কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে হ্যাটট্রিকসহ আসরে মোট আটটি গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেছেন ফরাসি ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপে। তবে এই স্বীকৃতিটা উঠতে পারত লিওনেল মেসির হাতে। ম্যাচ রেফারি শুধুমাত্র ভিআরের সাহায্য নিলে এমবাপের শেষ গোলটা তো হতই না, উল্টো টাইব্রেকারের আগেই ম্যাচে জয় পেয়ে যেত আলবিসেলেস্তারা।
গত রোববার কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ২২তম আসরের ফাইনালে মাঠে নামে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। নির্ধারিত সময়ে খেলা ২-২ গোলে সমতা থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের ১১৬তম মিনিটে ফরাসি ফুটবলার কিংসলে কোম্যানের কর্নার কিক থেকে পাওয়া বল হেড করতে গিয়ে সতীর্থ উপেমেকানোর হাতে লাগে। এরপর সেই বল চলে যায় এমবাপের পায়ে। এমবাপে সেই বল শট নিলে তা যেয়ে লাগে আলবিসেলেস্তা ডিফেন্ডার মনটিয়েলের হাতে। আর তাতেই পেনাল্টি পেয়ে যায় ফ্রান্স। অথচ মনটিয়েলের হ্যান্ডবলের আগেই বল হাতে লেগেছিল ফরাসি সেন্টার-ব্যাক উপেমেকানোর।
তবে ফাইনাল ম্যাচের সেই পোলিশ রেফারি সাইমন মার্সিনিয়ার কাছে যদি আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা তখন ভিআরের আবেদন করতেন ও রেফারি তার সাহায্য নিতেন, তবে ম্যাচের ভাগ্য বদলে যেতে পারত। এমনকি ৩-২ গোলে ম্যাচ জিতে নিত আলবিসেলেস্তারা। তখন মেসি ও এমবাপের গোলসংখ্যা হতো সমান ৭টি করে। তবে অ্যাসিস্টে মেসি এগিয়ে থাকায় গোল্ডেন বুট জিতে নিত ‘এলএমটেন’।
তবে রোববারের সেই ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে অভিযোগের শেষ নেই ফ্রান্সের। অতিরিক্ত সময়ের ১০৮তম মিনিটে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দিয়েছিলেন মেসি। সেই গোলটি রেফারির বাতিল করা উচিত ছিল বলে দাবি বেশ কয়েকটি ফরাসি গণমাধ্যমের। তাদের দাবি, মেসির সেই গোলের সময় মাঠে আর্জেন্টিনার ১১ জনের বেশি ফুটবলার ছিল। তাছাড়াও আলবিসেলেস্তাদের একজন ফুটবলার পরিবর্ত হিসেবে নামার জন্য সাইড লাইনে অপেক্ষা করছিলেন। তারা আরও বলেন, গোলের সময় তিনি নিয়ম ভেঙে মাঠের ভেতর চলে আসেন।
এই প্রসঙ্গে এক ফরাসি বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী মাঠে অতিরিক্ত কেউ থাকতে পারবে না। সেক্ষেত্রে ফুটবলার, কোচ বা অন্য যে কেউ হতে পারে। রেফারির উচিত ছিল আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি বাতিল করা’।
তবে সংবাদ সম্মেলন সেই সমালোচকদের অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছেন পোলিশ রেফারি সাইমন মার্সিনিয়া। একটি ছবি সাংবাদিকদের দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘ফরাসিরা কেন এই ছবিটার কথা বলেননি। এমবাপে গোল করার সময়ও মাঠের ভেতর ফ্রান্সের বাড়তি ৭ জন ফুটবলার কী করছিল’?
মার্সিনিয়ার ফোনে রেখে দেওয়া ছবিতে দেখা যায়, অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপে পেনাল্টি নেওয়ার সময় ফ্রান্সের রিজার্ভ বেঞ্চের ৭ জন ফুটবলার মাঠের ভেতরে চলে যান। সেই ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘আর্জেন্টিনার গোল বাতিল করা হলে এমবাপের একটি গোলও বাতিল করতে হবে’। তার এই জবাবের পর ফ্রান্সের সমালোচকরা নতুন করে আর মুখ খুলেননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন