শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

অবহেলিত চন্ডিদুয়ার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই

প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পীরগঞ্জ (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে সবচেয়ে অবহেলিত একটি গ্রাম চন্ডিদুয়ার। চন্ডিদুয়ারে একটিমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। এ গ্রামে নেই কোন ডাক্তার বা চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা, নেই নামাজীদের জন্য কোন মসজিদ। তাছাড়া উচ্চ শিক্ষার আলোও নেই বললেই চলে। গোটা গ্রাম জুড়ে সবেমাত্র এক যুবক বি.এ এবং ১২ জন এসএসসি. পাস করেছে। উপজেলা সদর হতে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ২২কিঃ মিঃ দূরে অবস্থান চন্ডিদূয়ার গ্রামটি। করুণাময়ের অপার মহিমার নিদর্শন এখানকার বেত বাগান। যেন পুরো গ্রামটি বেত বাগানের সবুজে ঘেরা এক পাহাড়। দেখলে মনে হয় অবিশ্বাস্য! আর প্রাকৃতিকভাবেই জীবন-জীবিকার পথ মিলেছে বেতসমৃদ্ধ এ গ্রামের মানুষের। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলার ৩০৮ গ্রামের মধ্যে অতি প্রাচীনতম যে কয়টি গ্রাম, চন্ডিদুয়ার তার অন্যতম। উপজেলার চতরা ইউনিয়নে করতোয়া নদীর ধার ঘেঁষা অমসৃণ আঁকা-বাঁকা অসম্পূর্ণ দুর্গম মেঠোপথে যেতে হয় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল চন্ডিদুয়ারে। দেড় শতাধিক পরিবারের সমন্বয়ে প্রায় নয় শত লোকের বাস এ গ্রামে। ঘন বসতিপূর্ণ গোটা গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই বসবাস করে মাটির দেয়ালের ঘরে। এখানকার মানুষের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস বেত শিল্প। এছাড়া, কারো কারো রয়েছে হাল-গৃহস্থি ও ক্ষুদ্র ব্যবসা। এখানে নেই কোন সাম্প্রদায়িকতা, আদিবাসি ও মুসলমানরা পরস্পর মিলে বাস করছে দীর্ঘকাল থেকেই। চন্ডিদুয়ার অতিপ্রাচীন গ্রাম হলেও নেই এখানে এক ইঞ্চিও পাকা সড়কের ব্যবস্থা। সরকারি সাহায্য সহযোগিতা বঞ্চিত অবহেলিত এ জনপদের মানুষ বছরের পর বছর ধরেও মুখ দেখেন না কোন এমপি মন্ত্রীর কিংবা রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর। কোন ব্যাংক কর্তৃক ঋণ সহায়তাও প্রদান করা হয় না। গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকার কিংবা ব্যাংকের সাহায্য ছাড়াই বেতশিল্প, ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং হালচাষের আয় থেকেই চলছে তাদের জীবন-জীবিকা। পূর্বপুরুষদের জন্ম-লগ্ন থেকে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা বেত বাগানের সুবিধা ভোগ করে আসছেন তারা। এজন্য প্রয়োজন হয় না কোন সার-ওষুধ বা পরিচর্যার এবং এর চাষাবাদে দরকার হয় না বাড়তি কোন খরচের। এই বেত পরিপূর্ণ হলে গ্রামবাসী তা কেটে রোদে শুকিয়ে বাজারজাত করে। আর বেত দিয়ে তৈরি টেবিল-চেয়ার, মোড়া, ঝুড়ি, দোলনা, ডালা-ডালি, দাড়িপাল্লাসহ বহু ধরনের সৌখিন আসবাবপত্রের সমারোহে ফুটে উঠছে তাদের হস্তশিল্পের যাদুর পরশ। এসব শিল্প-পণ্য বাজারজাত করে তারা দৈন্যতার সাথে মেটাচ্ছে তাদের নৈমিত্তিক চাহিদা। অবহেলিত এ গ্রামের উন্নয়নে সরকার, ব্যাংক, এনজিও, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নির্বিশেষে সকলের সুদৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন ওয়াকেবহাল মহল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন