চলতি মেসুমের আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ডাল ও তেল জাতীয় রবি ফসল আবাদ সময়মতো করা যায়নি। এসব চৈতালী শস্য যৎসামান্য আবাদ হলেও নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, নিম্নচাপের কারণে জমি প্রস্তত করা সম্ভব হয়নি। জমিতে জোঁ না আসায় কৃষক সব প্রস্ততি নিয়েও বারবার মাঠ থেকে ফিরে এসেছেন। বাংলাদেশের চাষাবাদ প্রকৃতি ও মৌসুমী বায়ুর উপর নির্ভরশীল। ফসল পঞ্জিকায় শীতকালীন সময়টাতে রবি মৌসুমের মেয়াদকাল ধরা হয়। সে মোতাবেক ১৬অক্টোবর থেকে রবি মৌসুম শুরু। বাস্তবে এর আগে থেকেই আগাম আবাদ শুরু হয়। সেটি এবার হয়নি। তবে দেশের কিছু অঞ্চলে অক্টোবরের একেবারেই শেষদিকে আবাদ শুরু হয়েছে। রবি আবাদ সময়মতো না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে আলু ও পেঁয়াজ সংকট কাটতে বিলম্বিত হবে। তবে প্রচন্ড আশাবাদ ব্যক্ত করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আসাদুল্লাহ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, রবি আবাদ একটু লেট হয়েছে এটি সত্য। কিন্তু এখন রৌদ্র ঝলমলে পরিবেশে আবাদ চলছে ইনশাআল্লাহ অসুবিধা হবে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সারাদেশে আলু ৪লাখ ৬৮ হাজার ৫২৬ হেক্টর, পেঁয়াজ ১লাখ ৮০হাজার হেক্টর, ডাল ৮লাখ ১হাজার ৫৬৯ ও তেল ৭লাখ ৭৬হাজার ২৭৯ হেক্টর জমিতে আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সূত্রমতে, অসময়ে আর বৃষ্টি ও নিম্নচাপ কিংবা প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অনায়াসেই পূরণ হবে। অনেকক্ষেত্রে ফলনও ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, রবির মধ্যে শীতকালীন সবজি ও ভুট্রা পড়ে। সেটির কোন অসুবিধা হয়নি।
মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা ও কৃষকরা জানিয়েছেন, কিছু অঞ্চলে এখন রবি আবাদ জোরেশোরে চলছে। তাছাড়া ফরিদপুর, রাজবাড়ি ও যশোর অঞ্চলে ইতোমধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। এটি মৌসুমী পেঁয়াজ হলেও আগেভাবেই বাজারে উঠবে। দৈনিক ইনকিলাবের ব্যুরো অফিস থেকে পাঠানো রিপোর্টে সারাদেশের রবি ফসল আবাদের বাস্তবচিত্র ফুটে উঠেছে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো থেকে সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম সেলিম জানান, চট্টগ্রাম অঞ্চলে শুরু হয়েছে রবি ফসলের আবাদ। সবচেয়ে বেশি ফসল উৎপাদন হয় এ মৌসুমে। করোনাকালে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে বোরো, গম, ভুট্টা, সরিষা ও পেঁয়াজ এ পাঁচটি ফসল উৎপাদনকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে পর্যাপ্ত বীজ এবং সারও সরবরাহ করা হয়েছে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এবারের আবহাওয়া রবি ফসলের জন্য উপযোগী। এতে আবাদ এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে আশাবাদী তারা। চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলায় আড়াই লাখ হেক্টর জমিতে আলু, মিষ্টি আলু, শাকসবজি, সরিষা, চিনাবাদাম, মসুর ডাল, তিল, মটর, সয়াবিন, ফেলন ডাল, খেসারি, মাসকলাই, মুগ ডাল, ছোলা, ভুট্টা, গম, পেঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া ও মরিচ আবাদের প্রস্তুতি চলছে। গতবারের চেয়ে আলু, পেঁয়াজ এবং গমসহ সব ফসলের উৎপাদন বাড়াতে মাঠে নেমেছেন কৃষক। তাদের সহযোগিতা দিচ্ছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মনজুরুল হুদা বলেন, রবি মৌসুমে ব্যাপকহারে ফসল উৎপাদনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত বীজ এবং সার মজুদ রয়েছে। বিদেশ থেকে হাইব্রিড জাতের বীজ আমদানি করা হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় আবাদ শুরু হয়েছে। নভেম্বরে আমন কাটা শুরু হলে রবি ফসলের আবাদ পুরোদমে শুরু হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নাসির উদ্দিন বলেন, এবারের আবহাওয়া রবি মৌসুমের জন্য অনুক‚ল রয়েছে। আলু এবং পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে আলুসহ শাকসবজির ব্যাপক ফলন হয় জানিয়ে তিনি বলেন, চাহিদা থাকায় কৃষকরা ন্যায্য দামও পান।
রাজশাহী ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা রেজাউল করিম রাজু জানান, অতিবর্ষন ও বন্যার প্রভাব পড়েছে বরেন্দ্র অঞ্চলে রবি ফসল আবাদে। বর্ষন থেমেছে। নেমেছে বানের পানি। মাসটা কার্তিক হলেও রোদ্রের তাপ কম নয়। মাটিতে টান ধরেছে। কৃষক নেমে পড়েছে বানে আসা পলি মাটিতে রবি শষ্য আবাদে। বরেন্দ্র অঞ্চল ঘুরে দেখা যায় কোথাও কোথাও উচু জমিতে আগাম আবাদ হওয়া পেয়াজ (মুড়ি কাটা) রসুন, আদা, মরিচ, তিল, চিনা বাদাম, মটর, খেসাড়ী, কলাই ছোলার ক্ষেত। পানি নেমে যাওয়া ক্ষেতে চলছে চাষাবাদের প্রস্তুতি। বিশেষ করে আলু, টমেটোর আবাদ জোরে শোরে শুরু হয়েছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুল হক জানান, এবার আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা ২৪ হাজার হেক্টরে। ডাল জাতীয় কুড়ি হাজার হেক্টরে। পেয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা আঠারো হাজার হেক্টর ধরা হলেও আবাদ হয়েছে আরো এক হাজার হেক্টর বেশী জমিতে। আর কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবার রবি শষ্যেও আবাদ ভাল হবার প্রত্যাশা কৃষি দপ্তরের মাঠকর্মী আর কৃষকের।
নোয়াখালী ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা আনোয়ারুল হক আনোয়ার জানান ঃ বরিশস্য মৌসুমে নোয়াখালীতে চাষাবাদে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পলিমাটি বিধৌত নোয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চল বরিশস্য ফলনে সহায়ক হওয়ায় এতদ্বঞ্চলে প্রতি বছর চাষের আওতায় আসছে বিপূল ভূমি।
নোয়াখালী কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মৌশুমের চাইতে এবার আরো বেশী জমিতে বরিশস্য চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এমরধ্যে ১২হাজার হেক্টরে সয়াবিন, মুগ ৬হাজার হেক্টর, মশুর ৫’শ হেক্টর, ভূট্রা ৫৫ হেক্টর, গম ১ হেক্টর, আলু ২১০ হেক্টর, মিষ্টি আলু ৬হাজার হেক্টর, সবজি ৮৩০ হেক্টর, খেসারি ৩৫০০ হেক্টর, মাশকলাই ২ হেক্টর, হেলন ২৫০ হেক্টর, মরিচ ১০ হেক্টর, পিঁয়াজ ৩৫ হেক্টর, রসুন ৫০ হেক্টর, তিশি ৩৫ হেক্টর, তিল হেক্টর, আখ ৭০হেক্টর, সরিসা ১২ হেক্টর, সূর্যমুখি ১৮ হেক্টর, চিনা বাদাম ৩হাজার হেক্টর।
কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের উপ পরিচালক জানান, জেলার উপকূলীয় অঞ্চলে বরিশস্য ও শাকসবজি উৎপাদন বৃদ্ধির পাচ্ছে। বিশেষ করে মেঘনা বিধৌত পলিমাটির কারনে এখানকার ভূমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া মেঘনা নদীগর্ভে জেগে ওঠা নতুন নতুন চরাঞ্চলে রাসায়নিক সার প্রয়োগ ছাড়াই রবিশস্যের ভাল ফলন পাচ্ছে।
বরিশাল ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা নাছিম উল আলম জানান, ‘বুলবুল ও আম্পান’এর মত দুটি বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের পরে ভাদ্রের বড় অমাবশ্যা ও গত সপ্তাহের নিম্নচাপের প্রভাবে নজিরবিহীন প্রবল বর্ষনে দক্ষিণাঞ্চলের খারিপ-১ ও খরিপ-২ ফসলের ক্ষতির পরে রবি ফসলের আবাদও বিলম্বিত হচ্ছে। দু দফার ঝড়ে আউশ ধান ক্ষতিগ্রস্ত হবার পাশাপাশি রোপা আমন বিনষ্ট হলেও কৃষকরা সে ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার পরপরই গত সপ্তাহের রেকর্ড পরিমান বৃষ্টিতে আগাম শীতকালীন ফসল নিয়েও আশাহত কৃষকরা। রবি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টরে গম, ১০ সহশ্রাধীক হেক্টরে ভ’ট্টা, ১০ হাজার হেক্টরে গোল আলু, সাড়ে ১২ হাজার হেক্টরে মিষ্টি আলু আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। শীতকালীন মুগ এবং সয়াবিন, সরিষা, তিল ও তিসি ছাড়াও আরো একাধীক শীতকালীন ফসল আবাদের প্রস্তুতি গ্রহন করছেন দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকগন। ভাটি এলাকা হওয়ায় এ অঞ্চলে রবি মৌসুম শুরু হয় ৩০-৪৫ দিন বিলম্বে। উপরন্তু এবার আশি^নের প্রবল বর্ষনের প্লাবনে দক্ষিণাঞ্চলে রবি আবাদ আরো কিছুটা বিলম্বিত হবার কথা বলছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগন।.
বগুড়া ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা মহসিন রাজু জানান, বগুড়া চলতি গোল আলু, মিষ্টি আলু, মুগ, মসুর, খেসারী, সোলার ডাল ও গম সহ বিভিন্ন শীতকালীন রবি শস্য চাষের উচ্চাভিলাসী পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে কৃষি বিভাগ।
বগুড়া কৃষি অঞ্চল অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক জানিয়েছেন বগুড়া চলতি শীতকালীন মৌসুমে বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে হাইব্রিড উফসী ও স্থানীয় জাত মিলে ২২,৪৩২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধরণ করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে বীজতলা তৈরির কাজ চলছে বলে জানা গেছে। রবি শস্যের মধ্যে এবার বগুড়া অঞ্চলে ১০,৩৮০ হেক্টরে মরিচ, ৫৮,৮৮০ হেক্টরে কন্দ পেঁয়াজ, ১৪,৯৫৭ হেক্টরে রসুন, ২২,৪২৮ হেক্টরে ভুট্টা, ৭,৬২০ হেক্টরে চীনাবাদাম, ১,২০,৪১৫ হেক্টরে সরিষা, ২২২ হেক্টরে তিল, ১,১৬,০২০ হেক্টরে গোল আলু, ১,৭৮৫ মিষ্টি আলু, ১৭৭ হেক্টরে কেশর আলু, ২১,৭৪৫ হেক্টরে খেসারী, ২০,৮৩৬ হেক্টরে মসুর, ১৬০ হেক্টরে মুগ, ১,৫৫৬ হেক্টরে মটর, ৪১,০৬৫ হেক্টরে গম, ১,১০৮ হেক্টরে ধনিয়া, ৮৪৭ হেক্টরে কালো জিরা এবং ৪৫ হেক্টরে মৌরি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত রবি মৌসুমী ফসল চাষের লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তবে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে নদী তীরবর্তী পলি পড়া জমিতে কৃষকরা উৎপাদন কর্মে ঝাপিয়ে পড়বে বলে তারা আশাবাদী। এবারে সেচ সংকট থাকবে না বিধায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রতিটি ফসলেরই বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষি বিভাগ আশাবাদী।
ময়মনসিঙহ ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা শামসুল আলম খান জানান, বিলম্বে হলেও এখন মাঠে মাঠে পুরাদমে রবি ফসল আবাদ শুরু হয়েছে।
দিনাজপুর থেকে সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজুল হক আনার জানান, বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় দিনাজপুর এলাকার বিভিন্ন রবি শষ্যের ফলন আরো ভাল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি নির্ভর দিনাজপুর জেলায় ফলন ভাল হলেও সকল ধরনের সবজির দাম আকাশচুম্বি। এর কারন অন্যান্য জেলার চাহিদা। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে চলতি রবি মওসুমে জেলায় তিন লক্ষ ৩০ হাজার ৭৬ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।
সিলেট ব্যুরো থেকে স্টাফ রিপোর্টার ফয়সাল আমীন জানান, সিলেটে রবি শস্য চাষের প্রস্তৃতি নিচ্ছেন কৃষকরা। তারপরও আবহাওয়া নিয়েও দু:চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। গত ১৫ অক্টোবর থেকে রবি ফসলের বীজতলা তৈরী করছেন কৃষকরা। সাধারনত শীতকাল রবি শস্যের মৌসুম। তারপরও ব্যাপক পরিমান জমি অনাবাদি থাকে সিলেটে। ডাল ও তেল জাতীয় শস্য উৎপাদনে সিলেটের কৃষকরা তেমন মনোযোগী না। জৈন্তাপুর এলাকাশ প্রচুর পরিমান সূর্যমূখী উৎপাদন হয়। তবে কৃষি উপযোগী আবহাওয়া নিয়ে শংকিত সিলেটের কৃষকরা। মৌসুমের শেষে অর্থাৎ নভেম্বর মাসে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহের বিরতি শুরু হলে এবং অব্যাহত থাকে মার্চ মাসের শেষাবধি। শুষ্ক ও রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া এই মৌসুমের বৈশিষ্ট্য, কিন্তু শুরু ও শেষে উষ্ণতা থাকলেও মধ্যবর্তী ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই সময়কাল যথেষ্ট ঠান্ডা থাকার কথা। আবহ্ওায়া স্বাভাবিক থাকলে রবি শস্যের ভালো আবাদ হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী মতিলাল হ্ওালাদার। তিনি বলেন, সেই সাথে সিলেটের কৃষকরা সরিষা, গম আবাদে আগ্রহী হচ্ছেন। বৃষ্টির কারনে শীতকালীন সবজি আবাদে যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, রবি শস্য উৎপাদনের সফলতায় সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন সিলেটের কৃষকরা।
খুলনা ব্যুরো থেকে স্টাফ রিপোর্টার আবু হেনা মুক্তি জানান, করোনা ও আমফানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আগাম রবি শস্য চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন খুলনার কৃষক। সরকারি সহযোগিতায় (প্রণোদনা) গম, সরিষা, ভুট্টা ও সার পাওয়ায় চলতি মৌসুমে জেলায় রবি শষ্য চাষ শুরু হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় অধিক জমিতে রবি শস্য চাষ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি আমফানের আঘাতে এ অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে উপজেলা ও জেলা প্রশাসন তালিকা করে দ্রæত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে কৃষি সহযোগিতা কার্যক্রম হাতে নেয়। এরই অংশ হিসেবে কৃষকদের মাঝে সরিষা, গম, ভুট্টার বীজ ও সার দেয়া হয়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষক জনি মন্ডল জানান, ৮/১০ বছর আগে তাদের এলাকায় ব্যাপক সরিষা, গম, আলুসহ বিভিন্ন রবি শস্য চাষ করা হতো। কিন্তু এ অঞ্চলে ধান এক মাত্র ফসল হওয়ায় রবি শস্য কেউ চাষ করতেন না। কিন্তু বন্যায় এ বছর ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা রবি শস্য চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, গত বছর হিমাগারে আলুর বীজ রেখে ভালো মানের বীজ পেয়েছেন। এ জন্য ১২ বিঘা আলু লাগানো জন্য চাষ শুরু করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফসল ঘরে তুলতে পারবেন এমনটাই আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
যশোর ব্যুরো থেকে স্টাফ রিপোর্টার শাহেদ রহমান জানান, নিন্মচাপের কারণে রবি আবাদ পিছিয়ে গেছে। তবে এখন থেকে পুরাদমে মাঠে নামতে পেরেছেন কৃষকরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক পার্থ প্রতীম সাহা জানান, একটু লেট হলো, কিন্তু আবাদের কোন ঘাটতি হবে না। মাঠে মাঠে এখন পুরাদমে আলু,পেঁয়াজ, ডাল ও তেল জাতীয় ফফসল আবাদ শুরু হয়েছে।
লক্ষীপুর অফিস থেকে স্টাফ রিপোর্টার এস এম বাবুল(বাবর) জানান, লক্ষীপুরে বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে ফসলের ক্ষেত ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রবি শস্যের ও বীজতলার। এতে আর্থিক ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছে কৃষকরা।
লক্ষীপুর জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১৬ হাজার ৫৮৪ হেক্টর জমিতে রবি শস্যের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৫১৫ হেক্টর জমিনের ও ৫০ হেক্টর জমিনের সয়াবিন বীজ ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩৪ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সদর উপজেলার চর আলী হাসান গ্রামের কৃষক নুরুল আলম জানান, একাধিক বারের বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে তার উঠানে পানি উঠেছে। বিস্তৃর্ণ আমনের মাঠে অতিরিক্ত পানি জমে ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন