সকল তর্জন গর্জন করেও বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে হকার উচ্ছেদে ব্যর্থ পুলিশ প্রশাসন। এসপি জায়েদুল আলমের কঠোর নির্দেশনার পর কয়েকদিন বঙ্গবন্ধু সড়ককে হকারমুক্ত থাকলে গতকাল মঙ্গলবার থেকে পুনরায় সড়কটি চলে গেছে হকারদের দখলে। অদৃশ্য ইশারায় বারে বারে হকার উচ্ছেদ উদ্যোগ ব্যর্থতার কারণে চরমভাবে ক্ষুদ্ধ নগরবাসী। শহরের এ প্রধান সড়কটি থেকে হকার উচ্ছেদ করতে যেয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন মেয়র আইভী। এ ঘটনা নিয়ে মামলাও হয়েছে পাল্টাপাল্টি। মেয়র আইভী চান হকার উচ্ছেদ। অপরদিকে শামীম ওসমান চান হকাররা যে যেভাবে রয়েছেন তাদের সেভাবেই রাখতে। ফলে সরকারদলী রাজনীতির যাতাকলে বারে বারে ব্যর্থতায় পতিত হচ্ছে পুলিশ ও পৌর প্রশাসন। প্রশাসনিক সক্ষমতার চেয়ে হকারদের ক্ষমতার দাপট বেশী তা এখন প্রমানিত সত্য।
মুলত হকারদের কাছ থেকে প্রতিদিন আসে মোটা অংকের চাঁদা। যা ভাগবাটোয়ারা করে নেয় রাজনৈতিক নেতাদের লোকজন, পুলিশ, সাংবাদিকদের একটি অংশ এবং হকার নেতারা। ফলে আর্থিক কারণেই এ সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না কোনভাবেই।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে বঙ্গবন্ধু সড়ক ঘুরে দেখা যায় দুপুরের পর থেকেই হকাররা দখলে নিয়েছে পুরো বঙ্গবন্ধু সড়ক। তারা ফিরেছে পূর্বের অবস্থায়। নূর মসজিদের সামনে বাদাম চিবুচ্ছে পুলিশের একটি টহল দল। তাদের সামনে দিয়েই হকাররা তাদের মালামাল নিয়ে যে যার মত ফুটপাত দখলে ব্যস্ত। চাষাঢ়ার সোনালী ব্যাংকের সামনে থেকে শুরু করে রাস্তার দু’পাশেই বসে পড়েছে হকাররা। বিকেলে সোজা সাপটার রিপোর্টার ও ফটো সাংবাদিক হকারদের অবস্থান ও পুলিশের ছবি তুলে নিয়ে আসে। বিষয়টি টের পেয়ে যায় সদর থানার টহল পুলিশ। ছবি তুলে আসার (সন্ধ্যায়) আধাঘন্টার মধ্যে সরে যায় সকল হকাররা। এ যেন এক হকার-পুলিশ লুকোচুরি খেলা। হঠাৎ করেই কোন এক সংকেতে নিজেদের থেকেই সরে যায় হকাররা। এরপর থেকে দেখা যায় টহল পুলিশের তৎপরতা। তারা ফাঁকা মাঠে লাঠি হাতে টহল জোরদার করে। তাদের তৎপরতা দেখে সুমন নামের এক পথচারী মন্তব্য করে বলেন, সদর থানা পুলিশই বসায় হকার আবার তাদের ইশারায়ই উঠে যায় হকার। এ দৃশ্য আমাদের কাছে পুরোন বায়োস্কোপ। পুলিশ সুপার হারুন সাহেবের সময়েও দেখেছি এখনও দেখছি। তবে হকার ইস্যুতে বর্তমান পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম কঠোর অবস্থানে থাকলে মাঠ পর্যায়ে রয়েছে বিশাল ফাঁক। শেষ পর্যন্ত তিনি হকার ইস্যুতে সফল হতে পারবেন কিনা তা একমাত্র সময়ই বলে দেবে। নগরবাসী বর্তমান পুলিশ সুপারের উপর আস্থা রাখতে চান বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন