হত্যাকান্ডের পর দীর্ঘ প্রায় তিন সপ্তাহ অতিক্রান্ত হলেও মাদরাসাছাত্র তুহিন হত্যাকান্ডে জড়িত কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হচ্ছে না। সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার না হওয়ায় মামলার তদন্তকার্যেও অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে না।
জানা যায়, নরসিংদী সদর উপজেলার পশ্চিম ঘোড়াদিয়া এলাকা আব্দুল হান্নানের ছেলে মো. তুহিন মিয়া নরসিংদী জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদরাসায় লেখাপড়া করতো। গত ৬ জানুয়ারি চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে স্মার্টকার্ড উত্তোলনের জন্য যায় তুহিন। এখানে লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে দাসপাড়া গ্রামের জিলানী ও কাউয়াদি গ্রামের মিরাজ মিয়ার সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। এই নিয়ে জিলানী ও মিরাজ তুহিন মিয়াকে হুমকি দিয়ে চলে যায়। একই দিন দুপুর সাড়ে বারোটায় তুহিন স্মার্টকার্ড উত্তোলন করে বাড়ির দিকে রওয়ানা দিয়ে দাসপাড়া গ্রামের মন্দির নিয়ার গ্যারেজের সামনে পৌঁছালে সন্ত্রাসী জিলানী মিরাজ আরো পাচ ছয় জন সন্ত্রাসী নিয়ে তার গতিরোধ করে। এই অবস্থায় তুহিন কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই জিলানী এবং মিরাজের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।
একপর্যায়ে জিলানী তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি দিয়ে তুহিনের পেটের বাম পাশে আঘাত করলে সে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় তুহিন চিৎকার শুরু করলে আশেপাশের লোকজন দৌঁড়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মিরাজকে আটক করে এবং অন্যান্য সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে লোকজন মিরাজকে গণপিটুনি দিয়ে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ধৃত মিরাজকে আটক করে এবং আহত তুহিনকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তুহিনের অবস্থা অবনতি ঘটতে থাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তুহিন ৯ জানুয়ারি মারা যায়।
এ ব্যাপারে তুহিনের চাচা আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে জিলানী ও মিরাজসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৬ জন সন্ত্রাসীকে আসামি করে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। কিন্তু পুলিশ এই পর্যন্ত একজন সন্ত্রাসীকেও গ্রেফতার করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর ফয়জুল হাকিম খান জানান, জনতার হাতে ধৃত আসামি মিরাজ হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। হত্যাকান্ডের পর আসামিরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদেরকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন