আওয়ামী লীগে যদি আমাদের কোন বন্ধু না থাকে তাহলে বাংলাদেশেও আমাদের কোন বন্ধু নাই মন্তব্য করে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ। আজকের এই সুসম্পর্কের সূচনা করেছিলেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরই ধারাবাহিকতায় দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে যা ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে।
গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে দলটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে দোরাইস্বামী এসব কথা বলেন। দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বাংলাদেশকে করোনা ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়ে ভারত সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানান বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের আজকের যে সম্পর্ক, দুই দেশের এই সম্পর্কের জন্য আওয়ামী লীগের অনেক অবদান রয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে আওয়ামী লীগ অনেক নেতাকর্মীকে হারিয়েছে। তিনি তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে এসে জীবন উৎসর্গকারী অর্ধশতাধিক ভারতীয় সৈনিকের আত্মত্যাগের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দোরাইস্বামী বলেন, আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন পাইলট হিসেবে। তাই আমি খুব গর্বিত। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চিরঞ্জীব হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন বাংলাদেশের স্পিরিট। বাংলাদেশের জন্য তার আত্মত্যাগ এদেশের জনগণ ভুলতে পারবে না।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে তার মাধ্যমে তিস্তা সমস্যা ও অন্যান্য নদীর পানি বণ্টনের আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। তিস্তার পানি বণ্টন অচিরেই হতে পারে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ও ভারতের নরেন্দ্র মোদির সরকারের সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া থাকলে অনেক অমীমাংসিত ইস্যু সহজেই সমাধান সম্ভব, যার প্রমাণ বাংলাদেশ ও ভারত। দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময় সমাধান দুই দেশের পারস্পরিক আস্থাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বাংলাদেশের সমুদ্র জয়ের মামলায় ভারত আপিল না করে বন্ধুসুলভ যে আচরণ করেছে তা সম্পর্কের সূত্রকে আরও সুদৃঢ় করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ৭১ এর রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ। দুই দেশের এই সম্পর্ক কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অতীতের যে কোনও সময়ের তুলনায় এখন অধিকতর উষ্ণ, সৌহার্দপূর্ণ ও উন্নয়নমুখী। দুই দেশের সম্পর্কের সেতুবন্ধ সময়ের পরিক্রমায় দিন-দিন নবতর মাত্রায় উন্নীত হচ্ছে।
সীমান্ত হত্যা বন্ধের বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, সীমান্তে হত্যার বিষয়ে দুদেশের মধ্যে বৈঠক চলছে। সীমান্তে হত্যাকান্ড জিরোতে আনার বিষয়ে সফল হবো বলে আশা করছি। সীমান্ত হত্যা বন্ধের ব্যাপারে দুই দেশের সরকার অত্যন্ত আন্তরিক।
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, নির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন