শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রশংসনীয় উদ্যোগ - অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী

স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যাচ্ছে, দ্বিতীয় দফায় গেল ১৮০৫ রোহিঙ্গা

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:১৫ পিএম

দীর্ঘ দিন অপেক্ষার পর রোহিঙ্গারা ভাসানচরে স্বেচ্ছায় যাওয়া শুরু করেছে। প্রথম দফায় ১৬৪২ রোহিঙ্গা ভাসানচরে যাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের মধ্যে দ্বিধা দ্বন্দ্ব কেটে যাওয়ায় দ্বিতীয় দলে ১৮০৫ রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেল।


রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দলটি মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের বোট ক্লাব, আরআরবি ও কোস্টগার্ডের জেটি থেকে জাহাজগুলো ছেড়ে যায়। এবার স্বেচ্ছায় ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ৪২৮ পরিবারের ১৮০৫ রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা সোমবার ৩৯টি বাসে করে চট্টগ্রামে পৌঁছায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশেষে নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সোমবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ১৩ বাসে ৫৯৫ জন, ২টা ১০ মিনিটে ১১ বাসে ৫৩৯ জন, ৫টা ১০ মিনিটে ১৫ বাসে ৬৭১ জনসহ ৪২৮ পরিবারের মোট এক হাজার ৮০৫ রোহিঙ্গাকে নিয়ে গাড়িগুলো চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয়।

এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের মালামাল নিয়ে ১১টি কার্গো এবং ট্রাক গাড়িবহরে যুক্ত ছিল।

এর আগে গত রোববার বিকালে ও সোমবার সকালে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যেতে উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্টে নিয়ে এসে রাখা হয়। তা ছাড়া ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গারা ট্রানজিট পয়েন্টে আসতে শুরু করেন।

ভাসানচরের কাজ করতে যাওয়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সমাজকল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থার (স্কাস) চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা জানান, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপে এক হাজার ৮০৫ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আমরা তাদের সঙ্গে যাচ্ছি। এখানে তাদের সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের প্রতি যত্ন নেয়া হয়েছে। তাদের যেন শীতে কষ্ট না হয় তার প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়েছে। সরকারের সহযোগী সংস্থা হিসেবে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সব আমরা কাজ করছি।

সূত্রে জানা যায়, উখিয়া ও টেকনাফের তালিকাভুক্ত ক্যাম্প ছাড়া বাকি সব ক্যাম্প থেকেই রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন। বিশেষ করে উখিয়ার কুতুপালং-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৮ ডব্লিউসহ থাইংখালী ১৩ নাম্বার ক্যাম্প থেকে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার সোমবার ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে আজ মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ ভাসানচর পৌঁছবেন তারা।

এদিকে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় এক হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেছে। এর আগে মালয়েশিয়া যেতে গিয়ে সমুদ্র উপকূলে আটক আরও তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সেখানে নিয়ে রাখা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পরবর্তী মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে এ দেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয় সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এর আগে থেকে রয়েছে আরও চার লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। বর্তমানে সব মিলিয়ে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসবাস কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ ক্যাম্পে।

উল্যেখ্য ভাসানচরে লক্ষাধিক রোহিঙ্গার বসবাসের জন্য সরকার অত্যন্ত উন্নতমানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। সেখানে যাওয়া রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে সেখানকার সুযোগ সুবিধার কথা জানতে পেরে উখিয়া টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের মাঝে স্বেচ্ছায় ভাসানচর যাওয়ার প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উখিয়া আওয়ামিলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে কিছু দুষ্কৃতকারী এবং কিছু এনজিও এতদিন তাদের ভাসানচর যেতে অনুতসাহিত করেছিলো। ভাসানচর গেলে উখিয়া টেকনাফে রোহিঙ্গাদের চাপ কিছুটা কমবে। সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammad Arman ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০৮ পিএম says : 0
ভবিষ্যতে আমেরিকা ও ভারত তাদেরকে অস্ত্র দিয়ে স্বাধীন করার চেষ্টা করবে তখন এই প্রশংসা আমাদের কোনো কাজে আসবে না
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন