বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বিয়ের প্রলোভনে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ

প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নাজিরপুর (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা

পিরোজপুরের নাজিরপুরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ঘটনাটি স্থানীয় প্রভাবশালী মাতুব্বরদের মাধ্যমে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাসহ স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য ধর্ষিতার পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছে ধর্ষিতার পরিবার। গত শুক্রবার উপজেলার হোগলাবুনিয়া গ্রামের মুনসুর শেখের পুত্র মুরাদ শেখ একই গ্রামের হোগলাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে উল্লেখিত বিদ্যালয়ের এক শ্রেণি কক্ষে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনার পর থেকে ধর্ষক পলাতক রয়েছে। এ ঘটনার বিচারের নামে স্থানীয় মাতুব্বররা কালক্ষেপণ করায় এলাকাবাসির মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত রোববার ঘটনার বিষয়ে কথা হলে ধর্ষিতা ওই স্কুলছাত্রী সাংবাদিকদের জানান, মুনসুর শেখের পুত্র মুরাদের সাথে তার বিগত দুই বছর যাবত প্রেমের সর্ম্পক চলে আসছে। কয়েক মাস পূর্বে প্রবাসী এক ছেলে পারিবারিকভাবে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে হতদরিদ্র দিনমজুর পিতা দারিদ্র্যে কারণে ওই ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি হয়। বিয়ের দিন তারিখও ঠিক হয়। বিষয়টি মুরাদ জানতে পেরে ওই ছেলেকে আপত্তিকর মিথ্যা কথা বলে বিয়ে ভেঙে দেয়। গত শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে মুরাদ জরুরি কথা আছে বলে মুঠোফোনে ওই ছাত্রীকে হোগলাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শ্রেণি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে মুরাদ বিয়ের প্রলোভন দেখায় এবং জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় পার্শ্ববর্তী মুদি দোকানদার জামাল হোসেন দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। তখন পার্শ্ববর্তী বাড়ীতে বসবাসরত ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন আলমসহ কয়েকজন এগিয়ে আসলে মুরাদ ওই ছাত্রীকে ফেলে পালিয়ে যায়। এ সময় ওই শিক্ষক বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হবে বলে ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য জামাল হোসেনকে অনুরোধ করে। পরবর্তীতে মুরাদ ওই স্কুলছাত্রীকে ফোন করে এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। কিন্তু বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলেও মুরাদের পরিবার ধর্ষিতা ওই ছাত্রীর কোন সুরহা না করে স্থানীয় মাতুব্বরদের নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনা জানতে পেরে গত শনিবার সন্ধ্যায় বিয়ের দাবিতে ওই স্কুলছাত্রী তার দাদীকে নিয়ে মুরাদের বাড়ীতে অবস্থান নেয়। এ সময় মুরাদের পরিবার ওই ছাত্রীসহ তার দাদীকে মারধর করে বাড়ী থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে অন্যত্র চলে যায়। তখন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান গাউস লোক পাঠিয়ে ওই ছাত্রীসহ তার দাদীকে ছাত্রীর বাড়ীতে পৌঁছে দেয়। ঘটনার পর থেকে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপোষ করার জন্য ধর্ষিতার পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মুরাদের সাথে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তার বাড়ীতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান গাউস বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। আগামী বুধবার তারিখ করা হয়েছে। এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার করা হবে। নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন মল্লিক বলেন, এ ধরনের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন