একজন পোশাক শ্রমিকের সর্বনি¤œ আয় মাসে সাড়ে আট হাজার টাকা। তার ঘর ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল নিয়ে মোট খরচ আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। চিকিৎসা ব্যয় ও অন্যান্য মিলে আরও দেড় হাজার টাকা। মা বাবাকে তার দিতে হয় কমপক্ষে দুই হাজার টাকা। আর থাকে দেড় হাজার টাকা। এর মধ্যে চাল কিনতে হয়, ডাল, আলু, পেঁয়াজ অন্যান্য সবজি, মাছ, মাংস এবং অন্যান্য সকল খাওয়ার উপকরণ কিনতে হয়। দাম একেবারে কম থাকলেও এই টাকায় দুজনের পরিবার চলা প্রায় অসম্ভব। আমিষের অভাব মেটানোতো দূরে থাক সম্ভব না সামান্য ডিম বা ডালের যোগানে দেয়াও পুরো মাসের জন্য! শুধু পোশাক শ্রমিক বা দিন মজুরই নয় এর সাথে যুক্ত আছে করোনায় কাজ হারানো আরো অনেক মানুষ। যাদের ধরাবাঁধা কোন আয় নেই, তারা এই বাজার দরে কীভাবে সংসার চালাচ্ছে? বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা! এই অবস্থায় করনীয় ঠিক করতে আলোচনাই এখনও বড় মাধ্যম হিসেবে দেখা যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে পেঁয়াজের দাম কমবে, আলুও হাতের নাগালে থাকবে। কিন্তু এদিক থেকে মানুষের অবস্থা অনেকটাই দুর্দদশা গ্রস্ত। চাল দেশেই উৎপাদন হয়, আলুও প্রচুর উৎপাদন হয়, পেঁয়াজ উৎপাদনেও বড় সফলতা আছে। চাহিদার তুলনায় এগুলো উৎপাদনের সাথে সাথে ধানের মতো সরকার এই ফসলগুলোও আরও বেশি পরিমাণ যোগান রাখা প্রয়োজন। বর্তমানে সবজি উৎপাদন কমে যাওয়ার বড় কারণ বন্যা, বৃষ্টি ও পানি। কিন্তু উঁচু জায়গায় যে সবজি উৎপাদন হচ্ছে সেগুলো কি কম ব্যয়ে বাজারে পৌঁছুতে পারছে? কৃষকদের দাম এবং ভোক্তা পর্যায়ে দামের এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা প্রয়োজন। বাজারে তদারকি বাড়ানোতে যেমন গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন সিজন অনুযায়ী সকল সবজির সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেয়া। যাহোক, দ্রব্য মূল্য এখন কমানোই বড় টার্গেট। কারণ, অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছে এই করোনায়। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের উচিৎ এ বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা আরও বাড়ানো। তাছাড়া, সরকার বিভিন্ন পণ্যের দাম কমে দিতে পারলে ব্যবসায়ীরা কেন পারছেন না, এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আশা করি, সামনের দিনগুলোতে এ ব্যবস্থাপনায় আরও গতি আবে ও উৎপাদিত ফসলের ক্ষেত্রে দামের নিয়ন্ত্রণহীনতা কমবে।
রসায়নবিদ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন