ঢাকা-লক্ষীপুর নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল এবং ভোলা-লক্ষীপুর নৌপথে ফেরিসহ নৌযোগাযোগ দ্রুত ও নিরাপদ করতে মেঘনা নদীর লোয়ার অংশে লক্ষীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট সংলগ্ন মেঘনা নদীর দক্ষিণ দিকের চ্যানেলের ২৫ কিলোমিটার নৌপথের খনন কাজ শনিবার দুপুরে শুরু হয়েছে।
খনন কাজটি সম্পন্ন হলে ভোলা-লক্ষীপুর এবং ঢাকা-লক্ষীপুর উভয় নৌপথের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার কমবে। ঢাকা হতে লক্ষীপুরে যাত্রীবাহী লঞ্চ ৬ ঘণ্টায় যেতে পারবে। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি গতকাল লক্ষীপুরে ঢাকা-লক্ষীপুর নৌপথের উল্লিখিত ২৫ কিলোমিটারের খনন কাজের উদ্বোধন করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের আলোকবর্তিকা। তার আলোয় আলোকিত হচ্ছে দেশ। তিনি পদ্মা সেতু, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, চার লেন-ছয় লেনের মহাসড়ক, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করছেন। প্রতিমন্ত্রী গতকাল লক্ষীপুরের মজুচৌধুরীরহাট বাস টার্মিনালে ঢাকা-লক্ষীপুর নৌপথের ড্রেজিং কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃকায় এসব কথা বলেন।
বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী ও লক্ষীপুর-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামাল, জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল, পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান, জেলা আ.লীগের সভাপতি আলহাজ মিয়া মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পিংকু এবং সাধারণ সম্পাক এড. নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আ.লীগ সরকার ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ পুনরুদ্ধারের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রতিমন্ত্রী পরে মজুচৌধুরীরহাট হতে চররমণী এলাকায় মেঘনার লোয়ার চ্যানেলে ড্রেজিং কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উল্লেখ্য, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী এবং মেঘনা (লোয়ার) নদীর ওপর দিয়ে ঢাকা হতে লক্ষীপুর পর্যন্ত নৌপথের দুরত্ব ১২৫ কিলোমিটার। বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীতে বর্তমানে কোন নাব্যতা সংকট নেই। মেঘনা (লোয়ার) নদীতে লক্ষীপুরের মজুচৌধুরীরহাট সংলগ্ন এলাকায় কিছু স্থানে নাব্যতা সংকট রয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) মেঘনা (লোয়ার) নদীর উক্ত চ্যানেলে ২৫ কিলোমিটার নৌপথ খনন করবে। এ বছরের ডিসেম্বরে শুরু হয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে খনন কাজ শেষ হবে। দু’বছরে ৩১ লক্ষ ঘনমিটার খনন কাজে ব্যয় হবে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড এবং বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব ড্রেজার দিয়ে খনন কাজ সম্পন্ন করা হবে।
এ দিকে দাউদকান্দি (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লার দাউদকান্দিতে নদীর খনন কাজ শুরু হয়। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দাউদকান্দি উপজেলার লক্ষীপুর প্রান্ত হতে কালাডুমুর ও গোমতী পয়েন্টে নদীর খনন কাজের উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সমুন। খনন কাজ শেষ হলে এই অঞ্চলে প্রায় ৫০ হাজার বিঘা জমিতে আরও বোরো ধান চাষ করতে পারবেন কৃষকরা।
এ সময় দাউদকান্দি উপজেলা পরিষেদর চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী বলেন, দাউদকান্দি ও মেঘনা আসনের এমপি মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভ‚ঁইয়া জাতীয় সংসদে অত্র অঞ্চলের মানুষের নদী পথে চলাচল ও কৃষি কাজের সুবিধার্থে কালাডুমুর নদীর পূর্ণ খননের দাবি জাতীয় সংসদে কয়েকবার উথথাপন করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ এই খনন কাজ শুরু হলো। খনন কাজ সমাপ্ত হলে এই অঞ্চলের কৃষকদের আর সেচের জন্য পানির সমস্যা হবে না। এই সময় সংশ্লিষ্ট সকলকে তিনি হুঁশিয়ারি করে বলেন, খনন কাজে কোনো অনিয়ম কিংবা গাফলতি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এ সময় কালাডুমু নদীর পূর্ণ খনন আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক মতিন সৈকত বলেন, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর এমপি সাহেবের বদৌলতে আজ কালাডুমু নদী তার পূর্ণ যৌবন ফিরে পেতে যাচ্ছে। এই নদী খননের ফলে এই অঞ্চলের মানুষের কৃষি ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, দাউদকান্দি উপজেলা আ.লীগের সভাপতি অ্যাড. আহসান হাবিব চৌধুরী লিল মিয়া, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম নয়ন প্রমুুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন