মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা : আপনি আচরি ধর্ম অপরে শেখাও

জামালউদ্দিন বারী | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

রাজধানী ঢাকা শহরে হঠাৎ করে একই সময়ে ৯টি স্থানে বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এরপর সাথে সাথেই শুরু হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বৃহৎ বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে বেøইম-গেম বা দোষারোপের রাজনীতি। অর্থাৎ একটি সাবোটাজ ঘটনাকে পুঁজি করে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তির উপর দোষ চাপিয়ে তাকে ঘায়েল করার সেই পুরনো কৌশলের পুনরাবৃত্তি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীতে একদলীয় নির্বাচনের প্রথম বার্ষিকীতে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারী থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের রাজপথ-মহাসড়কপথ অবরোধ শুরু হলে গণপরিবহনে অসংখ্য অগ্নিকান্ড ও পেট্রোল বোমার ঘটনা ঘটে। পৃথিবীর দেশে দেশে বহুকাল ধরে গতানুগতিক রাজনৈতিক ধারায় স্যাবোটাজ ও বেøইম গেমের অপরাজনীতির চর্চা চলছে। বিগত শতকের তিরিশের দশকের শুরুতে জার্মানীর জাতীয় নির্বাচনে নাজিদল বিপুলভোটে জয়লাভ করার পর ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ রাখার পথে কমিউনিস্ট, সমাজতন্ত্রিক, জুইশসহ বেশ কয়েকটি দল ও জাতিসত্তকে প্রতিবন্ধক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরপর ১৯৩৩ সালে জার্মান পার্লামেন্ট ভবন রাইখস্টাগে আগুন লাগিয়ে দেয়ার দায়ে ভ্যান ডার লিউব নামের ডাচ কমিউনিস্ট কাউন্সিলের একজন কর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। এরপর শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড় গণহত্যা। মিথ্যা অভিযোগ চাপিয়ে স্বদেশে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ইউরোপীয় প্রতিবেশি দেশগুলো দখলের খেলায় মেতে উঠার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরী করেন এডলফ হিটলার। এই শতকের একেবারে শুরুতে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী বিমান হামলা করে নিউইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন-টাওয়ার ধ্বংস করে দেয়ার ঘটনাকে পুঁজি করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্ব তথাকথিত যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছিল ইসলামোফোবিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ভিন্ন মাত্রায় তা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এটি এই শতাব্দীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা। ফল্স ফ্ল্যাগ ও বেøইম গেমকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা শেষ পর্যন্ত যে কোনো দলের জন্য বুমেরাং হয়ে উঠতে পারে। জার্মানীর নাৎসি হিটলার, আমেরিকার রিপাবলিকান জর্জ বুশ বা ডোনাল্ড ট্রাম্প, এমনকি ভারতের হিন্দুত্ববাদী নরেন্দ্র মোদির চরমপন্থী জাতীয়তাবাদি ও বর্ণবাদি এজেন্ডা এসব নেতাদের নিজের দল ও দেশের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

গণতন্ত্রের লেবাসে স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা দেশ ও মানুষের জন্য অনেক বড় ঝুঁকি ও সামাজিক-রাজনৈতিক অবক্ষয় নিয়ে আসে। এ ব্যবস্থা রাষ্ট্রকে ভিতর থেকে বিভক্ত ও দুর্বল করে তোলে। আন্দোলনের সময় গণপরিবহনে আগুন দেয়ার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে লাখ লাখ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে এবং হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের সহযোগী দলের হাজার হাজার কর্মী এখনো জেলে আছেন অথবা জামিন ও হাজিরা দিতে প্রতিদিন আদালতে ভীড় করছেন। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এসব মামলার কোনোটাই আইনগতভাবে বিচারিক পক্রিয়া লাভ করতে পারেনি। এর দ্বারা সহজেই অনুমান করা যায়, বেশিরভাগ মামলাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও অপ্রমানিত। বাস পোড়ানোর মামলায় অভিযুক্ত বিএনপি নেতাকর্মীরা হয়রানির শিকার হয়ে অর্থনৈতিক বা দলীয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। বাসে আগুন দেয়ার কিছু ঘটনায় সরকারি দলের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগও গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতা নিজের মালিকানাধীন বাসে আগুন লাগিয়ে দলের হাই কমান্ডের সমীহ অর্জন করা এবং বিরোধী দলের উপর দোষ চাপানোর তথ্য বরিশালের একজন স্থানীয় নেতা গণমাধ্যমে ফাঁস করে দিয়েছিলেন। গত ১২ নভেম্বর ঢাকা-১৮ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে বাপক ভোট জালিয়াতি ও কারচুপির অভিযোগ তোলেন বিএনপি দলীয় প্রার্থী ও সমর্থকরা। নির্বাচন কমিশনের জেষ্ঠ্য কমিশনার মাহবুব তালুকদার তার নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ঐ দিন সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, এই নির্বাচনটি একাদশ জাতীয় সংসদের চেয়েও নি¤œমানের হয়েছে। এটি মোটেও অংশগ্রহণমূলক হয়নি। ১৪ ভোট কেন্দ্রের ৭০ বুথ পরিদর্শন করে তিনি একটি মাত্র বুথে বিরোধীদলের একজন নারী এজেন্টের দেখা পেয়েছেন। ফলে নির্বাচনের ফলাফল যা হবার তাই হয়েছে, আওয়ামী লীগ প্রার্থী ৭৫ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, নিকটতম প্রতিদ›দ্বী বিএনপি’র প্রার্থী পেয়েছেন ৫ হাজার ভোট। নির্বাচনের ফলাফলে কেউ বিস্মিত হয়নি। গত ১০ বছর ধরে এমনটি গা-সহা সাধারণ ঘটনায় পরিনত হয়েছে। একতরফা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি দেখানো হয়েছে শতকরা ১৪ ভাগ। এ হিসাবে শতকরা ৮৬ ভাগ ভোটার নির্বাচনে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছেন। গণতন্ত্রের জন্য এটি অশুভ সংকেত। নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে স্বল্প সংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মী বিক্ষোভ করেছিল। এরপরই ঢাকার ৯টি স্থানে বাসে অগ্নিকাÐের ঘটনা ঘটে। ১৩ টি মামলায় তাৎক্ষনিকভাবে ৩০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আসামীদের বেশিরভাগই বিএনপি নেতাকর্মী। বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণের বিএনপি দলীয় প্রার্থী, সাবেক মেয়র মরহুম সাদেক হোসেন খোকার পুত্র ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকেও এবারের বাস পোড়ানোর মামলায় আসামী করা হয়েছে বলে জানা যায়।

হঠাৎ করে ঢাকায় বাস পোড়ানোর ঘটনায় সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে বেøইম গেম চলছে। ঘটনার সাথে সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা বিএনপি’র উপর দায় চাপিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন, আর বিএনপি এসব নাশকতার ঘটনাকে সরকারের এজেন্টদের কাজ বলে দাবি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধমে ফাঁস হওয়া একটি ভিডিও ক্লিপিংয়ে দেখা যায়, বাসে আগুন দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ স্থানীয় জনতার হাতে আটক হওয়া এক কিশোর তার সঙ্গীসহ ছাত্রলীগের জনৈক বড় ভাইয়ের নির্দেশে কাজ করতে গিয়েছিল বলে স্বীকরোক্তি দেয়। যদিও ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও ক্লিপিংয়ের যর্থাথতা প্রমাণের নিশ্চয়তা এখনও পাওয়া যায়নি। তবে শত শত বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলার ধারাবাহিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাÐ বা বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারের বাঁধার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ বা রাজনৈতিক দল বিক্ষোভ করবেই, এটা তাদের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার। এ ধরণের বিক্ষোভ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আগেই বাসে রহস্যজনক আগুন এবং বিরোধী দলের শত শত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করে বিরোধী দলের আন্দোলন দমানোর পুরনো কৌশল সব সময়ই সক্রিয় রয়েছে। বাসে আগুন দেয়ার পর বেøইম-গেমের রাজনীতি নিয়ে নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট্যজনদের কেউ কেউ কথা বলেছেন। ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান ও পরিচয়ের গÐি থেকেও এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে তারা সকলেই একমত হয়েছেন। পূর্বে সংঘটিত বাস পোড়ানোর ঘটনাগুলো নিয়ে পুলিশের দায়ের করা মামলায় মূলত বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আসামী করা হলেও এখনো কোনো মামলাই আদালতে প্রমানীত হয়নি। ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে মামলা দায়ের করায় ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেলেও মামলার অগ্রগতি ও অভিযোগ প্রমাণের ক্ষেত্রে সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেন কোনো দায় নেই। বেøইম গেমের কারণে প্রকৃত অপরাধিরা ধরা না পড়ায় এর পুনরাবৃত্তি ঘটে। মিথ্যা অভিযোগ ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রকে অনিরাপদ ও অস্থিতিশীল করে তুলেছে।

আমেরিকার বিপুল প্রতাপশালী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জনগণের রায়ে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হতে পারেননি। জনগণের রায় এবং দলনিরপেক্ষ প্রশাসনের যথাযথ ভূমিকা ছাড়া কোনো দেশে গণতন্ত্র কার্যকর হয় না। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক পক্ষের একতরফা প্রভাব ও হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকলে তাকে গণতন্ত্র বলা যায় না। গণতন্ত্র মানে দুই পক্ষের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। শুধু ভোট প্রদানের অবাধ ব্যবস্থাই গণতন্ত্র নয়, অবাধ ভোটের অধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করার আগে জনগণের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা নিশ্চিত করতে হয়। পশ্চিমা সমাজে সে মূল্যবোধের পরিচর্যা থাকলেও আমাদের মত প্রান্তিক সমাজ, যেখানে দরিদ্র-অভুক্ত মানুষ দু-বেলা খাবারের টাকার বিনিময়ে পরিবারের ভোট বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়, সেখানে স্বাধীন চিত্তে, যোগ্যতার নিরিখে সকলের ভোটদান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা সুদূরপরাহত। এমন বাস্তবতায় একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মানের সূত্রপাত কোথা থেকে ঘটবে তা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আমার মতে, এটা শুরু করতে হবে প্রথমত রাজনৈতিক দলের গঠণতন্ত্র, পেশাজীবী সমাজ, ট্রেড ইউনিয়ন, বার কাউন্সিল, সাংবাদিক ইউনিয়ন, সাহিত্যিক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবী মহলের সাংগঠনিক কাঠামো ও প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন কাঠামোর ভেতর দিয়ে। এ ক্ষেত্রে অতিসম্প্রতি আমি একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি। গত ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নির্বাচনে সহকারি মহাসচিব পদে নির্বাচন করেছিলাম। একই ফোরামের সদস্যদের মধ্যে অনুৃষ্ঠিত নির্বাচনে দুটি প্যানেল সক্রিয় ছিল। এর একটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, বর্তমান কমিটির সভাপতি, অবিভক্ত ইউনিয়ন থেকে সাংবাদিক সমাজের নেতৃত্বদানকারি নেতা রুহুল আমীন গাজী, অন্যটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বর্তমান কমিটির মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ। রুহুল আমীন গাজীর প্যানেলের সদস্য হিসেবে নির্বাচন করতে গিয়ে বেশ কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে।

চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে দেশের সাংবাদিক সমাজের নেতৃত্বের সাথে জড়িত থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন গাজীর প্যানেলের মহাসচিব পদপ্রার্থী ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, এনটিভির বার্তা সম্পাদক আব্দুস শহীদ নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলাকালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুর পর স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনে তফশিল পরিবর্তনের কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। প্রতিপক্ষ প্যানেলের মহাসচিব প্রার্থীকে বিনা ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচনের তারিখ একাধিকবার পরিবর্তন করা হয়। আগে দুই দফা নির্বাচন পিছিয়ে ৩১ অক্টোবর ভোটের তারিখ নির্ধারিত হওয়ার পর নির্বাচনের ১০ দিন আগে জামিনে থাকা একটি পুরনো মামলায় ওয়ারেন্ট দেখিয়ে রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতার করা হয়। আইসিটি আইনের সাংবাদিক নির্বতনমূলক বিতর্কিত ধারায় তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। প্যানেলের প্রথম ব্যক্তির গ্রেফতার, দ্বিতীয় ব্যক্তির মৃত্যু এবং তৃতীয় ব্যক্তি সাদ বিন রাব্বী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএফইউজে নির্বাচনের আগে প্রধান নেতাদের গ্রেফতার হওয়ার দৃষ্টান্ত এটাই প্রথম নয়। ইতিপূর্বে ২০১৬ সালের বিএফইউজে নির্বাচনের আগে সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদও গ্রেফতার হয়েছিলেন। নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।

প্রশ্ন এসেছিল, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের যথাযথ প্রক্রিয়ার চর্চা কোথা থেকে শুরু হবে। দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ এখনো শিক্ষার আলো বঞ্চিত, বিশাল সংখ্যক মানুষ যেখানে দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে, শিক্ষার মানহীনতা ও নৈতিক শিক্ষার অভাবে শিক্ষিতদের মধ্যেও একটি বড় অংশ নৈতিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল ও অধ:পতিত হয়ে পড়েছে। এহেন বাস্তবতায় গ্রাসরুট লেভেলে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিফলন নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক কাঠামো, গঠনতন্ত্র ও আভ্যন্তরীণ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা নিশ্চিত করা জরুরী। গণতন্ত্রহীনতার বিরুদ্ধে দেশের সাংবাদিক সমাজ ও পেশাজীবী শ্রেণীরাই বেশি সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। বেশ কিছু গণমাধ্যম বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে দেশের সাংবাদিক সমাজের অনেককে চাকুরিচ্যুত হয়ে বেকার জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে, সাংবাদিকদের নির্বাচনে অর্থের ছড়াছড়ির বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। সাংবাদিকদের অধিকার আদায়, রুটি-রুজি রক্ষার জন্য ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃত্ব পেতে দুই পক্ষের এই অর্থ ব্যয়ের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এ ধরনের প্রবণতা থেকে সাংবাদিকদের ট্রেড ইউনিয়নকে বের হয়ে আসতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও মূল্যবোধের চর্চা দেশের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে সাংবাদিক সমাজ সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং তা অব্যাহত রাখাই বাঞ্চনীয়।
bari_zamal@yahoo.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Jack Ali ১৮ নভেম্বর, ২০২০, ১১:২৩ এএম says : 0
We are muslim and Allah have already Legislated a Law for us and as such all the muslim throughout the world are bound to rule according the Legislated Law [QUR'AN] .. those muslim ruler do not rule by the Law of Allah then Allah [SWT] declared them in the Qua'an they are Kafir/Zalem/Fasiq. One of the Non-Believer Historian Nicolson remarked about Qur'an: An encyclopaedia for Lawof Legislation.. Aslo George Bernad Shaw the greatest philosopher onece said: within one centrury the whole europe particularly England will embrace Islam to solve their problems. Marvin Simkin: “Democracy is not freedom. Democracy is two wolves and a lamb voting on what to eat for lunch. True democracy is the tyranny of the majority. True democracy is mob rule.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন