জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে তালাক গোপন রেখে ঘর সংসার করা সহ নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীসহ পরিবাবের সবাইকে আদালতের আসামী করেছে এক গৃহবধু।
মামলা ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের ঝিংগার ভিটা গ্রামের সেলিম হোসেনের মেয়ে স্মৃতি হামিদ (২০) এর সহিত ২০১৯ সালের ৫ জুন একই উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগারপাড় গ্রামের আব্দুল আজিজ (দুল্লু) এর ছেলে জাহিদুল ইসলাম (মোমিন) এর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বর্ণের গহনা, আসবাবপত্র ও মোটরসাইকেলসহ কয়েক লক্ষ টাকার যৌতুক দেয়া হয়েছিল। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্মৃতি হামিদকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন। স্মৃতি হামিদ সংসার টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে নির্যাতন ও কষ্ট সহ্য করে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। গত ২১ আগষ্ট রাতে পরিবারের লোকজনের সহায়তায় ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে তার স্বামী জাহিদুল ইসলাম মোমিন স্মৃতি হামিদকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। খবর পেয়ে স্মৃতি হামিদের আপন জনেরা পরদিন সকালে এসে আহত স্মৃতি হামিদকে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করায়। আপোষ মিমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর সরিষাবাড়ী থানায় ১১(গ)/৩০-২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ এর আলোকে মোমিনকে প্রধান করে ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন স্মৃতি হামিদ। এদিকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর মহাদান ইউনিয়ন পরিষদে ডাক যোগে তালাকের নোটিশ আসে। ৫ অক্টোবর চেয়ারম্যান একেএম আনিছুর রহমান জুয়েল স্মৃতি হামিদকে ডেকে নিয়ে তালাকের বিষয় অবগত করান। অতপর স্মৃতি হামিদ তালাকের নকল সংগ্রহ করেন। এতে তালাক দেয়ার তারিখ ১৬/০২/২০২০ উল্লেখ রয়েছে। তালাক গোপন রেখে ঘর সংসার করায় গত ১৩ অক্টোবর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০১, জামালপুর আদালতে আরেকটি মামলা করেন স্মৃতি হামিদ। এ মামলায়ও মোমিনকে প্রধান করে ৫ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্মৃতি হামিদ জানান, মোমিন পরিবারের অন্য সদস্যদের সহযোগীতায় তালাক গোপন রেখে ঘর সংসার করায় প্রতারণামূলক ধর্ষণের অপরাধসহ যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। তিনি দেশের প্রচলিত আইনে উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন। এ ব্যাপারে স্মৃতি হামিদ মামলার প্রধান আসামী জাহিদুল ইসলাম মোমিনের সাথে মোবাইলে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে। তার পিতা আব্দুল আজিজ (দুল্ল) ও মা আমেনা বেগম জানান, মোমিনকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন অপমান করায় তালাক দেওয়া হয়েছে। মহাদান ইউপি চেয়ারম্যান একেএম আনিছুর রহমান জুয়েল জানান, বিষয়টি যদিও আমার ইউনিয়নের ভিতরে তবুও আমি জানিনা। পরিষদে তালাকের নোটিশ এলে ব্যাপারটি আমার নজরে আসে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সরিষাবাড়ী থানার উপ পরিদর্শক আশরাফুল আলম জানান, এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ পড়েছে, বিষয়টি তদন্তনাধীন রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন