শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

চালকলে অনিরাপদ ও মানহীন বয়লার

কুষ্টিয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শ্রমিক ও এলাকাবাসী

এস এম আলী আহসান পান্না, কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

কুষ্টিয়ার খাজানগরে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকামের শত শত হাসকিং মিলে ব্যবহার হচ্ছে রেজিস্ট্রেশনবিহীন অনিরাপদ ও মানহীন বয়লার। এতে পরিবেশ দূষণসহ দুর্ঘটনা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রধান বয়লার পরিদর্শক কার্যালয় বার বার তাগিদ দেয়া সত্তে¡ও হাসকিং চালকল মালিকরা রেজিস্ট্রেশন গ্রহণসহ উন্নত প্রযুক্তির নিরাপদ বয়লার ব্যবহারে আগ্রহ দেখায়নি।
এ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের সময় জানা যায়, খাজানগরে প্রায় ৩৯০ হাসকিং মিলে ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ ড্রাম পদ্ধতির বয়লারে প্রতিদিন হাজার হাজার টন ধান সিদ্ধ করা হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনায় জান-মালের ক্ষতিসহ পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। খাজানগরের এসব হাসকিং মিলের প্রতিটিতে রয়েছে কমপক্ষে ১০০ মণ ধান ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৫/৭টি ধানের চাতাল। চাল উৎপাদনের জন্য সিদ্ধ ধানের যোগানে বয়লার অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্র হিসেবে হাসকিং মিলগুলোতে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এসব বয়লার পরিবেশবান্ধব আধুনিক প্রযুক্তির নয়। প্রধান বয়লার পরিদর্শক কার্যালয় গত বছর ও চলতি বছর সভা করে রেজিস্ট্রেশন গ্রহণসহ আমদানিকৃত কিংবা বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) উদ্ভাবিত নিরাপদ, জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব বয়লার প্রতিস্থাপনের তাগিদ দেয়। কিন্তু মিল মালিকরা বাড়তি খরচসহ নানা অজুহাতে তা বাস্তবায়নে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ফলে বয়লার দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই মোকামের হাজার হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক ধান সিদ্ধ ও শুকানোর কাজ করছেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, ইতিপূর্বে একাধিক বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনায় খাজানগর চাল মোকামে বহু শ্রমিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
চালকলসহ প্রতিটি শিল্প-কারখানায় মানসম্পন্ন, পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ বয়লার ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই বলে উপপ্রধান বয়লার পরিদর্শক প্রকৌশলী মো. জিয়াউল হক জানান। খাজানগরের বাসিন্দা মো. মোজাম্মেল হক জানান, মিলের ছাই ও নির্গত কালো ধোঁয়ার কারণে এলাকার পরিবেশসহ জনজীবন হুমকিতে রয়েছে। চালকলগুলোতে উন্নত প্রযুক্তির বয়লার প্রতিস্থাপন করে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষার দাবি জানান তিনি। খাজানগর মোকামের অটো মেজর ও হাসকিং চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রধান জানান, হাসকিং মিলে আধুনিক প্রযুক্তির বয়লার প্রতিস্থাপনে ৫ লাখ টাকার ওপরে খরচ পড়বে। সে কারণে মিল মালিকরা নতুন করে বাড়তি ব্যয় করতে আগ্রহী হচ্ছে না।
প্রধান বয়লার পরিদর্শক প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নান জানান, দুর্ঘটনারোধ, পরিবেশ রক্ষা ও জান-মালের নিরাপত্তা বিধানে নিরাপদ বয়লার ব্যবহার অত্যাবশ্যক হলেও চালকল মালিকরা এখনো তা মানছেন না। তবে এ বিষয়ে তাদের তাগিদ দেয়া হচ্ছে। যেহেতু বিষয়টি সরাসরি খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই এখনই আইন বলবৎ করা হচ্ছে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন