বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত ব্রি-ধান ৭৫ ফলনে চমক সৃষ্টি করেছে। এ ধান এখন কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে। এ জাতের ধানচাষে কম খরচে অল্পদিনে অধিক ফলন পেয়ে কৃষকরা অনেক খুশি। তাদের মধ্যে একজন ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কৃষক শাহাজান মন্ডল। তিনি এ বছর দুটি ক্ষেত মিলে মোট ১৮ কাঠা জমিতে ব্রিধান ৭৫ চাষ করে এলাকার অন্য কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন। কৃষক শাহাজান মন্ডল উপজেলার কোলা ইউনিয়নের খড়িকাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল খালেক মন্ডলের ছেলে। তার ক্ষেতের ধান দেখে অন্য কৃষকরাও ঝুঁকছেন ব্রি-৭৫ এ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৫শ’ ৭০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ১৮ হাজার ৪শ’ হেক্টর। এরমধ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত ব্রিধান ৭৫ চাষ হয়েছে ১শ’ ৭৫ হেক্টর জমিতে।
এই জাতের ধানের বীজ ২০১৮ সালে উদ্ভাবিত। যা সরকারি প্রণোদণা হিসেবে কৃষকদেরকে বিনামূল্যে দেয়া হয়েছিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষক শাহাজাহান আলী মন্ডলের একটি ক্ষেতের ধানগুলো পেকে সোনালী রঙ ধারণ করতে শুরু করেছে। ধানের বাইল বা শিষ ধানেরভারে নুইয়ে পড়ছে। তিনি জানান, নতুন জাতের ব্রিধান ৭৫ তাদের মাঠে এ বছরই প্রথম চাষ করেছেন। একই সাথে রোপন করা অন্য জাতের ধান ক্ষেতের ধান সবেমাত্র বাইল বা শিষ বের হচ্ছে। অথচ ব্রি-৭৫ ঘরে উঠিয়ে এখন মসুর চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করতে বেশ সময় পাবো। তিনি আরও জানান, এ ধান রোপনের পর থেকে মাত্র ১ বার সার প্রয়োগ করেছেন। আর রোগ বালাই নেই বললেই চলে এবং উৎপাদন ব্যয়ও কম। তিনি বিগত ১৮ বছর ধরে কৃষি কাজের সাথে জড়িত। সব মৌসুমেই তিনি ধানের চাষ করে থাকেন। কোনো কোনো বছর ফলন এতো কম হয় যে উৎপাদন ব্যয় ঘরে আনাটাও কষ্ট হয়ে যায়। এদিক বিবেচোনায় বর্তমান সময়ে ব্রিধান ৭৫ সবচেয়ে কৃষক বান্ধব বলে মনে করছেন তিনি। ফলে আগামীতে সব জমিতেই এ জাতের ধানের চাষ করবেন তিনি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার মোহায়মেন ইসলাম জানান, এ উপজেলার কৃষক শাহাজান মন্ডল ব্রিধান চাষ একা করেনি। উপজেলায় মোট ১শ’ ৭৫ হেক্টর জমিতে ব্রিধান ৭৫’র চাষ করা হয়েছে।
এ ধানে উৎপাদন ব্যয় অনেক কম। অপেক্ষাকৃত কম দিনে সংগ্রহ করা যায়। এছাড়া ফলনও বেশি। তাই কৃষকদের দৃষ্টি এখন ব্রিধান ৭৫’র দিকে। তিনি নিজেও কয়েকটি ক্ষেতে ধান দেখে প্রমাণ পেয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন