বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

রোপা আমন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ফুলবাড়ীর কৃষক

প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা

শ্রাবণ মাসের প্রথম দিকে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলেও পক্ষকালব্যাপী ফুলবাড়ীতে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ভরা বর্ষা মৌসুমে স্মরণকালের খরা চলছে। ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন মাঠের নিচু জমিতে বর্ষার শুরুতেই রোপা আমন চারা লাগানোর কাজ কৃষকেরা শেষ করলেও উঁচু ও ভিটামাটি জমিতে পর্যাপ্ত পানির অভাবে রোপা আমন চারা লাগাতে পারেনি। গত কয়েক সপ্তাহের একটানা খরার ফলে ইতোমধ্যে নিচু জমির আমন চারাও হুমকির মুখে পড়েছে। অনেক মাঠের মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। তবে বিভিন্ন মাঠে কৃষকরা সেচ দিয়ে আবাদ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু উঁচু ও ভিটে মাটি জমিতে রোপা আমন চাষ করতে না পেরে কৃষকেরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। সকাল থেকেই প্রচ- রোদ শুরু হচ্ছে এবং চলছে বিকেল পর্যন্ত। রোদের তীব্রতা ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে প্রচ- গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে কোন কোন এলাকার কৃষকরা বিভিন্ন ভাবে সেচ দিয়ে রোপা আমন চারা বাঁচিয়ে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একই অবস্থা চলছে পার্শ্ববর্তী পার্বতীপুর, চিরিবন্দর, বিরামপুর, হাকিমপুর, নবাবগজ্ঞ, ঘোড়াঘাট প্রভৃতি উপজেলার মাঠে মাঠে। পার্বতীপুর উপজেলার শাহগ্রামের কৃষক মতিউর রহমান জানান, এ বছরের খরায় মাঠের রোপা আমন ধান চারা মরতে বসেছে। এখনও অনেক জমি অনাবাদি রয়ে গেছে। ফুলবাড়ী উপজেলার চকচকা গ্রামের আদর্শ কৃষক সাইদুর রহমান জানান, ভরা বর্ষায় এমন খরা ইতোপূর্বে দেখা যায়নি। উঁচু জমির আমন চারা একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে এবং নিচু জমির আমন চারাও নষ্টের উপক্রম হয়েছে বলে তিনি জানান। একই কথা জানালেন, আলাদীপুর ইউনিয়নের ভিমলপুর গ্রামের আলহাজ মনছুর আলী ম-ল, আকবর আলী, সুবাস চন্দ্র ও আরও অনেকে। এবার ফুলবাড়ী উপজেলায় ১৭ হাজার ৪শ ৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে ফুলবাড়ী কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ জমিতে রোপা আমন চারা লাগানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে কৃষি অফিস দাবি করলেও বাস্তব অবস্থা ও মাঠের চিত্র দেখে তা মনে হয় না। উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে প্রায় ৩০ ভাগ জমি এখনো অনাবাদি পড়ে আছে, তার উপর একটানা পক্ষকালব্যাপী খরার ফলে রোপা আমন চারা লাগানো জমিও হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে এবার ফুলবাড়ীতে আমন আবাদ শুরুতেই বাধাগস্ত হচ্ছে বলে অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে। এদিকে খরার ফলে উপজেলার ছোট ছোট খাল বিলের পানি গরম হয়ে মাছও মরে যাচ্ছে। পানি না থাকায় মাঠের জমিতেও মাছ মরে পড়ে থাকছে। অপরদিকে প্রচ- এই খরা ও তীব্র গরমের মধ্যে দিনে-রাত মিলে ১২/১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং এর কবলে পড়ে মানুষজন গরমে অতিষ্ঠ হয়ে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করছেন। পিডিবির ফুলবাড়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিস সূত্রে জানা যায়, এখানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৫ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১ থেকে ২ মেগাওয়াট। একইভাবে ফুলবাড়ীস্থ দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২এর চাহিদা রয়েছে ২৭ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৮ থেকে ১০ মেগাওয়াট। ফলে স্বল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ পর্যায়ক্রমে লোডশেডিং দিয়ে সকল গ্রাহককে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানায় উভয় অফিস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন