আমন ঘরে তোলার পরপরই কৃষক ব্যস্ত হয়ে পড়েন ফাঁকা জমিতে রবি মৌসুমের বিভিন্ন জাতের ফসল লাগাতে। এর মধ্যে অন্যতম একটি ফসল হলো সরিষা। জমিতে চাষ ছাড়া সরিষা বীজ রোপণ করেন। অমন ধান ঘরে জমিতে বারি-১৪ সরিষা ছিটিয়ে দিতে হয়।
জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া, সুন্দরপুর, আলাইপুর, রঘুনাথপুর, বারবাজার ষাটবাড়িয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামের কৃষকরা এই সরিষা চাষ করে থাকেন। এসব এলাকার বেশিরভাগ কৃষকই এবার তাদের জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা লাগিয়েছেন। একাধিক চাষির সঙ্গে আলাপকালে সরিষা আবাদ সম্পর্কে এমনই তথ্য ওঠে আসে।
আলাইপুর গ্রামের কৃষক আলিমুল ইসলাম সঙ্গে বললে তিনি জানান, এবার তিনি ৩ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। গড়ে বিঘা প্রতি ফলন হবে প্রায় ৬ থেকে মণ হারে। এছাড়া বর্তমানে অন্য ফসলের চেয়ে সরিষার বাজার দর ভালো। এ কারণে সরিষা আবাদ করে তিনি বেশ লাভবান হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, এবার শীতের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুক‚লে রয়েছে। এছাড়া সরিষা চাষে খুব একটা ব্যয়ও করতে হয় না। সরিষার জমিতে খুব বেশি চাষ দিতে হয় না। সার, বীজ, চাষ, সেচ, কীটনাশক, শ্রমিকসহ প্রতিবিঘা জমির বিপরীতে বড়জোড় ৬ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়। বর্তমান বাজারে প্রতিমণ সরিষা রকমভেদে ২৩শ’ থেকে ২৫শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে গড়ে ৭ মণ হারে সরিষা পেলেও বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী সব খরচ বাদে তাদের ভালো লাভ হবে বলে জানান এ কৃষক।
ষাটবাড়িয়া গ্রামের কৃষক কবিরুল ইসলাম নান্নু জানান, বর্তমান সময়ে তাদেরমতো কৃষকদের অনেক ফসল চাষ করে লোকসান গুণতে হচ্ছে। সেই লোকসান কাটিয়ে উঠতে তাদের সব সময় বাড়তি আয়ের চিন্তা করতে হয়। সেই ভাবনা থেকে এবার তিনি প্রায় ২ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা লাগিয়েছেন। তবে এবার তিনি আশা করছেন ফলন ও ভালো হবে। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৭ মন সরিষা পাবেন বলেও তিনি আশা করছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিকদার মোহায়মেন আক্তার জানান, প্রতি বছর এই সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বারি-১৪ জাতের সরিষাতে লাভ বেশি।
এ বছর কালীগঞ্জ উপজেলাতে ৭শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। তিনি আরও জানান, কৃষি অফিস কতৃক ৬শ’ জন কৃষককে বীজ ও সার প্রদান করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন