রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হানাদার মুক্ত হতে থাকে বিভিন্ন এলাকা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

আজ ৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে শত্রু মুক্ত হয় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, যশোর, রাজনগর ও বড়লেখা উপজেলা। ১৯৭১ সালের এই দিনে রাজনগর উপজেলা পাকসেনাদের কবল থেকে মুক্ত হয়। যৌথবাহিনীর কামান্ডার কর্নেল এমএ হামিদ প্রথম লাল সবুজের বিজয় পতাকা উড়ান রাজনগরের ক্লাব প্রাঙ্গনে। এর আগে উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নে রাজনগর বিজয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। যেখানে নির্মাণ করা হয়েছে ‘শহীদ মিনার’। ৪ ডিসেম্বর ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল মৌলভীবাজার হয়ে রাজনগর পৌঁছে। তারা উদনা চা বাগান আক্রমনের চুড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। ৫ ডিসেম্বর হিম শীতে মুক্তিযোদ্ধারা প্রবেশ করেন উদনা চা বাগানে। ত্বড়িত আক্রমন করেন পাকসেনাদের উপর।

টানা দুদিন যুদ্ধের পর ৬ ডিসেম্বর ভোর হবার সঙ্গে সঙ্গে পাকসেনারা পালাতে শুরু করে। এতে বহু পাকসেনা মারা যায়। ৬ ডিসেম্বর রাজনগর শত্রু মুক্ত হয়। শ্বাসরুদ্ধকর বিভিষিকা থেকে রাজনগরের মানুষ মুক্ত বাতাসের ছোঁয়া পায়। গ্রামছাড়া মানুষ আবার আসতে শুরু করে গ্রামে। হানাদার বাহিনী পালিয়ে যাওয়ার পর মুক্তিসেনারা হানাদার ক্যাম্পের যাবতীয় অস্ত্র ও গোলা-বারুদ উদ্ধার করেন। অস্ত্র ও গোলা-বারুদের পরিমান ছিল অসংখ্য। মুন্সীবাজার ও উদনা চাবাগান থেকে মোট ৫ ট্রাক অস্ত্র ও গোলা-বারুদ মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বড়লেখাবাসী জেগে উঠেছিল রণ হুঙ্কারে। সেসময় প্রায় ৩২৫টি গ্রাম যেন প্রতিরোধের এক একটি দুর্গে পরিণত হয়। একই সঙ্গে ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনেই শত্রæমুক্ত হয় যশোর জেলা। এদিন বিকেলে যশোর সেনানিবাস ছেড়ে পালিয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনী। যশোরেই প্রথম উঠেছিল বিজয়ী বাংলাদেশের রক্ত সূর্য খচিত গাঢ় সবুজ পতাকা।

৭১ সালের ০৩, ০৪ ও ০৫ ডিসেম্বর যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। এ সময় মিত্রবাহিনীও সীমান্ত এলাকা থেকে যশোর সেনানিবাসসহ পাক আর্মিদের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা ও গোলা নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে পর্যুদস্তু পাক বাহিনী ০৫ ডিসেম্বর থেকে পলায়ন শুরু করে। যশোর সেনানিবাস ছেড়ে তারা ছিন্নভিন্ন হয়ে খুলনার গিলাতলা সেনানিবাসের দিকে পালিয়ে যেতে থাকে। পলায়নকালে ০৫ ও ০৬ ডিসেম্বর শহরতলীর রাজারহাটসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে তাদের প্রচন্ড লড়াই হয়।

০৬ ডিসেম্বর বিকেলের আগে যশোর সেনানিবাস খালি করে পালিয়ে যায় পাক হানাদাররা। বিকেলে মিত্র বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল বারাতের নেতৃত্বে মিত্র ও মুক্তি বাহিনী সেনানিবাসে প্রবেশ করে দখল নেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুক্তির আনন্দে উচ্ছ্বসিত মুক্তিযোদ্ধা-জনতার ঢল নামে শহরে। পাড়া মহল্লায়ও চলে খন্ড খন্ড আনন্দ মিছিল। মুক্তির আনন্দে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে ফেটে পড়ে গোটা জেলার মানুষ।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন