পানি সরে যাওয়ার সাথে সাথে জেগে উঠছে ফসলের শূন্য মাঠ। চরাঞ্চলের কৃষকের মনে দুশ্চিন্তা-তাদের মুখে তৃপ্তি নেই। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এসে ঢাকার খামারবাড়ির কৃষিবিদরা কৃষকদের ক্ষতির বিষয়টি অবগত হয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে গেছেন। চরজানাজাতের কৃষক আঃ খালেক বলেন, ‘বন্যায় আমার ৫ বিঘার রোপা আমন তলিয়ে যাওয়ায় সর্বশান্ত হয়ে গেছি। এখন কিভাবে সারা বছর চলবো বুঝতে পারছি না।’ কাঁঠালবাড়ির কৃষক মোঃ আলী বলেন, ‘এ বছর বন্যায় আমার ৩ বিঘার সবজি ক্ষেতসহ ৪ বিঘার ফসল পানিতে ডুবে গেছে। এখন সরকারিভাবে যদি সাহায্য না করা হয় তাহলে আমার মত এলাকার বহু কৃষকই না খেয়ে মরবে।’ শিবচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এসএম সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বন্যায় এ বছর কয়েকটি ইউনিয়নের ফসল পানিতে তলিয়ে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। কৃষকদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আমরা সবজি ও স্বল্প মেয়াদি ফসলের বীজতলা করা শুরু করেছি। ফসলি জমি থেকে পানি সরে গেলে কৃষকদের মাঝে তা বিতরণ করা হবে।’ ঢাকা খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কুদরত-ই গনি বলেন, ‘বন্যাদুর্গত এলাকার কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের ব্যাপক পস্তুতি রয়েছে। বন্যার পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে কৃষকের চাহিদা মাফিক বীজ, সার, চারা যাতে কৃষকরা পায় আমরা সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন