গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা
১২ বছর বয়সী এক শিশু টানা কয়েকদিন জ্বর, ঠা-া ও কাশিতে ভুগে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃবিভাগে নিয়ে এসেছেন তার অভিভাবক। ইতোপূর্বে বিভিন্ন ওষুধের দোকানদার শিশুটিকে নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করেছেন। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বহুবিধ অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে এখন কোনো অ্যান্টিবায়োটিকই আর শিশুটির শরীরে কাজ করছে না। এতে অসুস্থ শিশুটির সুস্থ হয়ে ওঠা দুরুহ হয়ে পড়ছে। এধরনের ঘটনা গোয়ালন্দে ঘটছে অহরহ। অনুসন্ধানে জানা যায়, অ্যান্টিবায়োটিক শুধু নয়, স্টেরয়েড, উচ্চমানের পেইনকিলারসহ যে সকল ওষুধ প্রয়োগের আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও অনেক চিন্তা করেন। কিন্তু সেই সকল ওষুধ দোকানিরা রোগীর শরীরে দিয়ে দিচ্ছেন কোনো কিছু না ভেবেই। ওষুধ কোম্পানির সাথে সিন্ডিকেট করে বিশেষ মুনাফার জন্য যথেচ্ছ বিক্রি হচ্ছে এইসব সংবেদনশীল ওষুধ। ফলে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। রোগীকে পুঁজি করে গড়ে উঠেছে অপচিকিৎসার এই বিশাল চক্র। ভুক্তভোগীরা যখন সব কুল হারিয়ে হাসপাতালে প্রকৃত চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন তখন চিকিৎসকদের হয়তো তেমন কিছুই করার থাকে না। গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাজার এলাকায় অবাধে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ফার্মেসি। যাদের মূল ব্যবসাই হলো দামি অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা। রোগীর লক্ষণ যাই হোক, তাদের উদ্দেশ্য এইসব ওষুধ রোগীদের গছিয়ে দেয়া। সহজ-সরল রোগীরা তাদেরকে বিশ্বাস করে এসব ওষুধ শিশুসহ সবাইকে সেবন করাচ্ছেন। এতে করে পরবর্তীতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির শিকার হচ্ছে তারা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনো ভূমিকা না থাকায় দিন দিন পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. এমএ হান্নান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এটা একবারে বন্ধ করা সম্ভব না। কারণ রোগীরাই উৎসাহী হয়ে ওইসব ওষুধের দোকানে গিয়ে রোগের কথা বলে ওষুধ কিনতে যান। তবে আমরা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে এ বিষয়ে সচেতন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন