শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে শরীরে কেরোসিন ঢেলে হত্যা চেষ্টা

প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা

শ্রীনগরে যৌতুকের জন্য এমিলি আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূকে গভীর রাতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার চেষ্টা করেছে স্বামী ও শাশুড়ি। গত শুক্রবার রাত ২টার দিকে উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের নাগরভাগ গ্রামের মহিলা মেম্বার ফরিদা ইয়াসমিনের বাড়িতে এমন পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন এসে ঘরের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর শাশুড়ি মহিলা মেম্বার হওয়ায় তার দাপটে থানায় কোন অভিযোগ করতে না পেরে গতকাল বুধবার ওই গৃহবধূ আইনগত সহায়তা চেয়ে বিক্রমপুর আইন সহায়তা কেন্দ্রে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্থানীয়রা জানায়, ওই ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার ফরিদা ইয়াসমিনের ছেলে ফরহাদ হোসেনের সাথে দেড় বছর আগে ওই এলাকার দরিদ্র মৃত মোস্তফা শেখের মেয়ে এমিলি আক্তারের বিয়ে হয়। ফরহাদ এর আগেও দুটি বিয়ে করে। প্রথম স্ত্রী মারা গেলে নির্যাতনের কারণে দ্বিতীয় স্ত্রী সংসার ছেড়ে চলে যায়। এমিলির সাথে বিয়ের সময় ফরহাদের দাবি অনুযায়ী এক লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়। বিয়ের পর কিছু দিন ভাল কাটলেও গত ঈদের আগে ২০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে এমিলির মা ধার করে ফরহাদের দাবি পরিশোধ করে। গত ১৮ আগষ্ট ফের যৌতুক দাবি করলে এমিলি তা এনে দিতে অস্বীকার করে। এনিয়ে গত ১৯ আগষ্ট রাতে ফরহাদ ও তার মা ফরিদা ইয়াসমিন মিলে এমিলিকে মারধর শুরু করে। মা ছেলে মিলে রাত ২টার দিকে নির্যাতনের এক পর্যায়ে এমিলির শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার জন্য। এ সময় ওই বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া এমিলির মামাত ভাই রানা (১৫) ঘটনাটি টের পেয়ে গোপনে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে লোকজনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় ফরিদা মেম্বারের ধর্ম ভাই বাড়ৈগাও বাজারের দোকারদার মজিবর তার লোকজন নিয়ে বাধার সৃষ্টি করে বলে এমিলির পরিবার অভিযোগ করে। পরদিন এমিলির পরিবার শ্রীনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করার চেষ্টা করলে ফরিদা মেম্বার বাধা প্রদান করে। নিরুপায় হয়ে এমিলি আক্তার সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলায় অবস্থিত বিক্রমপুর আইন সহায়তা কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ব্যাপারে ফরহাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পারিবারিক কলহের জের ধরে গায়ে কেরোসিন দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে যৌতুকের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন