ধানের ন্যায় মূল্য পাওয়ায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় এ বছর অধীক পরিমান জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়। উপযুক্ত পরিচর্চা, নিড়ানি ও শেষ সার প্রয়োগ করে ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন বুনছিলেন কৃষক। মাঝরা পোকার আক্রমন, পাতা পোড়া রোগ ও কার্তিকের বৃষ্টি এবং বাতাস কৃষকের সে স্বপ্ন মøাল করে দিয়েছে। ভারি বৃষ্টি, বার বার বন্যায় ফুলবাড়ী উপজেলার সমগ্র নিচু জমির ধান পানিতে তলিয়ে যায়। কিছু কিছু জমির ধান পানিতে কয়েক দিন ডুবে থেকে নষ্ট হয়ে য়ায়।
পানি নেমে যাওয়ার পর মৌসুমের শেষ সময়ে পাতা পোড়া পোড়া রোগের আত্রুমনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। সমগ্র উপজেলার উচু নিচু সব জমিতে কম-বেশী পাতা পোড়া রোগে আত্রুান্ত। উচু জমির চেয়ে নিচু জমি বিশেষ করে পানিতে কয়েক দিন তলিয়ে থাকা ধান ক্ষেতে রোগের আক্রমন বেশি। বার বার ঔষধ প্রয়োগ করেও কিছুতেই পাতা পোড়া রোগের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কোন কোন ধান ক্ষেতে শেষ পাতাসহ সব পাতাই মরে গিয়ে কেবল শিষটি টিকে আছে। এতে ধানের চিটার পরিমান বেড়ে গিয়ে উৎপাদন কমে যাওয়ার ভয়ে আছেন কৃষকরা।
বড়ভিটা গ্রামের কৃষক আমিলুল ইসলাম বলেন ৬বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। এর মধ্যে ৩বিঘা জমিতে পাতা পোড়া আক্রমন বেশি হওয়ায় (বিএস)-এর পরামর্শ মত ২/৩ বার ঔষধ প্রয়োগ করে কোন কাজ হয়নি। কার্তিক মাসের গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও বাতাসে অনেক ধান ক্ষেত মাটিতে শুইয়ে পড়েছে ধানগুলো কয়েকদিন পড়েই কাটা যেত। একই গ্রামের সালাম মিয়া বলেন, ৩বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। ১বিঘা জমির ধান বন্যায় নষ্ট হয়েছে, ১বিঘার ধান কাইতান সাতাও এ মাটিতে শুইয়ে পড়েছে। এবার ধান চাষ করে আমার লোকসান গুনতে হবে। ফলে সারা বছরই ধার দেনা করে সংসার চালাতে হবে।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১১ হাজার ৭২০ হেক্টর জমতিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ১৭৭ হেক্টর। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৬০০ হেক্টর। বৃষ্টি পাত ও বাতাসে ৪৫০ হেক্টর জমির ধান মাটিতে শুইয়ে পড়েছে। স্বর্না জাতের ধান বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশীদ বলেন, ধান গাছের দুধ শিষ কিছুটা শক্ত হওয়ায় পাতা পোড়া রোগে তেমনটা ক্ষতি হবে না। আক্রান্ত ধান ক্ষেতে ঔষধ ও হেলে পড়া ধান গাছ ছোট ছোট আটিঁ বেধে তুলে দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন