রেবা রহমান, যশোর থেকে
আবারো যশোরের দুঃখ হিসেবে চিহ্নিত ভবদহ সমস্যা দেখা দিয়েছে। অতিবর্ষণে ভবদহের আশপাশের অর্ধ শতাধিক গ্রাম পানিবদ্ধ হয়ে পড়েছে। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেই। পানিবদ্ধতার শিকার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। রাস্তার দু’পাশে আশ্রয় নিয়েছে তারা। গত মঙ্গলবার পানি নিষ্কাশনের দাবিতে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া নূরবাগের রেলগেটে এক বিরাট সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে নওয়াপাড়া বাজারে মিছিল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেন পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ। কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা বিশিষ্ট রাজনীতিক ইকবাল কবির জাহিদ, প্রধান সমন্বয়ক বৈকুন্ঠ বিহারী রায়, মণিরামপুর অংশের আহ্বায়ক আব্দুল হামিদ গাজী, সমন্বয়ক চৈতন্য কুমার পাল, ফকিরহাট সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির হায়দার ও পায়রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিষ্ণুপদ দত্ত। বক্তারা বলেন, গত দুই বছর বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালু করতে না পারায় ভবদহের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ শ্রী-হরি নদীর বুক ভরাট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় গত দুইদিনের বর্ষায় ভবদহ এলাকার অর্ধ শতাধিক গ্রামে পানি উঠেছে। তলিয়ে গেছে গ্রায় ৪০ হাজার মাছের ঘের। হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল এখন পানির তলে। দুই হাজার মানুষের ঘরের মধ্যে পানি প্রবেশ করায় এলাকার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। বক্তারা অবিলম্বে হরি-শ্রী নদী খননসহ বিল কপালিয়ায় পরিকল্পিত জোয়ারাধার চালুর পাশাপাশি কৃষকদের ফসলের ক্ষতিপূরণ, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভবদহ স্লুইস গেটের একুশ ও নয় ভেন্টের মাঝ দিয়ে সরাসরি নদী সংযোগ, ভবদহ এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা এবং আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের দাবি জানান। যশোর ও খুলনার বিরাট অংশের মানুষের দুঃখ ছিল ভবদহ। কয়েকবছর পর আবার সেই ভবদহ সমস্যা দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে স্থায়ী সমাধান করতে পারেনি। অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের একশ্রেণীর কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা সমস্যা জিইয়ে রেখে দুর্নীতির মহোৎসব চালায়। যশোরের মনিরামপুর, কেশবপুর ও অভয়নগরেরর বিস্তীর্ণ এলাকা এখন পানির নিচে। হাজার হাজার পরিবার ঠাঁই নিয়েছে সড়কের উপর। মাছের ঘের ভেসে গেছে। ফসলের ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন